০৩:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
ডেমোক্র্যাটদের নীতির ব্যর্থতা যেভাবে মামদানিকে জয়ী করল মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে ডিআরসি-রুয়ান্ডা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩২) ট্রাম্পের বিপরীতে, প্রাচীন চীন এর শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য রণক্ষেত্রে (পর্ব-৭৭) সমুদ্রের ওপার থেকে নতুন স্বপ্ন: তাইওয়ান তরুণদের ফুচিয়ানে নতুন জীবনগাঁথা ব্যর্থ কলম্বো, গলের লড়াই -এ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ঘরে জয় কেন ? ‘আকাশ হয়ে যাই’ মিউজিক ভিডিতে প্রশংসিত পূর্ণিমা বৃষ্টি সাউথ চায়নান মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন: ইরান আক্রমনে লাভ ক্ষতি

কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি

১৯৭৭-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমরা বুঝতেই পারিনি যে জনসমর্থন আমাদের দিকে রয়েছে। পরে যখন জগজীবন রামহেমবতী নন্দন বহুগুণা ও আবদুল্লাহ বুখারি আমাদের প্রচারে নামলেনতারপর থেকে জোয়ার শুধু বাড়তেই থাকল।
— কে. এন. গোবিন্দাচার্যসাবেক আরএসএস বুদ্ধিজীবী

১৯৭০-এর দশকের গোড়ায় কে. এন. গোবিন্দাচার্য ছিলেন আরএসএস-এর পাটনা বিভাগ প্রচারক। ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রস্থলে থেকে তিনি দেখেছিলেন কীভাবে তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধি সরকার-বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভ ধীরে ধীরে গণআন্দোলনে রূপ নেয় এবং শেষমেশ দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়। ৮২-বছর বয়সি এই সাবেক বিজেপি সাধারণ সম্পাদক এখন মূলত সামাজিক-পরিবেশগত কাজ করেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জরুরি অবস্থার দিনগুলো এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের (জেপি) সঙ্গে তাঁর ওঠাবসার স্মৃতি তুলে ধরলেন।

প্রশ্ন : আপনি তখন বিহারে আরএসএস প্রচারক ছিলেনযখন এবিভিপি ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ছাত্র সংগ্রাম সমিতি’ রাজ্য-সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সেই সময়ের কী স্মৃতি আছে?

উত্তর : ১৮ মার্চ ১৯৭৪-এ পাটনা বিধানসভার সামনে ছাত্ররা প্রবেশের চেষ্টা করলে গুলি চলেআর প্রদেশ ও সার্চলাইটআন্দোলনপন্থী দুটি পত্রিকার কার্যালয়ে আগুন লাগে। সেদিনই আমার আর রামবাহাদুর রাই-এর নামে মিসা ওয়ারেন্ট জারি হয়। ১৯ মার্চ গোপনে জেপি-র সঙ্গে দেখা করি১৯৬৬-র খরার সময় তাঁর সঙ্গে ত্রাণকাজ করেছি। প্রথমে তিনি বললেন, ‘তোমরা তো উচ্ছৃঙ্খলপত্রিকা পুড়িয়েছ।’ আমি জানালামওই দুটি পত্রিকা-ই ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে লেখে… পরে স্থির হয় ২৭ মার্চ এক ছোট মিছিল হবে। সেদিন শিবানন্দ তেওয়ারি গ্রেফতার হন। জেপি ঘোষণা দিলেন২৯ মার্চের মধ্যে কারফিউ না উঠলে তিনি রাস্তায় নামবেন। একদিন আগেই কারফিউ উঠল। ৮ এপ্রিল গান্ধী ময়দানে জেপি বড় সমাবেশ করেনসেখানে ব্যবস্থা-পরিবর্তন’-এর ডাক দেন। এরপর চিকিৎসার জন্য ভেলোর চলে যান।

প্রশ্ন : জেপি-র অনুপস্থিতি কি আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছিলতিনি আবার কবে নেতৃত্বে ফেরেন?

উত্তর : ছাত্র আন্দোলন কিছু সংগঠনের সহায়তা পেলেও ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়ছিল। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেইবিরোধী বিধায়কদের পদত্যাগ করাতে হবে… এর মাঝে গয়া-র একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ লাঠিচার্জ হয়। জেপি ঘোষণা করলেনএই সরকার থাকতে পারে নাবিধানসভা ভেঙে দিতে হবে। ৮-৯ মে থেকে বিরোধী বিধায়কদের পদত্যাগ শুরু। জুনের শুরুতে চিকিৎসা শেষে জেপি ফেরেন। ৫ জুন ছাত্র সংগ্রাম সমিতির মিছিল ইন্দিরা ব্রিগেডের হামলায় পড়ে… সেই সমাবেশে জেপি স্লোগান দেন, “সম্পূর্ণ বিপ্লব এখনই শ্লোগানভবিষ্যতের ইতিহাস আমাদেরই।

প্রশ্ন : কীভাবে এই আন্দোলন জাতীয় রূপ নিল?

