১১:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত : যুক্তিসংগত শাস্তির বিধান প্রণয়নে হাইকোর্টের রুল চাট্টাল নদী: উৎপত্তি, ভূগোল ও মানুষের জীবন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নবগঠিত কমিটি অনুমোদন জুলাই ২০২৪ বিদ্রোহ–সংশ্লিষ্ট ১০৬ মামলায় চার্জশিট দাখিল, ২০৮৩ জনের অব্যাহতির সুপারিশ চট্টগ্রামে রোড ক্র্যাশে নিহত–আহতদের স্মরণে মানববন্ধন ভোট ছিনতাইয়ের যে কোনো চেষ্টা ব্যর্থ হবে: জামায়াত নেতা বাংলাদেশে জননিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ও কমিউনিটি-ভিত্তিক উদ্যোগের তাগিদ সাম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার ক্ষমতায় এলে মেগাপ্রকল্প নয়, তৃণমূলে বিনিয়োগেই অগ্রাধিকার দেবে বিএনপি ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, এক দিনে হাসপাতালে ৫৬৫

ট্রাম্পের শুল্ক ‘অবৈধ’, ফেডারেল কোর্টের রায়

আদালতের রায়: সীমাহীন ক্ষমতা নয়

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট আপিল আদালত রায়ে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (IEEPA) ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। আদালত বলেছে, কংগ্রেস কখনোই প্রেসিডেন্টকে সীমাহীনভাবে শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দিতে চায়নি।

শুক্রবার দেওয়া এই রায়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের আরোপিত প্রায় সব শুল্কের আইনগত ভিত্তি নেই। তবে আদালত তাৎক্ষণিকভাবে শুল্ক বাতিল করেনি; প্রশাসনকে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সময় দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের শুল্ক ও তাদের বিস্তার

২০২৫ সালের ২ এপ্রিল ট্রাম্প ‘লিবারেশন ডে’ ঘোষণা করে প্রায় সব দেশের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তাদের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ‘পারস্পরিক শুল্ক’।
অন্য প্রায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ ‘মূল শুল্ক’।
পরে তিনি শুল্কহার পরিবর্তন করেন। ভারতের মতো কিছু দেশের ওপর আবার ভিন্ন কারণে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়।

ভিন্নমত বিচারপতিদের মন্তব্য

যেসব বিচারপতি সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ের সঙ্গে একমত নন, তারা বলেন—১৯৭৭ সালের আইন প্রেসিডেন্টকে জরুরি সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে এবং এটি সংবিধানবিরোধী নয়। সুপ্রিম কোর্ট অতীতে প্রেসিডেন্টকে সীমিত আকারে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা দিয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া

রায়ের পর ট্রাম্প ও তার প্রশাসন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ট্রাম্প নিজে বলেছেন:
“যদি এই রায় বহাল থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের শুল্ক তুলে নিলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে। আমরা আর বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি ও অন্যায্য শুল্ক সহ্য করব না।”

তিনি আরও জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তার প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে লড়বে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই বলেন, ট্রাম্প আইন মেনেই কাজ করেছেন এবং তারা শেষ পর্যন্ত জয়লাভে আশাবাদী।

আর্থিক প্রভাব ও সরকারের যুক্তি

বর্তমানে শুল্ক থেকে সরকারের রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ১৫৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
বিচার বিভাগ সতর্ক করেছে, শুল্ক প্রত্যাহার হলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য “আর্থিক বিপর্যয়” ঘটতে পারে।
অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি অভিযোগ করেছেন, আদালত প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভূমিকায় হস্তক্ষেপ করছে। তিনি আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফেডারেল আদালতের এই রায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে বড় আঘাত হেনেছে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সীমাহীন ক্ষমতা নিয়ে ইচ্ছেমতো শুল্ক আরোপ করতে পারেন না। তবে শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল হয়নি, ফলে চূড়ান্ত লড়াই হবে সুপ্রিম কোর্টে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত : যুক্তিসংগত শাস্তির বিধান প্রণয়নে হাইকোর্টের রুল

ট্রাম্পের শুল্ক ‘অবৈধ’, ফেডারেল কোর্টের রায়

১১:১৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫

আদালতের রায়: সীমাহীন ক্ষমতা নয়

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট আপিল আদালত রায়ে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (IEEPA) ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। আদালত বলেছে, কংগ্রেস কখনোই প্রেসিডেন্টকে সীমাহীনভাবে শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দিতে চায়নি।

শুক্রবার দেওয়া এই রায়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের আরোপিত প্রায় সব শুল্কের আইনগত ভিত্তি নেই। তবে আদালত তাৎক্ষণিকভাবে শুল্ক বাতিল করেনি; প্রশাসনকে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সময় দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের শুল্ক ও তাদের বিস্তার

২০২৫ সালের ২ এপ্রিল ট্রাম্প ‘লিবারেশন ডে’ ঘোষণা করে প্রায় সব দেশের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তাদের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ‘পারস্পরিক শুল্ক’।
অন্য প্রায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ ‘মূল শুল্ক’।
পরে তিনি শুল্কহার পরিবর্তন করেন। ভারতের মতো কিছু দেশের ওপর আবার ভিন্ন কারণে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়।

ভিন্নমত বিচারপতিদের মন্তব্য

যেসব বিচারপতি সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ের সঙ্গে একমত নন, তারা বলেন—১৯৭৭ সালের আইন প্রেসিডেন্টকে জরুরি সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে এবং এটি সংবিধানবিরোধী নয়। সুপ্রিম কোর্ট অতীতে প্রেসিডেন্টকে সীমিত আকারে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা দিয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া

রায়ের পর ট্রাম্প ও তার প্রশাসন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ট্রাম্প নিজে বলেছেন:
“যদি এই রায় বহাল থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের শুল্ক তুলে নিলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে। আমরা আর বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি ও অন্যায্য শুল্ক সহ্য করব না।”

তিনি আরও জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তার প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে লড়বে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই বলেন, ট্রাম্প আইন মেনেই কাজ করেছেন এবং তারা শেষ পর্যন্ত জয়লাভে আশাবাদী।

আর্থিক প্রভাব ও সরকারের যুক্তি

বর্তমানে শুল্ক থেকে সরকারের রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ১৫৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
বিচার বিভাগ সতর্ক করেছে, শুল্ক প্রত্যাহার হলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য “আর্থিক বিপর্যয়” ঘটতে পারে।
অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি অভিযোগ করেছেন, আদালত প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভূমিকায় হস্তক্ষেপ করছে। তিনি আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফেডারেল আদালতের এই রায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে বড় আঘাত হেনেছে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সীমাহীন ক্ষমতা নিয়ে ইচ্ছেমতো শুল্ক আরোপ করতে পারেন না। তবে শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল হয়নি, ফলে চূড়ান্ত লড়াই হবে সুপ্রিম কোর্টে।