গণআন্দোলনে শিক্ষার্থীরা—স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং বাস্তবতা
সূচনা ও প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের বড় শহরগুলোতে শিক্ষার্থীদের জনসমাবেশ এবং পথঘাট বন্ধ করে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন সংগঠিত হয়। প্রধান দাবি হলো—সরকারি চাকরির সংখ্যা বৃদ্ধি, শিক্ষাবর্ষের মানোন্নয়ন, এবং উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে সুযোগসুবিধার সমতা। কয়েক দিনের মধ্যে এই আন্দোলন ফুলে ফেঁপে উঠলে, লাখো শিক্ষার্থী রাস্তায় নামে, শহরগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে, এবং সরকারী-বেসরকারি উভয় চাকরির নীতিমালায় সংস্কার দাবিতে স্লোগান দেয়।
শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক প্রত্যাশা
- সরকারি চাকরির বিন্দুমাত্র আশঙ্কা: বহু পরিবারই মনে করেছিল, শিক্ষাজীবন শেষ করলেই সরকারি চাকরি নিশ্চিত হবে। আন্দোলন থেকে তারা অনেক আশাবাদী হয় যে, সরকারের উচিত পদে পদে চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি করা।
- ব্যক্তিগত আর্থিক উন্নয়ন: বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করেছিল, সরকারের নিয়োগ নীতিমালা গঠন করলে তারা আর্থিক মুক্তি পাবে।
- শিক্ষাগত মানোন্নয়ন: আন্দোলনের মূল দাবি ছিল উচ্চশিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের বেতন-ভাতার পুনর্গঠন।
বিক্ষোভের ফলাফল ও উদ্বেগ
- আন্দোলন কিছু দিন ধরে চলে এবং সরকার কিছুটা শুনতে চেয়েছিল। তবে আন্দোলনের মাঝেই দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রকট রূপ নেয়। নিরাপত্তাহীনতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, আর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপড়েনের ফলে আন্দোলনের উত্তেজনা বাড়ে।
- শিক্ষার্থীরা হোটেল-রেস্তোরাঁয় থেকেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, কারণ আন্দোলন জোরদার হওয়ার পর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়।
- সম্পূর্ণ আশার বিপরীতে, আন্দোলন শেষ হওয়ার পর মুষ্টিমেয় প্রতিশ্রুতি ছাড়া বাস্তব পরিবর্তন খুব কমই হয়। শিক্ষার্থীরা আশা করেছিল—সরকার নতুন বন্যার মতো চাকরির প্যাকেজ দেবে; কিন্তু সে আশার আলো দ্রুত নিভে যায়।