০৮:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে বাংলাদেশ, ঢাকাসহ সারাদেশে বেড়েছে শীতের দাপট জিয়ার কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন তারেক রহমানের পক্ষে সাভারে শ্রদ্ধা জানাল বিএনপি প্রতিনিধিদল বিশ্ববাজারে পৌঁছাতে ভার্চুয়াল আইডলে বাজি কেপপ সংস্থার উষ্ণ শীত জাপানের ‘স্নো মাঙ্কি’দের আচরণ বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সরবরাহ ঝুঁকি বাড়ায় তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী নতুন iOS আপডেটে অন-ডিভাইস এআই জোরালো করল অ্যাপল রপ্তানি আদেশ কমায় দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতার সতর্কতা জার্মানির

নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে ইউক্রেনীয় ডুবুরি পোল্যান্ডে গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার ও অভিযোগ

পোল্যান্ডে এক ইউক্রেনীয় ডুবুরি, ভলোদিমির জি., জার্মানির অনুরোধে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২২ সালে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটানোর সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। ওই বিস্ফোরণে রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

জার্মানির ফেডারেল প্রসিকিউটর জানায়, পোলিশ পুলিশ ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাঁকে আটক করেছে।


বিস্ফোরণের পটভূমি

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডেনমার্কের বর্নহোম দ্বীপের কাছে রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত বিস্তৃত নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাটি পশ্চিমা দেশ ও রাশিয়া উভয় পক্ষই নাশকতা হিসেবে বর্ণনা করে। এতে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কে বা কারা দায়ী, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি। ইউক্রেন সব ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।

সুইডেন ও ডেনমার্ক তদন্ত চালালেও এ বছর ফেব্রুয়ারিতে তারা কোনো অভিযুক্ত শনাক্ত না করেই তদন্ত বন্ধ করে দেয়।


সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রসিকিউটরদের দাবি, ভলোদিমির জি. একজন প্রশিক্ষিত ডুবুরি। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা জার্মানির রস্টক বন্দর থেকে একটি নৌকা ভাড়া করে পাইপলাইনে বিস্ফোরক বসান। তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ষড়যন্ত্র এবং জার্মানির সাংবিধানিক কাঠামোর বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তাঁর আইনজীবী তিমোথেউজ পাপরোকি বলেছেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ এবং কোনো অপরাধ করেননি। তিনি জার্মানিতে হস্তান্তরের বিরোধিতা করবেন।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

পাপরোকি যুক্তি দেখান যে, নর্ড স্ট্রিম আক্রমণ মূলত গাজপ্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গ্যাস কোম্পানি এবং ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে অর্থায়ন করছে। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকর হওয়া উচিত নয়।

যদি পোল্যান্ড তাঁকে জার্মানিতে হস্তান্তর করে, তবে ভলোদিমির জি.-কে জার্মানির ফেডারেল কোর্টের তদন্তকারী বিচারকের সামনে হাজির করা হবে।


ইতালিতে আরেক গ্রেপ্তার

এর আগে আগস্ট মাসে ইতালিতে আরেক ইউক্রেনীয় নাগরিক সের্গেই কে.-কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে হামলার সমন্বয়ক হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। একটি নিম্ন আদালত ইতিমধ্যেই তাঁকে জার্মানিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে, তবে তিনি আপিল করেছেন এবং বিষয়টি ইতালির সর্বোচ্চ আদালতে গড়িয়েছে।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত

নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণে চারটির মধ্যে তিনটি পাইপলাইন ধ্বংস হয়েছিল। এগুলো রাশিয়ার গ্যাসের ওপর জার্মানির নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। রাশিয়া এ ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউক্রেনকে দায়ী করেছে, তবে এই দেশগুলো জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জার্মানি, ডেনমার্ক ও সুইডেন আলাদা তদন্ত শুরু করে। সুইডেন বিস্ফোরণের স্থানে উদ্ধারকৃত বস্তুতে বিস্ফোরকের চিহ্ন পায় এবং নিশ্চিত করে এটি নাশকতা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত মূল অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়নি।


