বাস্তবে অসুর কোন অন্যগ্রহের প্রজাতিও নয়, অন্য কোন ব্যক্তিও নয়- অসুর মানুষের মাঝেই জন্ম নেয়, প্রতি মুহূর্তে। ক্ষমতার অপব্যবহার, লোভ, লালসা, অজ্ঞতা, শঠতা, মিথ্যাচারিতা এমনি অজস্র অমানবিক বিষয় বা ত্রুটি প্রতি মুহূর্তে মানুষের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে। এই ত্রুটি বা খারাপ রিপুর উত্থানকে পরাজিত করেই একজন মানুষকে প্রতি মুহূর্তে নিজেকে মানুষ রাখতে হয়। মানুষ যখন ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্বলের ওপর অত্যাচার, মিথ্যাচারিতার মধ্যে ঢুকে যায় তখন সে মানব থেকে অসুরে পরিণত হয়। আর যখন সে নিজের অসুরত্বকে নিজে পরাজিত করতে পারে না বা কোরবানি দিতে পারে না তখন তার জন্য প্রয়োজন পড়ে অন্য কেউ শক্তি প্রয়োগ করে তাকে মানব সমাজের উপযোগী করে তুলুক।

মানুষের মধ্যে বার বারই অসুরের উত্থান ঘটে আসছে। তাই সকল ধর্মে, সকল রীতেতে রয়েছে, এই অসুর বা নিজের ভেতরের খারাপ রিপুকে কোরবানি দেয়া বা বধ করা। যা মানুষের নিজ নিজ ধর্মের পালিত আচরণ অনুযায়ীও প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত যাতে হয়, সে রীতিনীতিও প্রণয়ন করেছে।
তাই মানুষ যতই ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, আচরণ ও সংস্কৃতিতে বিভক্ত হোক না কেন, অসুর বধ বা নিজের খারাপকে কোরবানি দেওয়ায় সকলেই ঐক্যমত। যাতে মানুষ সজাগ হয় অসুর সম্পর্কে, মানুষ ধাবিত হয় নিজের ভেতরের মানবাত্মাকে আরও জাগ্রত করে নিজেকে দেবাত্মা বা সুরজাতি হিসেবে পরিণত করতে। আর এ কারণে ধর্মীয় আচরণে অসুর বধ বা কোরবানি হয়তো প্রতি ধর্মে বছরে একদিন বা কয়েকদিন- কিন্তু বাস্তবে অসুর বধের কাজটি প্রতি মুহূর্তের।
Sarakhon Report 



















