সমকালের একটি শিরোনাম “মূল্যস্ফীতি কমানো, রাজস্ব বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ”
অন্তর্বর্তী সরকার আজ সোমবার আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করছে। বাজেট এলে বেশির ভাগ মানুষের মাথায় প্রথম প্রশ্ন আসে– জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না-তো। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তব্যে মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেবেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষাই তাঁর জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে তাঁর জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ধীরগতি এবং এনবিআরে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে রাজস্ব সংগ্রহ নিয়ে তাঁর চিন্তাটা হয়তো বেশিই থাকবে। আজ সোমবার বিকেল ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশনে তাঁর বক্তব্য একযোগে প্রচার করা হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। পরের চার মাস অর্থাৎ এপ্রিল পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ঘরে ছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি গড়ে ১০ শতাংশের বেশি ছিল। দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করায় সাধারণ মানুষ বা সীমিত আয়ের মানুষের জীবনযাপন আরও কঠিন হয়েছে। মূল্যস্ফীতির গড় হার আগামী অর্থবছর শেষে সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা থাকছে বাজেটে।
অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশি-বিদেশি গবেষণা সংস্থা মূল্যস্ফীতিকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছে। মূল্যস্ফীতির ফলে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমলে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ও জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই এক নম্বর অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হলেও আগামী অর্থবছরে সাধারণ করদাতাদের আয়করে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বেশ কিছু পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বাড়ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পদক্ষেপ এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণে আমদানি শুল্কে ব্যাপক ছাড় দিতে হচ্ছে। তাই রাজস্ব বাড়াতে মূল্য সংযোজন কর এবং আয়করে বাড়তি নজর দিচ্ছে সরকার। তবে দেশের প্রেক্ষাপটে আয়কর খাতে রাজস্ব বাড়ানো চ্যালেঞ্জিং হওয়ায় খড়গ গিয়ে পড়ে ভ্যাটে। এতে করে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি ব্যয় সংকোচন করা হচ্ছে। মুদ্রানীতিও সংকোচনমূলক থাকবে। বাজেটে নিত্যপণ্যের বিষয়ে ইতিবাচক কিছু পদক্ষেপ থাকবে। একই সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধনের ইঙ্গিত”
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধন করা হতে পারে বলে আন্দোলনরত কর্মচারী নেতাদের আভাস দিয়েছেন সরকারের দুজন উপদেষ্টা। চাকরি অধ্যাদেশ নিয়ে কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে গতকাল রোববার খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে স্মারকলিপি দেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা। এ সময় অধ্যাদেশ বাতিলের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তাঁরা। তার আগে বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের নজরে আনা হবে জানিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, ‘অধ্যাদেশে কিছু ধারা আছে, যেগুলোর অপপ্রয়োগ হওয়ার আশঙ্কা আছে। আমি এটি নিয়ে আলোচনা করব। আপনাদের (কর্মচারী) যে অবস্থান, তা হলো এটি বাতিল করে দিতে হবে। কিন্তু আপনারা একটা জিনিস মনে রাখবেন, আর একটা বিষয় হতে পারে এই অধ্যাদেশটি যে অপপ্রয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেগুলোকে অ্যাড্রেস করা যায় কি না।
সেটাও আপনারা একটু মাথায় রাখবেন।’
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘এটার (অধ্যাদেশ) যে একটা ত্রুটি আছে, সেটা সম্পর্কে কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ সচেতন। আমি আপনাদের বাতিল করার দাবি উপদেষ্টা পরিষদে জানাব। আপনারা ভেবে দেখবেন, এই অধ্যাদেশটি রেখে কী কী সেফ গার্ডস ইন্ট্রোডিউস করলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে।’
কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এককভাবে কেউ সিদ্ধান্ত নেবে না, সম্মিলিতভাবে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি আপনাদের দাবিগুলো জানিয়ে দেব।’
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “কাস্টমসের কলমবিরতি ও ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা”
