চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান শুল্ক বিরতির মেয়াদ ১২ আগস্ট শেষ হতে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে কোনো বাণিজ্য চুক্তি না হলে ২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি ৪৮৮ বিলিয়ন ডলার কমে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে ‘অবজারভেটরি অফ ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটি’ (OEC)–এর নতুন এক সিমুলেটর।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া, ইউরোপের দিকে ঘুরতে পারে বাণিজ্যধারা
শুল্কবৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, খেলনা ও পোশাকের মতো পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এদিকে OEC ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে চীন তার রপ্তানি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং রাশিয়ার দিকে ঘুরিয়ে নিতে পারে। সিমুলেটর অনুযায়ী, ভিয়েতনাম ও ভারত আগামী দুই বছরে যথাক্রমে প্রায় ৩৮ ও ৪০ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত চীনা পণ্য আমদানি করতে পারে। রাশিয়াও ৩৩.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অতিরিক্ত চীনা পণ্য নিতে পারে।
চূড়ান্ত চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লিফেং নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল স্টকহোমে তৃতীয় দফা বৈঠকে বসেছে। এর আগে মে ও জুনে তারা জেনেভা ও লন্ডনে বৈঠক করেন এবং একটি প্রাথমিক চুক্তি কাঠামোতে সম্মত হন। এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, “চীনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে পারাটা আমাদের জন্য ইতিবাচক ভিত্তি তৈরি করছে।” অপরদিকে, ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেছেন, শুল্ক বিরতির মেয়াদ সম্ভবত বাড়ানো হবে এবং “চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বর্তমানে ভালো অবস্থানে আছে।”
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কবৃদ্ধি
২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর প্রথমে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা পরে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মধ্যে বেড়ে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। পরে ১২ মে ৯০ দিনের জন্য এই শুল্ক স্থগিত রাখা হয়, যদিও ১০ শতাংশের প্রাথমিক শুল্ক এখনও বহাল আছে।
চীনের সঙ্গে আলোচনার ফলাফল আগামী কয়েক বছরের বিশ্ব বাণিজ্য চিত্র ও ভোক্তামূল্যের গতিপথ নির্ধারণ করতে পারে।