০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
রেস্টুরেন্ট বুকিং নিয়ে নতুন বিতর্ক: বিলাসিতা নাকি বাজারের বাস্তবতা? রাজা সীতারাম রায়: যশোরের স্বাধীন রাজ্যের সাহসী রাজা রহস্যময় রাতের যাত্রা: এক রোমাঞ্চকর রাত বান্দরবানে সোমেশ্বরী নদী: পাহাড়ি ঢল, পাথরের খনি ও পর্যটনের সম্ভাবনা কপিল দেবের মতো নন জাদেজা: সিধুর কঠোর সমালোচনা রণক্ষেত্রে (পর্ব-৮৮) নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন: বাংলাদেশে হামলায় বিদেশিদের লক্ষ্য করেছিল আইএস কে-পপের স্টাইল আইকন: ছোট্ট এক চুলের স্টাইলেই ভাইরাল এস্পার উইন্টার মার্বেল বিড়াল — দুর্লভ রহস্যের ছায়া উপকূলে নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা ও জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে ডেনমার্কের সহায়তায় ব্র্যাকের ‘রেইন ফর লাইফ’

বাংলাদেশে শিশুর পাতে ডিম নেই: পুষ্টিহীন ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি

শিশুর পাতে ডিম নেই কেন?

বাংলাদেশের গ্রামে কিংবা শহরের নিম্নবিত্ত পাড়ায় গেলে একটি সাধারণ প্রশ্ন প্রায়ই শোনা যায়—“আপনার বাচ্চা কি সপ্তাহে অন্তত একটি ডিম খায়?” অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, অধিকাংশ অভিভাবক লজ্জায় মুখ নামিয়ে বলেন—“না, এখন আর খাওয়াতে পারি না।” এই উত্তর শুধু ব্যক্তিগত অসহায়তার নয়, বরং এটি একটি বৃহৎ জাতীয় সংকটের প্রতিচ্ছবি। লাখ লাখ শিশু আজ মৌলিক পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং এর পেছনে রয়েছে দেশের ক্রমাবনত অর্থনৈতিক অবস্থা। কারণ মাত্র এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৩ শতাংশে।

ডিমের পুষ্টিগুণ ও শিশুর বিকাশ

ডিমকে বলা হয় ‘পুষ্টির পাওয়ারহাউস’। এতে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ডি, ই, বি১২,আয়রন, জিংক ও প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো শিশুর ব্রেইনের বিকাশ, হাড় গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও ইউনিসেফের মতে, ৬ মাস বয়সের পর প্রতিদিন একটি ডিম শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে সহায়ক। কিন্তু বাংলাদেশে কোটি কোটি শিশু সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পাচ্ছে না, যা জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি করছে।

পরিসংখ্যান: কত শিশু বঞ্চিত হচ্ছে ডিম থেকে?

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) এবং ইউনিসেফের ২০২৩–২০২৪ সালের যৌথ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ শিশু (০–১৪ বছর বয়সী) রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ শিশু—অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ৬৪ লাখ—নিয়মিতভাবে সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পায় না। ২০২৪ সালে ব্র্যাক ও জাইকার (JICA) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, শহরের নিম্নআয়ের পরিবারে ৭৫ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৫ শতাংশ শিশু সপ্তাহে একটিও ডিম খায় না। যারা খায়, তারাও মূলত উৎসব বা বিশেষ দিনে সুযোগ পায়। জাতীয় পুষ্টি পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে, যার অন্যতম কারণ প্রোটিন ঘাটতি। অথচ ডিম হতে পারত এই ঘাটতির সহজ ও কার্যকর সমাধান।

ডিমের দাম বাড়ছেআয় কমছে

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এক ডজন ডিমের দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, অর্থাৎ প্রতি ডিম ১২–১৪ টাকায় বিক্রি হতো। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫–১৮ টাকায়। অথচ এই সময়েই মানুষের আয় কমেছে, চাকরি কমেছে এবং জীবিকা সংকুচিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি যেখানে এক বছর আগে ছিল ৬.৭ শতাংশ, এখন তা মাত্র ৩.৩ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবৃদ্ধি হঠাৎ এতটা কমে গেলে তা বিনিয়োগে প্রভাব ফেলার পাশাপাশি সরাসরি সাধারণ মানুষের ব্যয়ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো খাদ্য খরচ থেকেই প্রথমে সাশ্রয় করে, ফলে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য—যেমন ডিম, দুধ, মাছ—তালিকা থেকে বাদ পড়ে।

সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে?

