০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৮)

বহু রাজা এখানে দান করতে আসেন, কারণ এখানে দান অন্য জায়গায় হাজার গুণ দানের সমান ফলপ্রদ বলে প্রসিদ্ধি আছে।

মহারাজ প্রধান প্রধান অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে ঐ পাঁচ শত ব্রাহ্মণকে ভারতবর্ষের সীমান্তে নির্বাসন দিলেন।এর পর সভাভঙ্গ হল। ধর্মগুরু নালন্দার ভিক্ষুদের কাছে বিদায় নিয়ে দেশে ফিরবার জন্যে মহারাজার কাছে বিদায় নিতে গেলেন। মহারাজ বললেন, ‘আমি ত্রিশ বছরের বেশি ভারতবর্ষের সম্রাট হয়েছি।

প্রতি পাঁচ বছরে আমি প্রয়াগের সঙ্গমস্থলে সমস্ত ভারতের শ্রমণদের, ব্রাহ্মণদের আর দরিদ্র আতুরদের পঁচাত্তর দিন ধরে বহু ধনরত্ব দান করি। এ পর্যন্ত আমি পাঁচটা ‘মোক্ষসভা’ সম্পূর্ণ করেছি, আর ষষ্ঠ সভা শীঘ্রই হবে। ধর্মগুরু দেশে ফিরবার আগে এটা দেখে আনন্দ করুন না?’ ধর্মগুরু সানন্দে স্বীকৃত হলেন। একুশ দিনের দিন (সভা আহত হবার পর একুশ দিন?) হর্ষবর্ধন হিউএনচাঙকে নিয়ে সেখান থেকে প্রয়াগে এলেন।

‘গঙ্গা-যমুনার সঙ্গমের পশ্চিমে একটি প্রকাণ্ড ময়দান, এর পরিধি তিন মাইল। এটা একেবারে আয়নার মতন সমতল। এই স্থানেরনাম ‘দানের মাঠ’, আর পুরাকাল থেকে বহু রাজা এখানে দান করতে আসেন, কারণ এখানে দান অন্য জায়গায় হাজার গুণ দানের সমান ফলপ্রদ বলে প্রসিদ্ধি আছে।

এখানে একটা চতুস্কোণ ভূমি, যার প্রতি দিক দেড় হাজার ফুট লম্বা, বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা হল আর তাতে শত শত খড়ের চালের ঘরে দান-সামগ্রী, বহু ধনরত্ন, যথা-সোনা, রূপা, মুক্তা, লাল কাঁচ, ইন্দ্রনীল মুক্তা, মহানীল মুক্তা ইত্যাদি রাখা হল। তাছাড়া লম্বা লম্বা গুদামে রেশম ও সুতার পোশাক, সোনা-রূপার টাকা, এসব রাখা হল। এই বেড়ার বাইরে খাবার জায়গা হল। তাছাড়া আমাদের রাজধানী, পিকিনের হাটে যেমন থাকে, সেই রকম লম্বা লম্বা শতখানেক ঘর তৈরি হল যেখানে হাজার লোকে বিশ্রাম করতে পারে।’

এর কিছু আগেই মহারাজার হুকুমে সমস্ত দেশের শ্রমণরা, বিধর্মীরা, নিগ্রস্থরা, গরীব পিতৃমাতৃহীন, অনাথ, আতুর, সকলেই দান গ্রহণ করতে হাজির হয়েছিল।

(চলবে)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৭)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৭)

 

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৮)

০৭:০০:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

বহু রাজা এখানে দান করতে আসেন, কারণ এখানে দান অন্য জায়গায় হাজার গুণ দানের সমান ফলপ্রদ বলে প্রসিদ্ধি আছে।

মহারাজ প্রধান প্রধান অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে ঐ পাঁচ শত ব্রাহ্মণকে ভারতবর্ষের সীমান্তে নির্বাসন দিলেন।এর পর সভাভঙ্গ হল। ধর্মগুরু নালন্দার ভিক্ষুদের কাছে বিদায় নিয়ে দেশে ফিরবার জন্যে মহারাজার কাছে বিদায় নিতে গেলেন। মহারাজ বললেন, ‘আমি ত্রিশ বছরের বেশি ভারতবর্ষের সম্রাট হয়েছি।

প্রতি পাঁচ বছরে আমি প্রয়াগের সঙ্গমস্থলে সমস্ত ভারতের শ্রমণদের, ব্রাহ্মণদের আর দরিদ্র আতুরদের পঁচাত্তর দিন ধরে বহু ধনরত্ব দান করি। এ পর্যন্ত আমি পাঁচটা ‘মোক্ষসভা’ সম্পূর্ণ করেছি, আর ষষ্ঠ সভা শীঘ্রই হবে। ধর্মগুরু দেশে ফিরবার আগে এটা দেখে আনন্দ করুন না?’ ধর্মগুরু সানন্দে স্বীকৃত হলেন। একুশ দিনের দিন (সভা আহত হবার পর একুশ দিন?) হর্ষবর্ধন হিউএনচাঙকে নিয়ে সেখান থেকে প্রয়াগে এলেন।

‘গঙ্গা-যমুনার সঙ্গমের পশ্চিমে একটি প্রকাণ্ড ময়দান, এর পরিধি তিন মাইল। এটা একেবারে আয়নার মতন সমতল। এই স্থানেরনাম ‘দানের মাঠ’, আর পুরাকাল থেকে বহু রাজা এখানে দান করতে আসেন, কারণ এখানে দান অন্য জায়গায় হাজার গুণ দানের সমান ফলপ্রদ বলে প্রসিদ্ধি আছে।

এখানে একটা চতুস্কোণ ভূমি, যার প্রতি দিক দেড় হাজার ফুট লম্বা, বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা হল আর তাতে শত শত খড়ের চালের ঘরে দান-সামগ্রী, বহু ধনরত্ন, যথা-সোনা, রূপা, মুক্তা, লাল কাঁচ, ইন্দ্রনীল মুক্তা, মহানীল মুক্তা ইত্যাদি রাখা হল। তাছাড়া লম্বা লম্বা গুদামে রেশম ও সুতার পোশাক, সোনা-রূপার টাকা, এসব রাখা হল। এই বেড়ার বাইরে খাবার জায়গা হল। তাছাড়া আমাদের রাজধানী, পিকিনের হাটে যেমন থাকে, সেই রকম লম্বা লম্বা শতখানেক ঘর তৈরি হল যেখানে হাজার লোকে বিশ্রাম করতে পারে।’

এর কিছু আগেই মহারাজার হুকুমে সমস্ত দেশের শ্রমণরা, বিধর্মীরা, নিগ্রস্থরা, গরীব পিতৃমাতৃহীন, অনাথ, আতুর, সকলেই দান গ্রহণ করতে হাজির হয়েছিল।

(চলবে)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৭)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৭)