উত্তর : ১৯৭৪-এর নভেম্বর-এ ইন্দিরা গান্ধি মন্তব্য করেন, ‘জেপি যদি এতই গণতন্ত্রী হনআসন্ন নির্বাচনেই বোঝা যাবে কার পক্ষে জনসমর্থন।’ জেপি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ঘোষণা দিলেনআন্দোলন সারাদেশে ছড়াবে।

প্রশ্ন : যেহেতু ইন্দিরা জি বলেছিলেন নির্বাচনেই জনপ্রিয়তা প্রমাণ হবেতাহলে জরুরি অবস্থা জারি হল কেনশুধু কি এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়া?

উত্তর : নাতখন থেকেই তিনি সহনশীলতা হারাচ্ছিলেন। চন্দ্রশেখর-এর মতো কংগ্রেস ইয়ং টার্ক’-রা চেয়েছিলেন ইন্দিরা জি ও জেপি আলাপ করুনসমঝোতার পথ খুঁজুন… কিন্তু ওম মেহতাআর. কে. ধাওয়ানমাখনলাল ফোতেদের-এর মতো ঘনিষ্ঠ মহলের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। আদালতের ধাক্কার পর আচমকা বদল এল। শোনা গেলকংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে শক্তি প্রদর্শন হতে পারেএই আশঙ্কায় তিনি দ্রুত অভ্যন্তরীণ জরুরি অবস্থা জারির পথে হাঁটেন।

প্রশ্ন : জরুরি অবস্থার প্রথম দিনটি আপনি কীভাবে দেখলেন?

উত্তর : ২৫ জুন ১৯৭৫তখন বারাণসীতে ছিলামখবর পেলাম কিছু একটা হতে চলেছে। পাঞ্জাব মেল ধরে পাটনা ফিরি। ঠিক করিআগে অবস্থা বুঝে নেবআরএসএস কার্যালয়ে যাব না। এক ছাত্রকে পাঠিয়ে খবর নিইপুলিশ ঘিরে রেখেছেতল্লাশি চলছে… ১৯৭৪-এর বিহার আন্দোলন থেকে গোপনে কাজের কৌশল শিখেছিলাম। সেদিন রাতেই সিদ্ধান্ত হলআমাদের শীর্ষ নেতারা কোথায় গা-ঢাকা দেবেনগুরু-দক্ষিণায় সংগৃহীত অর্থ ব্যাংক ফ্রিজ হওয়ার আগে তুলে ফেলা আর দাতাদের তালিকা লুকিয়ে রাখা।

আমি পুরো জরুরি অবস্থা জুড়ে গা-ঢাকা দিয়ে থাকিশেষ পর্যন্ত ১৯৭৭-এর লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর মাত্র এক দিন কারাবাস করি। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭-এ ভোট প্রচারে ভাগলপুর যাই। সভাস্থলে পুলিশ হানা দেয়খবরে টিপ-অফ ছিল। গ্রেফতার হওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা হওয়ার আগেই সংঘ খবর পায়জামিনের আবেদন করে। পরদিন সকালে মুক্তি পাই।

প্রশ্ন : পুরো জরুরি অবস্থায় কীভাবে গ্রেফতার এড়ালেন?

উত্তর : কখনও এক জায়গায় এক সপ্তাহের বেশি থাকিনি। বিহারআসামপশ্চিমবঙ্গওড়িশামণিপুর সহ উত্তর-পূর্বের নানা জেলায় ঘুরেছিসাধারণ কর্মীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

প্রশ্ন : ১৯৭৭-এর নির্বাচন ও জরুরি অবসানের অবসান নিয়ে আপনার স্মৃতি?

উত্তর : আমরা আরএসএস প্রান্ত প্রচারককে নিয়ে জেপি-র কাছে যাই। তিনি বলেন, ‘মিষ্টি আনো।’ বললাম, ‘আপনার ডায়াবেটিসডায়ালিসিস চলছে।’ উত্তর দিলেন, ‘সব ঠিক আছে।’ সেদিন তিনি মিষ্টি খেলেন।

অনেকে নির্বাচন লড়তে চাইছিলেন নাঅনেকে তখনও জেলে। প্রার্থী হওয়ার ফলে কেউ মুক্তি পেলেনতখন বন্দিরাও প্রার্থী হতে চাইলেন মুক্তির আশায়। জর্জ ফার্নান্ডেজ বের হননিজেল থেকেই জেতেন।

