০১:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
একাত্তরেও উৎসবের রাজকীয় গ্ল্যামার, লাল শাড়িতে নতুন সংজ্ঞা রচনা রেখার ইউক্রেনের দাবি: রাশিয়ার ওরেনবুর্গে বড় গ্যাস প্রক্রিয়াজাত কারখানায় ড্রোন হামলা দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে বাংলাদেশ, ঢাকাসহ সারাদেশে বেড়েছে শীতের দাপট জিয়ার কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন তারেক রহমানের পক্ষে সাভারে শ্রদ্ধা জানাল বিএনপি প্রতিনিধিদল বিশ্ববাজারে পৌঁছাতে ভার্চুয়াল আইডলে বাজি কেপপ সংস্থার উষ্ণ শীত জাপানের ‘স্নো মাঙ্কি’দের আচরণ বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সরবরাহ ঝুঁকি বাড়ায় তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী

ফ্রান্সে আবারও রাজনৈতিক সংকট মৌসুম

ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, কারণ তিনি পার্লামেন্টে আস্থাভোটে ব্যাপক ব্যবধানে হেরে যান—তার বিপক্ষে ভোট পড়ে ৩৬৪, পক্ষে ১৯৪। এই আস্থাভোটের তাৎক্ষণিক কারণ ছিল বাজেটে প্রস্তাবিত কৃচ্ছ্রসাধনমূলক ব্যবস্থা, বিশেষত কয়েকটি ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত, যা শেষ পর্যন্ত তার পতন ডেকে আনে। তবে ফ্রান্সের সমস্যাগুলো কেবল কৃচ্ছ্রসাধন বা ছুটির তালিকা ছোট হওয়া পর্যন্ত সীমিত নয়। দেশটির রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫.৮ শতাংশ—ইউরোজোনে গ্রিস ও ইতালির পর তৃতীয় সর্বোচ্চ। সরকারি ঋণ জিডিপির ১১৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এই দুই সংকট মোকাবিলায় বায়রু প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় কমানোর প্রস্তাব দেন। জনগণ এর বিরোধিতা করেছে, আর শিগগিরই ব্যাপক সড়ক বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, যার জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে, তার সামনে তিনটি পথ ছিল। প্রথমত, সংসদ ভেঙে দ্রুত নির্বাচন ডাকা—যা তিনি ২০২৪ সালের জুনে করেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো সমাধান আসেনি, বরং রাজনৈতিকভাবে তাকে বড় মূল্য দিতে হয়েছে। বর্তমান বিভক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরেকটি নির্বাচন সংকট প্রশমিত করবে—এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। দ্বিতীয়ত, তিনি নিজেই পদত্যাগ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডেকে দিতে পারতেন, কিন্তু তা তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায় না। ফলে তার সামনে একমাত্র বাস্তবসম্মত বিকল্প ছিল নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা। শেষ পর্যন্ত তিনি তাই করেছেন। মঙ্গলবার তিনি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন। তবে সংসদে অচলাবস্থা চলতে থাকায় লেকর্নু, আগের দুই প্রধানমন্ত্রীর মতো, টিকে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

ফ্রান্সের পূর্ণমাত্রার এই রাজনৈতিক সংকট একেবারে অনুপযুক্ত সময়ে এসে হাজির হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি নিজের সামর্থ্যের বাইরে ব্যয় করেছে, আর এখন রাজস্ব ঘাটতি ও ঋণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফরাসিরা, স্বভাবসুলভভাবে, কৃচ্ছ্রসাধনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে—যা বায়রু বার্ষিক বাজেটের অংশ হিসেবে প্রস্তাব করেছিলেন। “সবকিছু অবরোধ করো” নামে ঘোষিত এই আন্দোলন দ্রুত আরও বড় আকার নিতে পারে। বিশেষত, ম্যাক্রোঁর প্রস্তাবিত ইউক্রেনে “ইউরোপীয় আশ্বাস বাহিনী” গঠনের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়তে পারে—যেখানে ফরাসি সেনাদের পাঠানো হবে জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগেই সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনে কোনো পশ্চিমা সেনা পাঠানো হলে তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নিতে পারে এক লাখেরও বেশি মানুষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, আইন ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবুও সহিংসতার আশঙ্কা প্রবল।

ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ফ্রান্সের সংকট ঘটছে এমন সময়ে, যখন গোটা ইউরোপ নানা ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন যেভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছিলেন, সেটি এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায়। ভন ডার লেয়েনও চাপের মুখে—বামপন্থীরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চাইছে, সবুজ চুক্তি ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে।

এমন সময়ে, যখন ইউক্রেনের পক্ষে ইউরোপের ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা, বাস্তবে তার উল্টোটা ঘটছে। ফ্রান্স নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকায় জার্মানিকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে—ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র বা বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে। চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক উত্তপ্ত—ইইউ ও চীন উভয়েই একে অপরের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিক গাড়ি ও শূকর মাংস রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করেছে, ট্রাম্প আমলের নীতির অনুকরণে। এভাবে নানা অস্তিত্বগত সংকটের মুখে ইউরোপে ফ্রান্স কার্যত অনুপস্থিত।

ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ তাই ম্লান। ম্যাক্রোঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার গভীর সংকটে। এই সংকট চলতে থাকলে তিনি ২০২৭ সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত অবশিষ্ট সময়ে কার্যত ক্ষমতাহীন প্রেসিডেন্টে পরিণত হতে পারেন।

এদিকে, চরম-ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি এর পুরো ফায়দা নিচ্ছে। এর নেতা মারিন ল্য পেন হয়তো ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তবে তার উত্তরসূরি জর্ডান বার্দেলার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। ফ্রান্সে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—যদি ইতালি চরম-ডানপন্থী নেতা জর্জিয়া মেলোনির অধীনে বেশ ভালোভাবে চলতে পারে, তবে ফ্রান্স কেন ন্যাশনাল র‍্যালির অধীনে পারবে না? যদিও এতে দুই দেশের মৌলিক পার্থক্যগুলো উপেক্ষা করা হচ্ছে।

যখন যুক্তরাষ্ট্র অস্থিরতার মধ্যে, ইউরোপ সংকটে, জাপান রাজনৈতিক অস্থিরতায় এবং কানাডা ও যুক্তরাজ্যের মতো অন্যান্য জি-৭ দেশ সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি, তখন যুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রশ্ন ওঠে—এটি কি পশ্চিমাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘোরার মুহূর্ত?

যেভাবেই হোক, আমরা স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি এক নতুন বিশ্বব্যবস্থার সূচনা। তবে সমস্যাটা হলো—এই নতুন বিশ্বব্যবস্থা হবে খণ্ডিত, মেরুকৃত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

লেখক: মোহন কুমার ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত (ফ্রান্স) এবং বর্তমানে ওপি জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন/প্রফেসর।

জনপ্রিয় সংবাদ

একাত্তরেও উৎসবের রাজকীয় গ্ল্যামার, লাল শাড়িতে নতুন সংজ্ঞা রচনা রেখার

ফ্রান্সে আবারও রাজনৈতিক সংকট মৌসুম

১২:৪৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, কারণ তিনি পার্লামেন্টে আস্থাভোটে ব্যাপক ব্যবধানে হেরে যান—তার বিপক্ষে ভোট পড়ে ৩৬৪, পক্ষে ১৯৪। এই আস্থাভোটের তাৎক্ষণিক কারণ ছিল বাজেটে প্রস্তাবিত কৃচ্ছ্রসাধনমূলক ব্যবস্থা, বিশেষত কয়েকটি ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত, যা শেষ পর্যন্ত তার পতন ডেকে আনে। তবে ফ্রান্সের সমস্যাগুলো কেবল কৃচ্ছ্রসাধন বা ছুটির তালিকা ছোট হওয়া পর্যন্ত সীমিত নয়। দেশটির রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫.৮ শতাংশ—ইউরোজোনে গ্রিস ও ইতালির পর তৃতীয় সর্বোচ্চ। সরকারি ঋণ জিডিপির ১১৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এই দুই সংকট মোকাবিলায় বায়রু প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় কমানোর প্রস্তাব দেন। জনগণ এর বিরোধিতা করেছে, আর শিগগিরই ব্যাপক সড়ক বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, যার জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে, তার সামনে তিনটি পথ ছিল। প্রথমত, সংসদ ভেঙে দ্রুত নির্বাচন ডাকা—যা তিনি ২০২৪ সালের জুনে করেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো সমাধান আসেনি, বরং রাজনৈতিকভাবে তাকে বড় মূল্য দিতে হয়েছে। বর্তমান বিভক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরেকটি নির্বাচন সংকট প্রশমিত করবে—এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। দ্বিতীয়ত, তিনি নিজেই পদত্যাগ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডেকে দিতে পারতেন, কিন্তু তা তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায় না। ফলে তার সামনে একমাত্র বাস্তবসম্মত বিকল্প ছিল নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা। শেষ পর্যন্ত তিনি তাই করেছেন। মঙ্গলবার তিনি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন। তবে সংসদে অচলাবস্থা চলতে থাকায় লেকর্নু, আগের দুই প্রধানমন্ত্রীর মতো, টিকে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

