বাংলাদেশ যেমন মেলা, যাত্রাপালা, জারি, সারি গান ও সার্কাস উঠিয়া গিয়াছে, তেমনই পুতুল নাচও উঠিয়া গিয়াছে। উঠিয়া যাইবার পরেও শখে হোক, নেশায় হোক বা অন্য কোনো কারণে হোক, দু’একটি পুতুল নাচের দল কেন যে টিকিয়া রহিয়াছে, তাহা কেহই বলিতে পারে না।
এই পুতুল নাচ টিকিয়া থাকিবার গবেষণায় না যাইয়া বরং পুতুলের সুতাগুলি কেমন করিয়া অদৃশ্য থাকে, পুতুল নাচের কথা মনে হইলেই তাহাই চিন্তার সামনে আগেই আসিয়া দাঁড়ায়। ভাবিতে অবাক লাগে, কে প্রথম পুতুল নাচটি আবিষ্কার করিয়াছিল? যাহার মূল বিষয়বস্তু ছিল একটি সমগ্র পালা অনুষ্ঠিত হইবে অদৃশ্য সুতার টানে। যাহার বা যাহাদের হাতে সুতা, তাহারাই রাজা-রানী হইতে শুরু করিয়া, বীর, মহাবীর, চাকর, নোকর সকলকে চালিত করিবে।

সুতার টানে মহাবীর যুদ্ধ করিবেন, কখনো বুকে ছুরি মারিবেন, কখনো পিঠে মারিবেন, কখনো বা বন্দি করিবেন, কখনো বা রাজপ্রাসাদকে শৌচাগার বানাবেন। অথচ যাহারা এতকিছু করিতেছেন, তাহারা পোশাকের অন্তরালে কেবল পুতুল মাত্র। আবার সুতাই সব, আবার সুতাই কেহই নয়। যিনি বা যাহাদের হাতে সুতা, তিনি-ই সব। তিনি ইচ্ছা করিলে সকল পুতুলকে উর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী করিয়া মুহূর্তে ফেলিয়া দিতে পারেন। আবার পর্দা টানিয়া দিয়া পুতুল নাচের ইতি ঘটাইতে পারেন।
খেলাটি বা পালাটি যাহাই হোক না কেন, ভাবিতে ভাবিতে বিস্মিত হইতে হয়—এই পৃথিবীর কোনো প্রভাতে এই পুতুল নাচের শুরু হইয়াছিল! আবার নানাজনের নানাভাবে কেনই বা বারবার পুতুল নাচের ইতিকথা লিখিতে হয়।
Sarakhon Report 


















