সরকারের প্রতি জরুরি আহ্বান
বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের এক জোট শনিবার সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, অবিলম্বে তাদের ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। তারা বলেন, এ দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হলে প্রবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত হবে।
প্রবাসীদের অর্থনীতিতে অবদান
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। ইউরোপ, ইতালি, সিঙ্গাপুর ও গ্রিসে অবস্থানরত ব্যবসায়ী ও সংগঠকরা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। তারা জানান, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। এই অর্থ দেশের আমদানি ব্যয়ের প্রায় ৪৫ শতাংশ কভার করেছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গঠনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।

ঘাম ও রক্তে অর্জিত সমৃদ্ধি
প্রবাসী নেতারা বলেন, দেশের উন্নয়নের পথে প্রবাসীরা ঘাম ও রক্ত ঝরিয়ে অবদান রেখেছেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর তাদেরকে অবহেলা, হয়রানি ও জটিল আমলাতান্ত্রিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়—যা লজ্জাজনক এবং আর সহ্য করা যায় না।
সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা
তারা আরও বলেন, প্রবাসীরা শুধু পরিবারকে সহায়তা করছেন না, বরং বিনিয়োগ, সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নেও অবদান রাখছেন। অথচ তারা এবং তাদের পরিবার সঠিক প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা পান না—বিশেষ করে পাসপোর্ট, কাগজপত্র, মরদেহ ফেরত আনা ও সম্পত্তি সুরক্ষার ক্ষেত্রে।
সতর্কবার্তা
বক্তারা সতর্ক করে বলেন, এসব সমস্যা সমাধান না করলে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যেতে পারে এবং জাতীয় অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে।
মূল দাবিগুলো
অভিবাসী শ্রমিকদের উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
- প্রতিটি বাংলাদেশি দূতাবাসে ২৪ ঘণ্টার জরুরি হটলাইন ও হেল্পডেস্ক স্থাপন
- প্রবাসীদের বিনিয়োগে অন্তত ১০ বছরের করমুক্ত সুবিধা
- দ্রুত পাসপোর্ট নবায়ন ও বিদেশে সনদ প্রদান
- মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকদের মরদেহ ফেরানোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন
- দূতাবাসের কাজে রাজনৈতিক প্রভাব ও দালালচক্রের হস্তক্ষেপ বন্ধ
- দেশের প্রতিটি জেলায় অভিবাসী সেবা কেন্দ্র স্থাপন
- রেমিট্যান্সে ন্যূনতম ৫ শতাংশ সরকারি প্রণোদনা
- প্রবাসীদের সম্পত্তি সুরক্ষায় বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠন
- প্রবাসী পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যবীমা নিশ্চিত করা
- বিমানবন্দরে এনআরবি (NRB) দের জন্য ফাস্ট-ট্র্যাক ইমিগ্রেশন কাউন্টার চালু

পুনর্বাসন ও দক্ষতা উন্নয়ন
এছাড়াও তারা দাবি জানান, দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা অর্থনীতিতে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