ফ্রান্সের পূর্ণমাত্রার এই রাজনৈতিক সংকট একেবারে অনুপযুক্ত সময়ে এসে হাজির হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি নিজের সামর্থ্যের বাইরে ব্যয় করেছে, আর এখন রাজস্ব ঘাটতি ও ঋণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফরাসিরা, স্বভাবসুলভভাবে, কৃচ্ছ্রসাধনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে—যা বায়রু বার্ষিক বাজেটের অংশ হিসেবে প্রস্তাব করেছিলেন। “সবকিছু অবরোধ করো” নামে ঘোষিত এই আন্দোলন দ্রুত আরও বড় আকার নিতে পারে। বিশেষত, ম্যাক্রোঁর প্রস্তাবিত ইউক্রেনে “ইউরোপীয় আশ্বাস বাহিনী” গঠনের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়তে পারে—যেখানে ফরাসি সেনাদের পাঠানো হবে জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগেই সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনে কোনো পশ্চিমা সেনা পাঠানো হলে তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নিতে পারে এক লাখেরও বেশি মানুষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, আইন ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবুও সহিংসতার আশঙ্কা প্রবল।

ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ফ্রান্সের সংকট ঘটছে এমন সময়ে, যখন গোটা ইউরোপ নানা ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন যেভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছিলেন, সেটি এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায়। ভন ডার লেয়েনও চাপের মুখে—বামপন্থীরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চাইছে, সবুজ চুক্তি ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে।

এমন সময়ে, যখন ইউক্রেনের পক্ষে ইউরোপের ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা, বাস্তবে তার উল্টোটা ঘটছে। ফ্রান্স নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকায় জার্মানিকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে—ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র বা বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে। চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক উত্তপ্ত—ইইউ ও চীন উভয়েই একে অপরের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিক গাড়ি ও শূকর মাংস রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করেছে, ট্রাম্প আমলের নীতির অনুকরণে। এভাবে নানা অস্তিত্বগত সংকটের মুখে ইউরোপে ফ্রান্স কার্যত অনুপস্থিত।

ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ তাই ম্লান। ম্যাক্রোঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার গভীর সংকটে। এই সংকট চলতে থাকলে তিনি ২০২৭ সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত অবশিষ্ট সময়ে কার্যত ক্ষমতাহীন প্রেসিডেন্টে পরিণত হতে পারেন।

এদিকে, চরম-ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি এর পুরো ফায়দা নিচ্ছে। এর নেতা মারিন ল্য পেন হয়তো ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তবে তার উত্তরসূরি জর্ডান বার্দেলার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। ফ্রান্সে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—যদি ইতালি চরম-ডানপন্থী নেতা জর্জিয়া মেলোনির অধীনে বেশ ভালোভাবে চলতে পারে, তবে ফ্রান্স কেন ন্যাশনাল র‍্যালির অধীনে পারবে না? যদিও এতে দুই দেশের মৌলিক পার্থক্যগুলো উপেক্ষা করা হচ্ছে।

যখন যুক্তরাষ্ট্র অস্থিরতার মধ্যে, ইউরোপ সংকটে, জাপান রাজনৈতিক অস্থিরতায় এবং কানাডা ও যুক্তরাজ্যের মতো অন্যান্য জি-৭ দেশ সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি, তখন যুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রশ্ন ওঠে—এটি কি পশ্চিমাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘোরার মুহূর্ত?

যেভাবেই হোক, আমরা স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি এক নতুন বিশ্বব্যবস্থার সূচনা। তবে সমস্যাটা হলো—এই নতুন বিশ্বব্যবস্থা হবে খণ্ডিত, মেরুকৃত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

লেখক: মোহন কুমার ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত (ফ্রান্স) এবং বর্তমানে ওপি জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন/প্রফেসর।