বিশ্ব বিখ্যাত রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল আবারও বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে—যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ নেওয়া সহজ করতে নীতিগত সুদের হার কমিয়েছে।
এসঅ্যান্ডপির ১৬ জুলাই প্রকাশিত সর্বশেষ মধ্যবর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি স্কেলে বাংলাদেশ ৯.০ পয়েন্ট পেয়েছে, যেখানে ১০-এর বেশি স্কোর মানে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। এই স্কোর অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন মঙ্গোলিয়া ও কম্বোডিয়ার মতো দেশের সঙ্গে একই সর্বোচ্চ ঝুঁকির শ্রেণিতে পড়ছে। এর বিপরীতে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনের মতো আঞ্চলিক প্রতিবেশী দেশগুলো অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ও শক্তিশালী ব্যাংকিং পরিবেশ বজায় রেখেছে।
গত এক বছরে, বাংলাদেশ ব্যাংককে বেশ কয়েকটি ইসলামি ব্যাংকের আর্থিক সংকটে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কিন্তু এসঅ্যান্ডপির মতে, এসব হস্তক্ষেপও মূল সমস্যা সমাধানে তেমন কোনো অগ্রগতি আনেনি।
সুদের হার কমিয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা
ব্যাংক খাতে কিছুটা স্বস্তি দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ জুলাই রিভার্স রিপো রেট বা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ধার নেওয়ার হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনে। এর মাধ্যমে বাজারে তারল্য বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, যাতে ব্যাংকগুলো সাধারণ মানুষ ও ব্যবসার জন্য বেশি ঋণ দিতে পারে।
তবে অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ কেবল স্বল্পমেয়াদি স্বস্তি দেবে এবং ব্যাংক খাতের গভীর শাসনব্যবস্থা ও কাঠামোগত দুর্বলতা দূর করতে পারবে না।
অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান
এসঅ্যান্ডপির ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি কান্ট্রি রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (BICRA) স্কেলে বাংলাদেশের অবস্থান অন্যান্য দেশের তুলনায় নিম্নরূপ:
- ভারত: ৫ (মধ্যম ঝুঁকি)
- ইন্দোনেশিয়া: ৬ (পরিচালনাযোগ্য)
- ভিয়েতনাম: ৮
- বাংলাদেশ, মঙ্গোলিয়া, কম্বোডিয়া: ৯ (এশিয়া-প্যাসিফিকে সর্বোচ্চ ঝুঁকি)
এই তুলনা স্পষ্ট করে যে, মাথাপিছু জিডিপি কম হলেও অনেক দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল।
এদিকে, আরেক আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডিস সম্প্রতি (১১ জুলাই) বাংলাদেশের সার্বভৌম ঋণমান কমিয়ে B1 থেকে B2 করেছে, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও বেশি ঝুঁকির ইঙ্গিত। তবে ২২ জুলাই পর্যন্ত মুডিস থেকে আর কোনো নতুন আপডেট পাওয়া যায়নি।