ভারতের অটো যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী মাদারসন গ্রুপ জাপানের সংকটে পড়া মারেল্লি হোল্ডিংস কিনতে চায়। কেনা হলে মাদারসনের বার্ষিক বিক্রি দাঁড়াবে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের বৈশ্বিক র্যাঙ্কিং ২৫তম থেকে ১২তম এ নেবে।
বৈচিত্র্যই মাদারসনের কৌশল
মাদারসন কখনও একটি পণ্য, বাজার বা গ্রাহকের ওপর নির্ভর করে না। ইউরোপে মের্সিডিস-বেন্জ ও ভক্সওয়াগেন, জাপানে সুজুকি, আর দক্ষিণ কোরিয়ায় হুন্দাইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের বড় ক্রেতা। এতে ঝুঁকি কমে ও নতুন বাজার ধরা সহজ হয়।
মারেল্লির সম্ভাবনা
ইভি ও সফটওয়্যার-নির্ভর গাড়ির অংশে শক্তিশালী মারেল্লি নিজেদের আয়ের অর্ধেকই নিসান ও স্টেলান্টিসের কাছ থেকে পায়। মাদারসন কিনে নিলে নিজের বিস্তৃত গ্রাহক-নীতিকে কাজে লাগিয়ে মারেল্লির বিক্রি বাড়াতে পারবে, আর নিসানদের কাছেও মাদারসনের অন্য পণ্য প্রস্তাব করা সহজ হবে।
তারকাসংখ্যায় গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান
• ২০২৩ অর্থবছরে মাদারসনের অটো যন্ত্রাংশ বিক্রি ১১.৬ বিলিয়ন ডলার, ২০১৮ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি।
• ভারতের সবচেয়ে বড়, আর বিশ্বে ২৫তম সরবরাহকারী তারা।
• মারেল্লির আয় ১১.৪ বিলিয়ন ডলার; একত্র হলে মোট আয় হবে ২৩ বিলিয়ন ডলার।
দেশে-বিদেশে দাপট
বিশাল নিজস্ব বাজার থাকা সত্ত্বেও মাদারসন বিদেশে বিস্তারে আগ্রহী। ২০২3-এ তারা জাপানি ইচিকোহের আয়না ব্যবসা ও ২০২৪-এ হোন্ডা-যোগানদাতা ইয়াচিয়োহ কিনেছে। ১৯৮০-র দশক থেকে সুজুকির সঙ্গে যে সম্পর্ক, সেটিই তাদের জাপানে দৃঢ় করেছে।
কেনা-বেচার পেছনের নেপথ্য
অর্থকষ্টে মারেল্লি ভালো কর্মী হারিয়েছে বলে শোনা যায়। মাদারসন অধিগ্রহণ করলে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও আস্থা ফিরে আসতে পারে—যা দু’পক্ষেরই লাভ।
বিশেষ বিশ্লেষণ
• ভারতের গাড়ি বিক্রি বাড়ায় দেশীয় সরবরাহকারীরাও চাঙা, তবু বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ছাড়া শীর্ষ স্তরে ওঠা কঠিন।
• বৈচিত্র্যকে সেরা ঢাল বানিয়ে মাদারসন বিশ্বে নতুন গ্রাহক ধরতে চাইছে—এটাই তাদের আক্রমণাত্মক এম অ্যান্ড এ কৌশলের মূল চাবিকাঠি।
সম্ভাব্য পরিণতি
অধিগ্রহণ সফল হলে মাদারসন শুধু আকারেই নয়, ইভি ও সফটওয়্যার-নির্ভর প্রযুক্তিতেও শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে জাপান-ভারত সরবরাহ শৃঙ্খলে আরও নিবিড় যোগাযোগ তৈরি হতে পারে, যা বৈশ্বিক অটো শিল্পে নতুন সমীকরণ গড়বে।