১৯৭৭-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমরা বুঝিনি মানুষ আমাদের পক্ষে। তখন আসে মোড় ঘোরানো ঘটনাজগজীবন রামহেমবতী নন্দন বহুগুণাআবদুল্লাহ বুখারি প্রচারে নামেন। এতে পরিস্থিতি বদলে যায়। তারপর থেকে জনস্রোত শুধু বেড়েই চলেছিল।

ডেমোক্র্যাটদের নীতির ব্যর্থতা যেভাবে মামদানিকে জয়ী করল

কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি

১০:০০:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

১৯৭৭-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমরা বুঝতেই পারিনি যে জনসমর্থন আমাদের দিকে রয়েছে। পরে যখন জগজীবন রামহেমবতী নন্দন বহুগুণা ও আবদুল্লাহ বুখারি আমাদের প্রচারে নামলেনতারপর থেকে জোয়ার শুধু বাড়তেই থাকল।
— কে. এন. গোবিন্দাচার্যসাবেক আরএসএস বুদ্ধিজীবী

১৯৭০-এর দশকের গোড়ায় কে. এন. গোবিন্দাচার্য ছিলেন আরএসএস-এর পাটনা বিভাগ প্রচারক। ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রস্থলে থেকে তিনি দেখেছিলেন কীভাবে তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধি সরকার-বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভ ধীরে ধীরে গণআন্দোলনে রূপ নেয় এবং শেষমেশ দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়। ৮২-বছর বয়সি এই সাবেক বিজেপি সাধারণ সম্পাদক এখন মূলত সামাজিক-পরিবেশগত কাজ করেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জরুরি অবস্থার দিনগুলো এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের (জেপি) সঙ্গে তাঁর ওঠাবসার স্মৃতি তুলে ধরলেন।

প্রশ্ন : আপনি তখন বিহারে আরএসএস প্রচারক ছিলেনযখন এবিভিপি ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ছাত্র সংগ্রাম সমিতি’ রাজ্য-সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সেই সময়ের কী স্মৃতি আছে?

উত্তর : ১৮ মার্চ ১৯৭৪-এ পাটনা বিধানসভার সামনে ছাত্ররা প্রবেশের চেষ্টা করলে গুলি চলেআর প্রদেশ ও সার্চলাইটআন্দোলনপন্থী দুটি পত্রিকার কার্যালয়ে আগুন লাগে। সেদিনই আমার আর রামবাহাদুর রাই-এর নামে মিসা ওয়ারেন্ট জারি হয়। ১৯ মার্চ গোপনে জেপি-র সঙ্গে দেখা করি১৯৬৬-র খরার সময় তাঁর সঙ্গে ত্রাণকাজ করেছি। প্রথমে তিনি বললেন, ‘তোমরা তো উচ্ছৃঙ্খলপত্রিকা পুড়িয়েছ।’ আমি জানালামওই দুটি পত্রিকা-ই ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে লেখে… পরে স্থির হয় ২৭ মার্চ এক ছোট মিছিল হবে। সেদিন শিবানন্দ তেওয়ারি গ্রেফতার হন। জেপি ঘোষণা দিলেন২৯ মার্চের মধ্যে কারফিউ না উঠলে তিনি রাস্তায় নামবেন। একদিন আগেই কারফিউ উঠল। ৮ এপ্রিল গান্ধী ময়দানে জেপি বড় সমাবেশ করেনসেখানে ব্যবস্থা-পরিবর্তন’-এর ডাক দেন। এরপর চিকিৎসার জন্য ভেলোর চলে যান।

প্রশ্ন : জেপি-র অনুপস্থিতি কি আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছিলতিনি আবার কবে নেতৃত্বে ফেরেন?

উত্তর : ছাত্র আন্দোলন কিছু সংগঠনের সহায়তা পেলেও ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়ছিল। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেইবিরোধী বিধায়কদের পদত্যাগ করাতে হবে… এর মাঝে গয়া-র একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ লাঠিচার্জ হয়। জেপি ঘোষণা করলেনএই সরকার থাকতে পারে নাবিধানসভা ভেঙে দিতে হবে। ৮-৯ মে থেকে বিরোধী বিধায়কদের পদত্যাগ শুরু। জুনের শুরুতে চিকিৎসা শেষে জেপি ফেরেন। ৫ জুন ছাত্র সংগ্রাম সমিতির মিছিল ইন্দিরা ব্রিগেডের হামলায় পড়ে… সেই সমাবেশে জেপি স্লোগান দেন, “সম্পূর্ণ বিপ্লব এখনই শ্লোগানভবিষ্যতের ইতিহাস আমাদেরই।

প্রশ্ন : কীভাবে এই আন্দোলন জাতীয় রূপ নিল?

