১২:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত মার্ক উড আশ্বাস দিলেন, অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ার কটাক্ষ সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসী ইংল্যান্ড দল তাপ থেরাপিতে রক্তচাপ কমানোর আশার আলো: নতুন গবেষণায় চমকপ্রদ ফলাফল জাকার্তার মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: আতঙ্কে শহর, আহত ৫৫ জন গাজায় বর্জ্য সংকট: দূষণে ডুবে স্বাস্থ্য বিপর্যয় তানজানিয়ায় রক্তে রাঙানো দমন-পীড়ন: এক ভয়াবহ নতুন বাস্তবতা ভারতের অদ্ভুত স্থিতিশীলতা একক জীবন: বৈশ্বিক এককতা বৃদ্ধির কারণ এবং প্রভাব স্ট্র্যাটেজিক অজ্ঞতা: ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভ্রান্তি মানসিক স্বাস্থ্য: আমেরিকার মডেল মোবাইল সংকট সেবার উত্থান ও পতন

গভীর সমুদ্রের নতুন অতিথি, দানব নয় এক কোমল প্রাণী

গভীর সমুদ্রের জীবনের লড়াই

সমুদ্রের অতল গহ্বরে টিকে থাকতে প্রাণীদের প্রয়োজন হয় বিশেষ অভিযোজনের। এদের দেহ জেলির মতো নরম, যাতে ভয়াবহ চাপ সহ্য করা যায়। আলো তৈরি করার ক্ষমতা (বায়োলুমিনেসেন্স) তাদের পথ দেখায়, আর স্বচ্ছ বর্ণ তাদের অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে থাকতে সাহায্য করে। এসব মিলিয়ে গভীর সমুদ্রের প্রাণীগুলো প্রায়ই ভিনগ্রহের জীবের মতো দেখতে লাগে।

নতুন প্রজাতি: বাম্পি স্নেইলফিশ

তবে সম্প্রতি আবিষ্কৃত গভীর সমুদ্রের মাছ ‘বাম্পি স্নেইলফিশ’ দেখিয়ে দিয়েছে যে অতল জগতের সব প্রাণীই ভীতিকর নয়। মার্কিন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ম্যাকেনজি গেরিঙ্গার বলেন, “এটা বেশ আদুরে,” যা গভীর সমুদ্রের প্রাণীদের ‘দানব’ বলে প্রচলিত ধারণার বিপরীত।

ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে অভিযানের সাফল্য

মনটেরে বে অ্যাকুয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল থেকে ১০ হাজার ফুট (প্রায় ৩ হাজার মিটার) গভীর সমুদ্র থেকে তিনটি নতুন স্নেইলফিশ প্রজাতি পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো বাম্পি স্নেইলফিশ। গেরিঙ্গার ও তার গবেষণা দল এসব নমুনা পরীক্ষা করে ফলাফল প্রকাশ করেছেন বৈজ্ঞানিক সাময়িকী ‘ইকথিওলজি অ্যান্ড হারপেটোলজি’–এ।

গভীর সমুদ্র: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আবাসভূমি

গভীর সমুদ্র পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আবাসভূমি, যা সমুদ্রতলের ৮০ শতাংশেরও বেশি অংশ জুড়ে বিস্তৃত এবং সমুদ্রের বাকি অংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। স্নেইলফিশ বা লিপারিড মাছ লবণাক্ত পানির ছোট প্রজাতি, যাদের পাওয়া যায় জোয়ারভাটা অঞ্চলের অগভীর জলে থেকে শুরু করে গভীর অতল গহ্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে মারিয়ানা স্নেইলফিশ সবচেয়ে গভীরে বসবাসকারী মাছ হিসেবে রেকর্ড গড়েছে—যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭ হাজার ফুট নিচে মারিয়ানা ট্রেঞ্চে বেঁচে থাকে।

স্নেইলফিশ পরিবারের বৈশিষ্ট্য

স্নেইলফিশ পরিবারে প্রায় ৪৫০টি প্রজাতি আছে, যাদের অনেকগুলোই গত দুই দশকে আবিষ্কৃত হয়েছে। এদের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে আঁশবিহীন দেহ এবং পেটের অংশে থাকা একটি চাকতির মতো অঙ্গ, যা অগভীর জলের স্নেইলফিশকে পাথর কিংবা বড় মাছের গায়ে আটকে থাকতে সাহায্য করে।