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যদি এ অবস্থা চলতে থাকে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তাহলে আগামী ৬–৮ মাসের মধ্যে দেশের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ শিশু সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পারবে না। এমন অবস্থা নতুন নয়। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দার সময়ও গ্রামীণ পরিবারগুলোর শিশুরা ডিম, দুধ ও ফলমূলের মতো খাদ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। তবে ২০২৫ সালের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে আরও গুরুতর। কারণ এবার একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, রপ্তানি হ্রাস এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

সরকারি উদ্যোগের জরুরি প্রয়োজন

এই সংকট সমাধানে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। ভারতের মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা ও মহারাষ্ট্র রাজ্যে স্কুলের শিশুদের জন্য ‘মিড-ডে মিল’ কর্মসূচির আওতায় সপ্তাহে ৩–৪ দিন ডিম দেওয়া হয়। বাংলাদেশেও ২০১৫ সালে এমন একটি প্রকল্প সীমিতভাবে চালু হয়েছিল, কিন্তু বাজেট সংকটে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার নতুন করে একটি বৃহৎ ও টেকসই কর্মসূচি প্রয়োজন, যেখানে অন্তত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য বিনামূল্যে বা ভর্তুকিমূল্যে ডিম সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

একটি ডিম মানে একটি জাতির ভবিষ্যৎ

একটি ডিম শুধুই একটি খাবার নয়—এটি একটি শিশুর সুস্থ জীবন, শিক্ষা ও বিকাশের প্রথম পদক্ষেপ। যখন একটি দেশের কোটি শিশু সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পারে না, তখন সেটি কেবল খাদ্য সংকট নয়, বরং একটি জাতির অর্থনৈতিক ও মানবিক ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে ওঠে। জিডিপি কমে যাওয়ার সংখ্যা দেখে আমরা আতঙ্কিত হই, কিন্তু তার প্রতিচ্ছবি যে শিশুদের খালি পেটে প্রতিদিন ফুটে উঠছে, তা অনেকেই ভুলে যাই।

এই সংকটের মোকাবিলায় চাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা, বাজেট বরাদ্দে শিশুপুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এবং একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, যা শিশুর মুখে ডিম তুলে দিতে পারবে। না হলে এই ডিমহীন ভবিষ্যৎই আমাদের জাতিকে একটি অসুস্থ, অক্ষম ও অনুন্নত জাতিতে পরিণত করবে।

রেস্টুরেন্ট বুকিং নিয়ে নতুন বিতর্ক: বিলাসিতা নাকি বাজারের বাস্তবতা?

বাংলাদেশে শিশুর পাতে ডিম নেই: পুষ্টিহীন ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি

০৪:২৭:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

শিশুর পাতে ডিম নেই কেন?

বাংলাদেশের গ্রামে কিংবা শহরের নিম্নবিত্ত পাড়ায় গেলে একটি সাধারণ প্রশ্ন প্রায়ই শোনা যায়—“আপনার বাচ্চা কি সপ্তাহে অন্তত একটি ডিম খায়?” অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, অধিকাংশ অভিভাবক লজ্জায় মুখ নামিয়ে বলেন—“না, এখন আর খাওয়াতে পারি না।” এই উত্তর শুধু ব্যক্তিগত অসহায়তার নয়, বরং এটি একটি বৃহৎ জাতীয় সংকটের প্রতিচ্ছবি। লাখ লাখ শিশু আজ মৌলিক পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং এর পেছনে রয়েছে দেশের ক্রমাবনত অর্থনৈতিক অবস্থা। কারণ মাত্র এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৩ শতাংশে।

ডিমের পুষ্টিগুণ ও শিশুর বিকাশ

ডিমকে বলা হয় ‘পুষ্টির পাওয়ারহাউস’। এতে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ডি, ই, বি১২,আয়রন, জিংক ও প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো শিশুর ব্রেইনের বিকাশ, হাড় গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও ইউনিসেফের মতে, ৬ মাস বয়সের পর প্রতিদিন একটি ডিম শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে সহায়ক। কিন্তু বাংলাদেশে কোটি কোটি শিশু সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পাচ্ছে না, যা জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি করছে।

পরিসংখ্যান: কত শিশু বঞ্চিত হচ্ছে ডিম থেকে?

