বাংলাদেশের বাজারে জনপ্রিয় ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মাছগুলোর মধ্যে রূপচাঁদা অন্যতম। এই সামুদ্রিক মাছ শুধু সুস্বাদু নয়, এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা বিশেষভাবে ৫০ বছরের পর নারীদের জন্য উপকারী। এই বয়সে শরীরে নানা শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে—হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করে, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে পাশাপাশি হরমোনের ওঠানামার কারণে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে যায়।
হাড় ও অস্থি মজবুত রাখতে
রূপচাঁদা মাছ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। নারীদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড় ভেঙে যাওয়া বা অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেশি দেখা দেয়। নিয়মিত রূপচাঁদা খেলে ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়ে এবং হাড় শক্ত থাকে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক
এই মাছের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সহায়তা করে। ৫০ বছরের পর হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, বিশেষ করে মেনোপজের পরে। রূপচাঁদা খেলে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে এবং হৃদ্রোগজনিত আক্রমণ (হার্ট অ্যাটাক) বা স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে।
মস্তিষ্ক ও নার্ভ শক্ত রাখতে
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া বা নার্ভজনিত সমস্যা দেখা দেয়। রূপচাঁদা নিয়মিত খেলে মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে এবং স্নায়বিক দুর্বলতা কমে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
রূপচাঁদা মাছের ভিটামিন এ ও জিঙ্ক শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ বয়সে শরীর সহজেই সংক্রমণ বা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তাই রোগ প্রতিরোধে এই মাছ কার্যকর।
ত্বক ও চোখের যত্নে
বয়স বাড়লে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, চোখেও সমস্যা দেখা দেয়। রূপচাঁদায় থাকা ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে এবং দৃষ্টি ভালো রাখতে সহায়তা করে।
একটি আদর্শ খাদ্য
রূপচাঁদা মাছ শুধু সুস্বাদু নয়, বরং ৫০ বছরের পর নারীদের জন্য এটি একটি আদর্শ খাদ্য। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রূপচাঁদা যুক্ত করলে হাড় মজবুত থাকে, হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে, মস্তিষ্ক সচল থাকে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।