০৬:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
নেপালের ‘জেন জেড’ বিদ্রোহে বিভাজন—আদর্শগত ফাটল উন্মোচিত গাইবান্ধায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুতে উত্তেজনা ক্লিনিক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ পাকিস্তান সীমান্তে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি,আলোচনার উদ্যোগ ৩০ ইউনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে, বন্ধ বিমান চলাচল কার্গো টার্মিনালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পরই এসকে টেলিকমের এআই ইউনিটে স্বেচ্ছা অবসর অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য ‘মুন সং’—সহানুভূতি, অন্তর্ভুক্তি ও ভালোবাসার মঞ্চ তেলদামের ধারাবাহিক পতন—শীতের আগে কারা লাভবান, কারা চাপে চীনের উৎসবের সপ্তাহে সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে পর্যটনে উচ্ছ্বাস লিয়নে মাইকেল ম্যান পেলেন ‘প্রি লুমিয়ের’—নিয়ন-রাত, প্রোসিডিউরাল তালে গড়া এক উত্তরাধিকার

ভারতের ত্রিপুরায় জেল থেকে পালালো বাংলাদেশি নাগরিকসহ ছয় বন্দি

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৩২:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
  • 20

কারারক্ষীকে পিটিয়ে পালিয়ে যায় ছয় বন্দি

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের একটি কারাগারে একজন কারারক্ষীকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় ছয় জন বন্দি, যাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের নাগরিকও রয়েছে।

উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের কালিকাপুর সাব জেলে বুধবার সকাল ৬টা ২ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে সেই ঘটনাটি।

পালিয়ে যাওয়া ছয় জনের মধ্যে একজন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকি পাঁচজনের বিচার চলছে বলে জানান ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী।

তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, “জামনগর সাবজেলের জেলারের কাছ থেকে একটি ফোনকল পেয়ে আমি ছুটে আসি। সাবজেলে এসে আমি সেখানে যে স্টাফরা উপস্থিত ছিল তাদের কাছ থেকে সব তথ্য নেই।”

দেবযানী চৌধুরী বলেন, “আমি তদন্ত শুরু করেছি। এসডিপিও ধর্মনগর ও নর্থের এসপিও পৃথক তদন্ত করছেন। বিএসএফ এবং সাব জেলের আশপাশের সব পুলিশ স্টেশনকে জানানো হয়েছে।”

আশপাশের সব সাবডিভিশনের পুলিশকেও সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তাদের দ্রুত পাকড়াও করা যায়, বলেন তিনি।

কারা কর্তৃপক্ষ যে তালিকা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পালিয়ে যাওয়া কয়েদীদের মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নামে একজন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন, যিনি জাল কাগজপত্র রাখার অভিযোগে আটক ছিলেন।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ধর্মনগর থানার পুলিশ জানায়, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।

আসামের নিলামবাজারের বাসিন্দা আব্দুল পাট্টা রাজ্য ছেড়ে পালানোর জন্য গাড়ি ভাড়া করেছিল, কিন্তু পুলিশ তাকে ধরে ফেলে।

এখনো বাকি পাঁচ বন্দি নিখোঁজ আছে।

ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী

ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী

কীভাবে পালালো বন্দিরা

জেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে গামছা জাতীয় একটি কাপড় নিয়ে পেছন থেকে এসে কারাগারের গেটে বসে থাকা কারারক্ষীর গলা পেঁচিয়ে ধরে।

সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে আরও দুই জন বন্দি দৌড়ে এসে তাকে মারধর শুরু করে।

পরে চার বন্দি মিলে কারারক্ষীকে মারতে থাকে এবং একজন কারাগারের গেট খুলে ফেলে।

এরপর আরেক জন কারারক্ষী এগিয়ে এলে দ্রুত পাঁচ জন বন্দি গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় ষষ্ঠজন গেটের পাশে একটি রুমে ঢুকে পড়ে।

পরে একজন কারারক্ষী সরে গেলে রুম থেকে বেরিয়ে সেই ষষ্ঠ বন্দিও পালিয়ে যায়।

কয়েদীরা পালিয়ে যাওয়ার পর কারাগারের খোলা গেট

কয়েদীরা পালিয়ে যাওয়ার পর কারাগারের খোলা গেট

পলাতক বন্দিদের পরিচয়

পলাতক বন্দিদের পরিচয় প্রকাশ করেছে জেল কর্তৃপক্ষ––

১. নাজিম উদ্দিন–– যিনি চুরি ও সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলায় জড়িত।

২. রহিম আলী–– ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) বা বিএনএস-এর ৩৩১/৩০৯ ধারার অধীনে একটি মামলায় অভিযুক্ত।

৩. সুনীল দেববর্মা––খুনসহ গুরুতর অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত।

৪. নারায়ণ দত্ত: বাংলাদেশের নাগরিক ও অবৈধ দলিলপত্র রাখার একটি মামলায় জড়িত।

৫. রোজান আলী–– দক্ষিণ কদমতলার জমির আলীর ছেলে, বিএনএসের ধারা ৩৩১/৩০৯ এর অধীনে একটি মামলায় অভিযুক্ত।