এ অচলাবস্থার রেশ না কাটতেই শুরু হচ্ছে ঈদুল আজহার দীর্ঘ ১০ দিনের ছুটি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ছুটির মধ্যে পণ্য ওঠানামার (লোডিং-আনলোডিং) কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু রাখলেও ব্যাংক বন্ধ থাকায় শুল্ক পরিশোধ করে পণ্যের চালান খালাস নিতে পারবেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে ড্যামারেজ ও কনটেইনার ভাড়া বাবদ বাড়তি খরচ গুনতে হবে। অন্যদিকে কারখানার জন্য নির্ধারিত সময়ে কাঁচামাল হাতে না পেয়ে উৎপাদন সীমিত কিংবা বন্ধ রাখতে হবে শিল্পোদ্যোক্তাদের।
এনবিআর বিলুপ্তির প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ১৪ মে থেকে শুল্কায়ন, পরীক্ষাসহ সব ধরনের কাস্টমস কার্যক্রম বন্ধ রেখে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করেন। প্রায় একই সময় বন্দরের শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থা। থমকে যায় শুল্কায়ন কার্যক্রম, শুরু হচ্ছে ঈদের দীর্ঘ ছুটি—এ দুই কারণে আর্থিক ক্ষতি যা হবে সেটিকে বহুমাত্রিক বলছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়তি সময় পণ্য রাখার ক্ষেত্রে জরিমানা বাড়িয়ে দেয়াটা আরো বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানোর চারদিনের মধ্যে পণ্য খালাস করতে হয় আমদানিকারকদের, যাকে বলে ‘কমন ল্যান্ডিং’। এ সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস করতে না পারলে অতিরিক্ত ভাড়া (ড্যামারেজ ফি) গুনতে হয়। অর্থাৎ চারদিন শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত প্রথম সাতদিনের জন্য একটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের বিপরীতে দৈনিক ড্যামারেজ ফি ২৪ ডলার, যা আগে ছিল ৬ ডলার।
এরপর দ্বিতীয় স্ল্যাবে অর্থাৎ পরবর্তী ১৩ দিনের জন্য প্রতিদিন ১২ ডলার করে দিতে হতো। নতুন নিয়মে সে হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৪৮ ডলারে। তৃতীয় স্ল্যাবে অর্থাৎ যতদিন বন্দর থেকে কনটেইনার খালাস না করা হয় প্রতিদিনের জন্য ড্যামারেজ ফি দিতে হবে ৯৬ ডলার। আগে তা ২৪ ডলার হারে নির্ধারিত ছিল।
এ বিষয়ে প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সম্প্রতি রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের কলমবিরতিতে শুল্কায়ন বন্ধ হয়ে পড়ার যে ধাক্কা এসেছে তার রেশ এখনো কাটেনি। দুদিন পর টানা যে ছুটি শুরু হচ্ছে তাতেও শুল্কায়ন কার্যক্রম অচল হয়ে পড়বে ব্যাংকিং ব্যবস্থা বন্ধ থাকায়। ফলে পণ্য খালাসে বিলম্বজনিত আর্থিক ক্ষতি ও অতিরিক্ত চার্জের মুখে পড়তে হবে আমাদের।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলগুলোর বৈঠক আজ”
সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। সংস্কার ইস্যুতে বৈঠক হলেও রাজনৈতিক দলগুলো বৈঠকে নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা করতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। যদিও আজকের বৈঠকে একসঙ্গে সব দলের নেতাদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন বলে জানানো হয়েছে। শুরুতে তিনি বক্তব্য দিতে পারেন। পরে দলগুলোর নেতারা কথা বলবেন।
বৈঠকে আমন্ত্রণ পাওয়া পাঁচটি রাজনৈতিক দলের নেতা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মঙ্গলবার দ্বিতীয় পূর্বে বৈঠক করবেন। এই ইস্যুতে একদফা বৈঠক এর আগেও হয়েছে। সেই বৈঠক থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল আসেনি।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বৈঠকের বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, আমরা মনে করি, আরও আগে পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন চাই। রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শ ভিন্ন, সুতরাং সবাই সব বিষয়ে একমত হবে না।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মানবজমিনকে বলেন, এটা বৈঠকের চেয়ে আনুষ্ঠানিকতা বেশি। নির্দিষ্ট কোনো অগ্রগতি নেই। রাজনৈতিক বিভাজন ও অচলাবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই। মঙ্গলবার বৈঠকে নির্বাচনের রোডম্যাপ সুনির্দিষ্ট করার সুযোগ আছে। আমরা আশা করি, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়ে আশ্বস্ত করবেন যে, ডিসেম্বরেই নির্বাচন। সরকার যে জুন মাসে চাচ্ছে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। সুতরাং বৈঠকে আমাদের প্রত্যাশা, অচলাবস্থা অবসানে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেবেন।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মানবজমিন বলেন, আমাদের জানানো হয়েছে, এটা দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকের উদ্বোধন। বৈঠকে গেলে আমরা বুঝতে পারবো। এরপরে আমাদের যে পরামর্শ এবং ভূমিকা, সেটা আমরা রাখবো।