কোমল চেহারা, কঠিন পরিবেশে টিকে থাকা

গেরিঙ্গার মনে করেন, একটি এত কোমল চেহারার প্রাণী যে এত কঠিন পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে, সেটিই আসলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। তার মতে, এসব স্নেইলফিশ দেখায় প্রকৃতির অভিযোজন ক্ষমতা কতটা বিস্ময়কর এবং রোমাঞ্চকর হতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত

গভীর সমুদ্রের নতুন অতিথি, দানব নয় এক কোমল প্রাণী

০৪:০০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গভীর সমুদ্রের জীবনের লড়াই

সমুদ্রের অতল গহ্বরে টিকে থাকতে প্রাণীদের প্রয়োজন হয় বিশেষ অভিযোজনের। এদের দেহ জেলির মতো নরম, যাতে ভয়াবহ চাপ সহ্য করা যায়। আলো তৈরি করার ক্ষমতা (বায়োলুমিনেসেন্স) তাদের পথ দেখায়, আর স্বচ্ছ বর্ণ তাদের অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে থাকতে সাহায্য করে। এসব মিলিয়ে গভীর সমুদ্রের প্রাণীগুলো প্রায়ই ভিনগ্রহের জীবের মতো দেখতে লাগে।

নতুন প্রজাতি: বাম্পি স্নেইলফিশ

তবে সম্প্রতি আবিষ্কৃত গভীর সমুদ্রের মাছ ‘বাম্পি স্নেইলফিশ’ দেখিয়ে দিয়েছে যে অতল জগতের সব প্রাণীই ভীতিকর নয়। মার্কিন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ম্যাকেনজি গেরিঙ্গার বলেন, “এটা বেশ আদুরে,” যা গভীর সমুদ্রের প্রাণীদের ‘দানব’ বলে প্রচলিত ধারণার বিপরীত।

ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে অভিযানের সাফল্য

মনটেরে বে অ্যাকুয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল থেকে ১০ হাজার ফুট (প্রায় ৩ হাজার মিটার) গভীর সমুদ্র থেকে তিনটি নতুন স্নেইলফিশ প্রজাতি পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো বাম্পি স্নেইলফিশ। গেরিঙ্গার ও তার গবেষণা দল এসব নমুনা পরীক্ষা করে ফলাফল প্রকাশ করেছেন বৈজ্ঞানিক সাময়িকী ‘ইকথিওলজি অ্যান্ড হারপেটোলজি’–এ।

গভীর সমুদ্র: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আবাসভূমি

গভীর সমুদ্র পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আবাসভূমি, যা সমুদ্রতলের ৮০ শতাংশেরও বেশি অংশ জুড়ে বিস্তৃত এবং সমুদ্রের বাকি অংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। স্নেইলফিশ বা লিপারিড মাছ লবণাক্ত পানির ছোট প্রজাতি, যাদের পাওয়া যায় জোয়ারভাটা অঞ্চলের অগভীর জলে থেকে শুরু করে গভীর অতল গহ্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে মারিয়ানা স্নেইলফিশ সবচেয়ে গভীরে বসবাসকারী মাছ হিসেবে রেকর্ড গড়েছে—যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭ হাজার ফুট নিচে মারিয়ানা ট্রেঞ্চে বেঁচে থাকে।

স্নেইলফিশ পরিবারের বৈশিষ্ট্য

স্নেইলফিশ পরিবারে প্রায় ৪৫০টি প্রজাতি আছে, যাদের অনেকগুলোই গত দুই দশকে আবিষ্কৃত হয়েছে। এদের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে আঁশবিহীন দেহ এবং পেটের অংশে থাকা একটি চাকতির মতো অঙ্গ, যা অগভীর জলের স্নেইলফিশকে পাথর কিংবা বড় মাছের গায়ে আটকে থাকতে সাহায্য করে।

কোমল চেহারা, কঠিন পরিবেশে টিকে থাকা

গেরিঙ্গার মনে করেন, একটি এত কোমল চেহারার প্রাণী যে এত কঠিন পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে, সেটিই আসলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। তার মতে, এসব স্নেইলফিশ দেখায় প্রকৃতির অভিযোজন ক্ষমতা কতটা বিস্ময়কর এবং রোমাঞ্চকর হতে পারে।