৬. আব্দুল পাট্টা––মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত।

কারা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, বন্দিরা প্রধান ফটকে রক্ষীদের পাশ কাটিয়ে জেল প্রাঙ্গণের ডান পাশের প্রাঙ্গণ প্রাচীরের দিকে পালিয়ে যায়।

আহত কারারক্ষী বেদু মিয়া বর্তমানে ডিএমএন জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলেও বিবৃতিতে জানায় তারা।

বিবিসি নিউজ বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

নেপালের ‘জেন জেড’ বিদ্রোহে বিভাজন—আদর্শগত ফাটল উন্মোচিত

ভারতের ত্রিপুরায় জেল থেকে পালালো বাংলাদেশি নাগরিকসহ ছয় বন্দি

০৩:৩২:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের একটি কারাগারে একজন কারারক্ষীকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় ছয় জন বন্দি, যাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের নাগরিকও রয়েছে।

উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের কালিকাপুর সাব জেলে বুধবার সকাল ৬টা ২ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে সেই ঘটনাটি।

পালিয়ে যাওয়া ছয় জনের মধ্যে একজন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকি পাঁচজনের বিচার চলছে বলে জানান ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী।

তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, “জামনগর সাবজেলের জেলারের কাছ থেকে একটি ফোনকল পেয়ে আমি ছুটে আসি। সাবজেলে এসে আমি সেখানে যে স্টাফরা উপস্থিত ছিল তাদের কাছ থেকে সব তথ্য নেই।”

দেবযানী চৌধুরী বলেন, “আমি তদন্ত শুরু করেছি। এসডিপিও ধর্মনগর ও নর্থের এসপিও পৃথক তদন্ত করছেন। বিএসএফ এবং সাব জেলের আশপাশের সব পুলিশ স্টেশনকে জানানো হয়েছে।”

আশপাশের সব সাবডিভিশনের পুলিশকেও সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তাদের দ্রুত পাকড়াও করা যায়, বলেন তিনি।

কারা কর্তৃপক্ষ যে তালিকা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পালিয়ে যাওয়া কয়েদীদের মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নামে একজন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন, যিনি জাল কাগজপত্র রাখার অভিযোগে আটক ছিলেন।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ধর্মনগর থানার পুলিশ জানায়, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।

আসামের নিলামবাজারের বাসিন্দা আব্দুল পাট্টা রাজ্য ছেড়ে পালানোর জন্য গাড়ি ভাড়া করেছিল, কিন্তু পুলিশ তাকে ধরে ফেলে।

এখনো বাকি পাঁচ বন্দি নিখোঁজ আছে।

ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী

ধর্মনগর মহকুমার শাসক এবং ওই সাব জেলের সুপার দেবযানী চৌধুরী

কীভাবে পালালো বন্দিরা

জেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে গামছা জাতীয় একটি কাপড় নিয়ে পেছন থেকে এসে কারাগারের গেটে বসে থাকা কারারক্ষীর গলা পেঁচিয়ে ধরে।

সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে আরও দুই জন বন্দি দৌড়ে এসে তাকে মারধর শুরু করে।

পরে চার বন্দি মিলে কারারক্ষীকে মারতে থাকে এবং একজন কারাগারের গেট খুলে ফেলে।

এরপর আরেক জন কারারক্ষী এগিয়ে এলে দ্রুত পাঁচ জন বন্দি গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় ষষ্ঠজন গেটের পাশে একটি রুমে ঢুকে পড়ে।

পরে একজন কারারক্ষী সরে গেলে রুম থেকে বেরিয়ে সেই ষষ্ঠ বন্দিও পালিয়ে যায়।

কয়েদীরা পালিয়ে যাওয়ার পর কারাগারের খোলা গেট

কয়েদীরা পালিয়ে যাওয়ার পর কারাগারের খোলা গেট

পলাতক বন্দিদের পরিচয়

পলাতক বন্দিদের পরিচয় প্রকাশ করেছে জেল কর্তৃপক্ষ––

১. নাজিম উদ্দিন–– যিনি চুরি ও সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলায় জড়িত।

২. রহিম আলী–– ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) বা বিএনএস-এর ৩৩১/৩০৯ ধারার অধীনে একটি মামলায় অভিযুক্ত।

৩. সুনীল দেববর্মা––খুনসহ গুরুতর অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত।

৪. নারায়ণ দত্ত: বাংলাদেশের নাগরিক ও অবৈধ দলিলপত্র রাখার একটি মামলায় জড়িত।

৫. রোজান আলী–– দক্ষিণ কদমতলার জমির আলীর ছেলে, বিএনএসের ধারা ৩৩১/৩০৯ এর অধীনে একটি মামলায় অভিযুক্ত।

৬. আব্দুল পাট্টা––মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত।

কারা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, বন্দিরা প্রধান ফটকে রক্ষীদের পাশ কাটিয়ে জেল প্রাঙ্গণের ডান পাশের প্রাঙ্গণ প্রাচীরের দিকে পালিয়ে যায়।

আহত কারারক্ষী বেদু মিয়া বর্তমানে ডিএমএন জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলেও বিবৃতিতে জানায় তারা।

বিবিসি নিউজ বাংলা