স্থিতিশীল ভলিউম, পরিবর্তিত সরবরাহকারীর তালিকা
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কটন আমদানিকারক দেশ। ২০১৯–২০ থেকে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে কটন আমদানির ভলিউম মোটামুটি স্থিতিশীল থাকলেও, সরবরাহকারী দেশগুলোর অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে। USDA ও BTMA-এর তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ অর্থবছরে বাংলাদেশ গড়ে বছরে ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন বেলস (প্রায় ১.৫–১.৭ মিলিয়ন টন) কটন আমদানি করেছে।
২০১৯–২০ ও ২০২০–২১ অর্থবছরে আমদানি প্রায় ৭ মিলিয়ন বেলস ছিল। ২০২১–২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৭.৫ মিলিয়নে। তবে ২০২২–২৩ অর্থবছরে বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানি সংকট ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে তা কিছুটা কমে ৭.৪ মিলিয়নে নেমে আসে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে USDA পূর্বাভাস দিয়েছে, আমদানি আবারও বেড়ে ৭.৫–৮.৫ মিলিয়ন বেলসে পৌঁছাতে পারে।
ডলারের হিসাবে বাজারের আকার
OEC-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের কটন আমদানির মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের সবচেয়ে বেশি আমদানি হওয়া পণ্যের শীর্ষে রয়েছে।
শীর্ষ সরবরাহকারী দেশগুলোর অবস্থান
USDA GAIN রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১–২২ অর্থবছরে শীর্ষ সরবরাহকারীরা ছিল:
- ভারত – ৩৫%
- পশ্চিম আফ্রিকার দেশসমূহ – ৩১%
- ব্রাজিল – ১৩%
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – ৭%
২০২২–২৩ পূর্বাভাসে এই অবস্থানে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়:
- ব্রাজিল – ১৬%
- ভারত – ১২%
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – ১০%
OEC-এর ২০২৩ সালের ডেটায় মূল্যমান অনুসারে শীর্ষ পাঁচ দেশ:
ভারত – ২.১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
চীন – ২.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
পাকিস্তান – ৪৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
ব্রাজিল – ৪০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
বেনিন – ৩৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
সরবরাহের উৎসে বৈচিত্র্য
যদিও ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রধান সরবরাহকারী দেশ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশসমূহ এবং ব্রাজিলের বাজার অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে চীন ও পাকিস্তান থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কটন আমদানির প্রবণতা তৈরি হয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের কটন আমদানি বাজারে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে—
আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ওঠানামা
দেশের জ্বালানি সংকট ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি
ডলার সংকটের প্রভাব
তবে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে বিশ্ববাজারে দামের কিছুটা স্থিতি এবং চাহিদা বৃদ্ধির ফলে আমদানির ভলিউম বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত পাঁচ অর্থবছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের কটন আমদানি ভলিউম স্থিতিশীল থাকলেও সরবরাহকারী দেশের তালিকায় পরিবর্তন এসেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি, কাঁচামালের মূল্য এবং স্থানীয় শিল্পের চাহিদার ওপর নির্ভর করে আগামী বছরগুলোতে এই খাতে আরও বৈচিত্র্য আসতে পারে।