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) এবং ইউনিসেফের ২০২৩–২০২৪ সালের যৌথ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ শিশু (০–১৪ বছর বয়সী) রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ শিশু—অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ৬৪ লাখ—নিয়মিতভাবে সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পায় না। ২০২৪ সালে ব্র্যাক ও জাইকার (JICA) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, শহরের নিম্নআয়ের পরিবারে ৭৫ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৫ শতাংশ শিশু সপ্তাহে একটিও ডিম খায় না। যারা খায়, তারাও মূলত উৎসব বা বিশেষ দিনে সুযোগ পায়। জাতীয় পুষ্টি পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে, যার অন্যতম কারণ প্রোটিন ঘাটতি। অথচ ডিম হতে পারত এই ঘাটতির সহজ ও কার্যকর সমাধান।

ডিমের দাম বাড়ছেআয় কমছে

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এক ডজন ডিমের দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, অর্থাৎ প্রতি ডিম ১২–১৪ টাকায় বিক্রি হতো। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫–১৮ টাকায়। অথচ এই সময়েই মানুষের আয় কমেছে, চাকরি কমেছে এবং জীবিকা সংকুচিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি যেখানে এক বছর আগে ছিল ৬.৭ শতাংশ, এখন তা মাত্র ৩.৩ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবৃদ্ধি হঠাৎ এতটা কমে গেলে তা বিনিয়োগে প্রভাব ফেলার পাশাপাশি সরাসরি সাধারণ মানুষের ব্যয়ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো খাদ্য খরচ থেকেই প্রথমে সাশ্রয় করে, ফলে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য—যেমন ডিম, দুধ, মাছ—তালিকা থেকে বাদ পড়ে।

সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে?

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যদি এ অবস্থা চলতে থাকে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তাহলে আগামী ৬–৮ মাসের মধ্যে দেশের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ শিশু সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পারবে না। এমন অবস্থা নতুন নয়। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দার সময়ও গ্রামীণ পরিবারগুলোর শিশুরা ডিম, দুধ ও ফলমূলের মতো খাদ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। তবে ২০২৫ সালের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে আরও গুরুতর। কারণ এবার একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, রপ্তানি হ্রাস এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

সরকারি উদ্যোগের জরুরি প্রয়োজন

এই সংকট সমাধানে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। ভারতের মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা ও মহারাষ্ট্র রাজ্যে স্কুলের শিশুদের জন্য ‘মিড-ডে মিল’ কর্মসূচির আওতায় সপ্তাহে ৩–৪ দিন ডিম দেওয়া হয়। বাংলাদেশেও ২০১৫ সালে এমন একটি প্রকল্প সীমিতভাবে চালু হয়েছিল, কিন্তু বাজেট সংকটে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার নতুন করে একটি বৃহৎ ও টেকসই কর্মসূচি প্রয়োজন, যেখানে অন্তত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য বিনামূল্যে বা ভর্তুকিমূল্যে ডিম সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

একটি ডিম মানে একটি জাতির ভবিষ্যৎ

একটি ডিম শুধুই একটি খাবার নয়—এটি একটি শিশুর সুস্থ জীবন, শিক্ষা ও বিকাশের প্রথম পদক্ষেপ। যখন একটি দেশের কোটি শিশু সপ্তাহে একটি ডিমও খেতে পারে না, তখন সেটি কেবল খাদ্য সংকট নয়, বরং একটি জাতির অর্থনৈতিক ও মানবিক ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে ওঠে। জিডিপি কমে যাওয়ার সংখ্যা দেখে আমরা আতঙ্কিত হই, কিন্তু তার প্রতিচ্ছবি যে শিশুদের খালি পেটে প্রতিদিন ফুটে উঠছে, তা অনেকেই ভুলে যাই।

এই সংকটের মোকাবিলায় চাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা, বাজেট বরাদ্দে শিশুপুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এবং একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, যা শিশুর মুখে ডিম তুলে দিতে পারবে। না হলে এই ডিমহীন ভবিষ্যৎই আমাদের জাতিকে একটি অসুস্থ, অক্ষম ও অনুন্নত জাতিতে পরিণত করবে।