সারাংশে, নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জ্বালানি ও নিরাপত্তা নিয়ে ইউরোপে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পোল্যান্ডে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারি আন্তর্জাতিক তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করল।

জনপ্রিয় সংবাদ

দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন

নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে ইউক্রেনীয় ডুবুরি পোল্যান্ডে গ্রেপ্তার

১২:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

গ্রেপ্তার ও অভিযোগ

পোল্যান্ডে এক ইউক্রেনীয় ডুবুরি, ভলোদিমির জি., জার্মানির অনুরোধে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২২ সালে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটানোর সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। ওই বিস্ফোরণে রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

জার্মানির ফেডারেল প্রসিকিউটর জানায়, পোলিশ পুলিশ ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাঁকে আটক করেছে।


বিস্ফোরণের পটভূমি

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডেনমার্কের বর্নহোম দ্বীপের কাছে রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত বিস্তৃত নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাটি পশ্চিমা দেশ ও রাশিয়া উভয় পক্ষই নাশকতা হিসেবে বর্ণনা করে। এতে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কে বা কারা দায়ী, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি। ইউক্রেন সব ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।

সুইডেন ও ডেনমার্ক তদন্ত চালালেও এ বছর ফেব্রুয়ারিতে তারা কোনো অভিযুক্ত শনাক্ত না করেই তদন্ত বন্ধ করে দেয়।


সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রসিকিউটরদের দাবি, ভলোদিমির জি. একজন প্রশিক্ষিত ডুবুরি। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা জার্মানির রস্টক বন্দর থেকে একটি নৌকা ভাড়া করে পাইপলাইনে বিস্ফোরক বসান। তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ষড়যন্ত্র এবং জার্মানির সাংবিধানিক কাঠামোর বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তাঁর আইনজীবী তিমোথেউজ পাপরোকি বলেছেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ এবং কোনো অপরাধ করেননি। তিনি জার্মানিতে হস্তান্তরের বিরোধিতা করবেন।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

পাপরোকি যুক্তি দেখান যে, নর্ড স্ট্রিম আক্রমণ মূলত গাজপ্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গ্যাস কোম্পানি এবং ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে অর্থায়ন করছে। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকর হওয়া উচিত নয়।

যদি পোল্যান্ড তাঁকে জার্মানিতে হস্তান্তর করে, তবে ভলোদিমির জি.-কে জার্মানির ফেডারেল কোর্টের তদন্তকারী বিচারকের সামনে হাজির করা হবে।


ইতালিতে আরেক গ্রেপ্তার

এর আগে আগস্ট মাসে ইতালিতে আরেক ইউক্রেনীয় নাগরিক সের্গেই কে.-কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে হামলার সমন্বয়ক হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। একটি নিম্ন আদালত ইতিমধ্যেই তাঁকে জার্মানিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে, তবে তিনি আপিল করেছেন এবং বিষয়টি ইতালির সর্বোচ্চ আদালতে গড়িয়েছে।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত

নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণে চারটির মধ্যে তিনটি পাইপলাইন ধ্বংস হয়েছিল। এগুলো রাশিয়ার গ্যাসের ওপর জার্মানির নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। রাশিয়া এ ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউক্রেনকে দায়ী করেছে, তবে এই দেশগুলো জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জার্মানি, ডেনমার্ক ও সুইডেন আলাদা তদন্ত শুরু করে। সুইডেন বিস্ফোরণের স্থানে উদ্ধারকৃত বস্তুতে বিস্ফোরকের চিহ্ন পায় এবং নিশ্চিত করে এটি নাশকতা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত মূল অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়নি।


সারাংশে, নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জ্বালানি ও নিরাপত্তা নিয়ে ইউরোপে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পোল্যান্ডে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারি আন্তর্জাতিক তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করল।