হলুদকে বাংলা সংস্কৃতিতে ‘সৌন্দর্যের ভেষজ’ বলা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই এটি রান্নার উপাদান ছাড়াও ত্বকের যত্ন ও ওষুধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে নারীদের ত্বকের সৌন্দর্য ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে হলুদ একটি কার্যকর ভেষজ।
নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উপকারিতা
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন (Curcumin) নামক উপাদান ত্বকের কোষে জমে থাকা ময়লা ও মৃত কোষ দূর করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক স্বাভাবিকভাবেই উজ্জ্বল হয় এবং ত্বকের গঠন উন্নত হয়।
বয়সের ছাপ কমায়
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে হলুদ ত্বকের ভাঁজ, ঝুলে যাওয়া ও বয়সজনিত কালো দাগ হ্রাস করে। নারীরা যদি নিয়মিত ফেসপ্যাক, বা ত্বকের যত্নে হলুদ ব্যবহার করেন, তবে দীর্ঘদিন ত্বককে তরতাজা রাখা সম্ভব।
প্রাকৃতিক আর্দ্রতা রক্ষাকারী
হলুদ ত্বকের প্রাকৃতিক তেলকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে শুষ্ক বা তৈলাক্ত দুই ধরনের ত্বকেই এটি উপকারী।
ত্বকের রোগ প্রতিরোধে হলুদ
হলুদ শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, বরং বিভিন্ন ত্বকের রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
ব্রণ ও ফুসকুড়ি
হলুদের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করে। নিয়মিত হলুদ মেশানো ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ব্রণ কমে যায় এবং নতুন ব্রণ ওঠা প্রতিরোধ হয়।
একজিমা ও সোরিয়াসিস
ত্বকের দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত রোগ যেমন একজিমা বা সোরিয়াসিসের ক্ষেত্রে হলুদ কার্যকর। এটি প্রদাহ ও চুলকানি কমিয়ে ত্বকের ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে।
ফাঙ্গাল সংক্রমণ
পায়ের ফাঙ্গাস বা অন্যান্য ছত্রাকজনিত সংক্রমণে হলুদ ভালো কাজ করে। হলুদ গুঁড়া, সামান্য পানি বা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।
ত্বকের অ্যালার্জি ও লালচে ভাব
হলুদ ত্বকের অ্যালার্জি বা হঠাৎ হওয়া লালচে ভাব ও ফোলাভাব কমায়।
ব্যবহার পদ্ধতি
- • ফেসপ্যাক:হলুদ গুঁড়া, কাঁচা দুধ ও মধু মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করা যায়।
- • ব্রণ প্রতিরোধে:হলুদ ও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে সরাসরি ব্রণের ওপর লাগানো যায়।
- • ফাঙ্গাসের চিকিৎসায়:হলুদ ও নারকেল তেল মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হয়।
সতর্কতা
- • অতিরিক্ত হলুদ ব্যবহার করলে ত্বক সাময়িকভাবে হলুদাভ হয়ে যেতে পারে।
- • কারও কারও ত্বকে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে,তাই আগে সামান্য অংশে ব্যবহার করে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
নিয়মিত ও সঠিকভাবে ব্যবহার করলে হলুদ নারীদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, বয়সের ছাপ হ্রাস, ব্রণ প্রতিরোধ এবং একজিমা–সোরিয়াসিসসহ নানা ত্বকের সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান দিতে পারে।