উত্তর : ১৯৭৪-এর নভেম্বর-এ ইন্দিরা গান্ধি মন্তব্য করেন, ‘জেপি যদি এতই গণতন্ত্রী হনআসন্ন নির্বাচনেই বোঝা যাবে কার পক্ষে জনসমর্থন।’ জেপি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ঘোষণা দিলেনআন্দোলন সারাদেশে ছড়াবে।

প্রশ্ন : যেহেতু ইন্দিরা জি বলেছিলেন নির্বাচনেই জনপ্রিয়তা প্রমাণ হবেতাহলে জরুরি অবস্থা জারি হল কেনশুধু কি এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়া?

উত্তর : নাতখন থেকেই তিনি সহনশীলতা হারাচ্ছিলেন। চন্দ্রশেখর-এর মতো কংগ্রেস ইয়ং টার্ক’-রা চেয়েছিলেন ইন্দিরা জি ও জেপি আলাপ করুনসমঝোতার পথ খুঁজুন… কিন্তু ওম মেহতাআর. কে. ধাওয়ানমাখনলাল ফোতেদের-এর মতো ঘনিষ্ঠ মহলের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। আদালতের ধাক্কার পর আচমকা বদল এল। শোনা গেলকংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে শক্তি প্রদর্শন হতে পারেএই আশঙ্কায় তিনি দ্রুত অভ্যন্তরীণ জরুরি অবস্থা জারির পথে হাঁটেন।

প্রশ্ন : জরুরি অবস্থার প্রথম দিনটি আপনি কীভাবে দেখলেন?

উত্তর : ২৫ জুন ১৯৭৫তখন বারাণসীতে ছিলামখবর পেলাম কিছু একটা হতে চলেছে। পাঞ্জাব মেল ধরে পাটনা ফিরি। ঠিক করিআগে অবস্থা বুঝে নেবআরএসএস কার্যালয়ে যাব না। এক ছাত্রকে পাঠিয়ে খবর নিইপুলিশ ঘিরে রেখেছেতল্লাশি চলছে… ১৯৭৪-এর বিহার আন্দোলন থেকে গোপনে কাজের কৌশল শিখেছিলাম। সেদিন রাতেই সিদ্ধান্ত হলআমাদের শীর্ষ নেতারা কোথায় গা-ঢাকা দেবেনগুরু-দক্ষিণায় সংগৃহীত অর্থ ব্যাংক ফ্রিজ হওয়ার আগে তুলে ফেলা আর দাতাদের তালিকা লুকিয়ে রাখা।

আমি পুরো জরুরি অবস্থা জুড়ে গা-ঢাকা দিয়ে থাকিশেষ পর্যন্ত ১৯৭৭-এর লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর মাত্র এক দিন কারাবাস করি। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭-এ ভোট প্রচারে ভাগলপুর যাই। সভাস্থলে পুলিশ হানা দেয়খবরে টিপ-অফ ছিল। গ্রেফতার হওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা হওয়ার আগেই সংঘ খবর পায়জামিনের আবেদন করে। পরদিন সকালে মুক্তি পাই।

প্রশ্ন : পুরো জরুরি অবস্থায় কীভাবে গ্রেফতার এড়ালেন?

উত্তর : কখনও এক জায়গায় এক সপ্তাহের বেশি থাকিনি। বিহারআসামপশ্চিমবঙ্গওড়িশামণিপুর সহ উত্তর-পূর্বের নানা জেলায় ঘুরেছিসাধারণ কর্মীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

প্রশ্ন : ১৯৭৭-এর নির্বাচন ও জরুরি অবসানের অবসান নিয়ে আপনার স্মৃতি?

উত্তর : আমরা আরএসএস প্রান্ত প্রচারককে নিয়ে জেপি-র কাছে যাই। তিনি বলেন, ‘মিষ্টি আনো।’ বললাম, ‘আপনার ডায়াবেটিসডায়ালিসিস চলছে।’ উত্তর দিলেন, ‘সব ঠিক আছে।’ সেদিন তিনি মিষ্টি খেলেন।

অনেকে নির্বাচন লড়তে চাইছিলেন নাঅনেকে তখনও জেলে। প্রার্থী হওয়ার ফলে কেউ মুক্তি পেলেনতখন বন্দিরাও প্রার্থী হতে চাইলেন মুক্তির আশায়। জর্জ ফার্নান্ডেজ বের হননিজেল থেকেই জেতেন।

১৯৭৭-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমরা বুঝিনি মানুষ আমাদের পক্ষে। তখন আসে মোড় ঘোরানো ঘটনাজগজীবন রামহেমবতী নন্দন বহুগুণাআবদুল্লাহ বুখারি প্রচারে নামেন। এতে পরিস্থিতি বদলে যায়। তারপর থেকে জনস্রোত শুধু বেড়েই চলেছিল।