০২:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ

  • Sarakhon Report
  • ০৬:০০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
  • 40

বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা।ছবি: ইউএনবি

ফরিদপুরে গত ১০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দর মণপ্রতি হাজার টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে। এদিকে, পাইকারি বাজারে দর বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর। মৌসুমে এ জেলার ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল যা থেকে ৬ লাখ ৭৭ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। মৌসুমের সময় এক থেকে দেড় হাজার টাকা মনপ্রতি দর পেয়েছিলেন চাষিরা। তখন তাদের দাবি ছিল, ‍উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দর পেলে তারা লাভবান হতে পারেন।

তবে, হঠাৎ করেই গত দশ দিনের ব্যবধানে দেড় হাজার টাকার পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা দরে, খুচরা বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি।

পেঁয়াজের এই দরবৃদ্ধির কারণ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ করে কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। পাইকাররা বলছেন, চলতি মৌসুমে জেলা চাষিরা পাট নিয়ে ব্যস্ত সময়ে পার করায় বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ করছে কম। এতেই এই পণ্যটির চাহিদার বিপরীতে সরবরাহে ঘাটতি হচ্ছে।

ফরিদপুরের কানাইপুরের ব্যবসায়ী তপন কুমার বলেন, ‘বর্তমানের বাইরের (বিদেশি) পেঁয়াজের আমদানি নেই। এ ছাড়া দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামুলক কম থাকায় চাহিদার সঙ্গে মিলছে না। এ কারণেই দর বেড়েছে।’

ফরিদপুরের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ

এক নারী পেঁযাজ কিনছেন। ছবি: ইউএনবি

কথা হয় বোয়ালমারীর পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জেলার চাষিরা এখন পাট জাগ দেওয়া, ধোয়া ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত বেশি। যে কারণে পাইকারি বাজারগুলোতে পেঁয়াজ আসছে কম।’

একই কথা বলেন সালথার সাইফুর রহমান। ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি জানান, মৌসুমের সময় চাষিরা পেঁয়াজের দর পাননি। এখন বড় বড় চাষি ছাড়া কারো হাতে পেঁয়াজ তেমন নেই; যা আছে তার বেশিরভাগই আড়তদারদের কাছে। তাই এখন দাম বাড়িয়ে লাভ করছেন আড়তদাররা।

ফরিদপুরের কানাইপুর, সালথা, বোয়ালমারী ও নগরকান্দার বাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রয় করতে দেখা যায়। পেঁয়াজের এই লাগামহীন দরে ভোক্তাদের মাঝে অসন্তুষ্টি দেখা গেছে। তাদের প্রত্যাশা, সরকার পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ফরিদপুর শহরের চকবাজারের কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহিনী সাইদা আক্তার, চাকরিজীবি রহমতউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দরে এত ব্যবধান কেন, প্রশাসনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। আমাদের মতো সাধারণ ভোক্তাদের, সীমিত আয়ের মানুষের এত দামে কাঁচা পণ্য কেনা কষ্টকর।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহরাব হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় বাজার তদারকির উদ্দেশ্যে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যদি অতিরিক্ত পেঁয়াজ মজুত করে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউএনবি নিউজ

ফরিদপুরের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ

০৬:০০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

ফরিদপুরে গত ১০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দর মণপ্রতি হাজার টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে। এদিকে, পাইকারি বাজারে দর বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর। মৌসুমে এ জেলার ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল যা থেকে ৬ লাখ ৭৭ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। মৌসুমের সময় এক থেকে দেড় হাজার টাকা মনপ্রতি দর পেয়েছিলেন চাষিরা। তখন তাদের দাবি ছিল, ‍উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দর পেলে তারা লাভবান হতে পারেন।

তবে, হঠাৎ করেই গত দশ দিনের ব্যবধানে দেড় হাজার টাকার পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা দরে, খুচরা বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি।

পেঁয়াজের এই দরবৃদ্ধির কারণ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ করে কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। পাইকাররা বলছেন, চলতি মৌসুমে জেলা চাষিরা পাট নিয়ে ব্যস্ত সময়ে পার করায় বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ করছে কম। এতেই এই পণ্যটির চাহিদার বিপরীতে সরবরাহে ঘাটতি হচ্ছে।

ফরিদপুরের কানাইপুরের ব্যবসায়ী তপন কুমার বলেন, ‘বর্তমানের বাইরের (বিদেশি) পেঁয়াজের আমদানি নেই। এ ছাড়া দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামুলক কম থাকায় চাহিদার সঙ্গে মিলছে না। এ কারণেই দর বেড়েছে।’

ফরিদপুরের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ

এক নারী পেঁযাজ কিনছেন। ছবি: ইউএনবি

কথা হয় বোয়ালমারীর পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জেলার চাষিরা এখন পাট জাগ দেওয়া, ধোয়া ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত বেশি। যে কারণে পাইকারি বাজারগুলোতে পেঁয়াজ আসছে কম।’

একই কথা বলেন সালথার সাইফুর রহমান। ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি জানান, মৌসুমের সময় চাষিরা পেঁয়াজের দর পাননি। এখন বড় বড় চাষি ছাড়া কারো হাতে পেঁয়াজ তেমন নেই; যা আছে তার বেশিরভাগই আড়তদারদের কাছে। তাই এখন দাম বাড়িয়ে লাভ করছেন আড়তদাররা।

ফরিদপুরের কানাইপুর, সালথা, বোয়ালমারী ও নগরকান্দার বাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রয় করতে দেখা যায়। পেঁয়াজের এই লাগামহীন দরে ভোক্তাদের মাঝে অসন্তুষ্টি দেখা গেছে। তাদের প্রত্যাশা, সরকার পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ফরিদপুর শহরের চকবাজারের কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহিনী সাইদা আক্তার, চাকরিজীবি রহমতউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দরে এত ব্যবধান কেন, প্রশাসনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। আমাদের মতো সাধারণ ভোক্তাদের, সীমিত আয়ের মানুষের এত দামে কাঁচা পণ্য কেনা কষ্টকর।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহরাব হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় বাজার তদারকির উদ্দেশ্যে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যদি অতিরিক্ত পেঁয়াজ মজুত করে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউএনবি নিউজ