০১:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

পর্ব ১: শিক্ষার দুর্ভাগ্যজনক সকাল—কোভিড-১৯

করোনার প্রথম ঢেউ: ক্লাসরুম থেকে লকডাউনের বন্দী জীবনে

২০২০ সালের মার্চে প্রথম লকডাউন ঘোষণা হওয়া মাত্রই শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ চণ্ডমার হয়ে উঠে। বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সবই বন্ধ। স্কুলছাত্র-কিশোররা হঠাৎ করে নিজেদের ঘরে বন্দি অনুভব করতে শুরু করে। দেশের দুই কোটি পাঁচ লক্ষের অধিক ছাত্রছাত্রী যখন এসএসসি, এইচএসসি কিংবা ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে, ঠিক সেই সময়ই তাঁদের একাডেমিক রুটিন বিবর্ণ হয়ে যায়।

  • প্রসঙ্গসূত্র: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে আনুমানিক ৩২ মিলিয়ন শিক্ষার্থী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • চ্যালেঞ্জ: অনলাইনে ক্লাস চালু করার ঘোষণা আসে, কিন্তু গ্রামীণ অঞ্চলে ইন্টারনেটের দুর্বলতা, দরিদ্র পরিবারের কাছে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের অপর্যাপ্ততা, ঘরে শ্রমাজনিত চাপ—এসব কারণে অনলাইনে অংশগ্রহণ করতে পারে মাত্র ৩৫–৪০% শিক্ষার্থী।

ডিজিটাল বিভাজন: সুযোগ না পেয়ে পড়াশোনা হারানো

“আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া মোবাইল ফেলানো ছিল, লকডাউনের জন্য আইডেটার ডাটা আসলেও আমিসেটব্লিন্টে সৌহ্য পাচ্ছি না”—এমন অভিযোগ এসেছে বহু শিক্ষার্থীর মুখ থেকে। বড় শহরগুলোর পাশেই গ্রামাঞ্চলও অবকাঠামোগত সুবিধার অজুহাতে পিছিয়ে পড়ে যায়। এতে বড়সড় শিক্ষাগত অসমতা তৈরি হয়।

  • তথ্য হিসেবে বলা যায় যে, দেশের পর্যায়ক্রমে ৫০ শতাংশের বেশি স্কুলছাত্র-ছাত্রী অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস চালাতে পারেনি, যা পড়াশোনার ধারাবাহিকতাকে বিপন্ন করে দিয়েছে।

শিক্ষা মানসিকতার কলিজায় ধাক্কা

কোভিডের দুর্যোগ শুধুমাত্র একাডেমিক ক্ষতি নয়; এর একটি বড় দিক হল মানসিক প্রভাব। যোগাযোগের অভাবে অনেকে বিষন্নতা, হতাশা ও উদ্বেগের হাতে বন্দি হয়।

  • মাদকাসক্তি ঝুঁকি: দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন সময় ক্লাসের বাইরে কাটানোর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইন গেমিং, সোশ্যাল মিডিয়া অতিরিক্ত ব্যবহার করে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • মেন্টাল হেলথ: করোনার সময়ে “বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য সমিতি”–র রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩০% শিক্ষার্থী প্রচণ্ড মানসিক চাপ থেকে বাঁচতে কোনো পরামর্শ বা কাউন্সেলিং পাননি।

ধুলোয় মিশে গেলো

একেবারে লাইনে ছিলামযখন কোভিড এসে সবকিছু থামিয়ে দিল। মনে হতোদিনের শেষে যা অর্জন করেছিসেটাই ধুলোয় মিলিয়ে যাচ্ছে”—এমনই অনুভূতি ছিল নিম্নমাধ্যমিকের মিতু নামে এক ছাত্রীর। কোভিড-১৯ শুধু ভাইরাস নয়এক নীরব অভিশাপ হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নেমে এসেছিল।

পর্ব ১: শিক্ষার দুর্ভাগ্যজনক সকাল—কোভিড-১৯

০৪:০০:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫

করোনার প্রথম ঢেউ: ক্লাসরুম থেকে লকডাউনের বন্দী জীবনে

২০২০ সালের মার্চে প্রথম লকডাউন ঘোষণা হওয়া মাত্রই শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ চণ্ডমার হয়ে উঠে। বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সবই বন্ধ। স্কুলছাত্র-কিশোররা হঠাৎ করে নিজেদের ঘরে বন্দি অনুভব করতে শুরু করে। দেশের দুই কোটি পাঁচ লক্ষের অধিক ছাত্রছাত্রী যখন এসএসসি, এইচএসসি কিংবা ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে, ঠিক সেই সময়ই তাঁদের একাডেমিক রুটিন বিবর্ণ হয়ে যায়।

  • প্রসঙ্গসূত্র: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে আনুমানিক ৩২ মিলিয়ন শিক্ষার্থী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • চ্যালেঞ্জ: অনলাইনে ক্লাস চালু করার ঘোষণা আসে, কিন্তু গ্রামীণ অঞ্চলে ইন্টারনেটের দুর্বলতা, দরিদ্র পরিবারের কাছে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের অপর্যাপ্ততা, ঘরে শ্রমাজনিত চাপ—এসব কারণে অনলাইনে অংশগ্রহণ করতে পারে মাত্র ৩৫–৪০% শিক্ষার্থী।

ডিজিটাল বিভাজন: সুযোগ না পেয়ে পড়াশোনা হারানো

“আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া মোবাইল ফেলানো ছিল, লকডাউনের জন্য আইডেটার ডাটা আসলেও আমিসেটব্লিন্টে সৌহ্য পাচ্ছি না”—এমন অভিযোগ এসেছে বহু শিক্ষার্থীর মুখ থেকে। বড় শহরগুলোর পাশেই গ্রামাঞ্চলও অবকাঠামোগত সুবিধার অজুহাতে পিছিয়ে পড়ে যায়। এতে বড়সড় শিক্ষাগত অসমতা তৈরি হয়।

  • তথ্য হিসেবে বলা যায় যে, দেশের পর্যায়ক্রমে ৫০ শতাংশের বেশি স্কুলছাত্র-ছাত্রী অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস চালাতে পারেনি, যা পড়াশোনার ধারাবাহিকতাকে বিপন্ন করে দিয়েছে।

শিক্ষা মানসিকতার কলিজায় ধাক্কা

কোভিডের দুর্যোগ শুধুমাত্র একাডেমিক ক্ষতি নয়; এর একটি বড় দিক হল মানসিক প্রভাব। যোগাযোগের অভাবে অনেকে বিষন্নতা, হতাশা ও উদ্বেগের হাতে বন্দি হয়।

  • মাদকাসক্তি ঝুঁকি: দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন সময় ক্লাসের বাইরে কাটানোর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইন গেমিং, সোশ্যাল মিডিয়া অতিরিক্ত ব্যবহার করে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • মেন্টাল হেলথ: করোনার সময়ে “বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য সমিতি”–র রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩০% শিক্ষার্থী প্রচণ্ড মানসিক চাপ থেকে বাঁচতে কোনো পরামর্শ বা কাউন্সেলিং পাননি।

ধুলোয় মিশে গেলো

একেবারে লাইনে ছিলামযখন কোভিড এসে সবকিছু থামিয়ে দিল। মনে হতোদিনের শেষে যা অর্জন করেছিসেটাই ধুলোয় মিলিয়ে যাচ্ছে”—এমনই অনুভূতি ছিল নিম্নমাধ্যমিকের মিতু নামে এক ছাত্রীর। কোভিড-১৯ শুধু ভাইরাস নয়এক নীরব অভিশাপ হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নেমে এসেছিল।