০৮:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

রংপুরের মিঠাপুকুরে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক: গরুর মাংস খাওয়ার অসুস্থ, ৩ উপজেলায় ২৮ জন শনাক্ত

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আমাইপুর সোনারপাড়া গ্রামে কয়েকজনের অ্যানথ্রাক্স–সদৃশ উপসর্গ ধরা পড়ার পর এলাকাজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ডা. এম. এ. হালিম লাভলু জানান, সন্দেহভাজন সাতজন চিকিৎসাধীন আছেন; এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, দুজনের উপসর্গ রয়ে গেছে।

আতঙ্কের সূত্রপাত

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, কয়েকজনের ত্বকে ঘা দেখা দেওয়ার পর বিষয়টি সামনে আসে। তাঁরা ২০ সেপ্টেম্বর রাহমতপুর হাট থেকে কেনা গরুর মাংস খেয়েছিলেন।

পরীক্ষায় যা জানা গেছে

ফ্রিজে সংরক্ষিত অবশিষ্ট মাংস পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়, জবাই করা গরুটি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ছিল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামজুড়ে ভয় ও শঙ্কা তৈরি হয়। একই মাংস খাওয়া আরও কয়েকজনের নমুনা আইইডিসিআর সংগ্রহ করে; তাঁদের মধ্যে দুজনের অ্যানথ্রাক্স–সংশ্লিষ্ট উপসর্গ পাওয়া গেছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

চিকিৎসা অবস্থা ও ঝুঁকি

ডা. লাভলু জানান, সময়মতো শনাক্ত না হলে অ্যানথ্রাক্সের প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি থাকে। তবে বর্তমানে যারা চিকিৎসাধীন, তাঁরা ভালো সাড়া দিচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষের পরামর্শ

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অলতাব হোসেন অসুস্থ প্রাণীর মাংস না খাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আক্রান্ত পশুর মৃতদেহ অন্তত ছয় ফুট গভীরে মাটি চাপা দিতে হবে, যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়।

সচেতনতা কার্যক্রম

প্রাণিসম্পদ বিভাগ স্থানীয়দের সচেতন করতে উঠানে সভা এবং কসাই–দোকানিদের সঙ্গে বৈঠকসহ জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে।

জেলার সর্বশেষ পরিস্থিতি

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহিনা আখতার জানিয়েছেন, মিঠাপুকুর, পীরগাছা ও কাউনিয়া—এই তিন উপজেলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৮ জন অ্যানথ্রাক্সের রোগী শনাক্ত হয়েছে। তিনি জানান, সব উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা সতর্ক আছেন এবং বর্তমানে অতিরিক্ত আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুরের মিঠাপুকুরে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক: গরুর মাংস খাওয়ার অসুস্থ, ৩ উপজেলায় ২৮ জন শনাক্ত

০৫:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আমাইপুর সোনারপাড়া গ্রামে কয়েকজনের অ্যানথ্রাক্স–সদৃশ উপসর্গ ধরা পড়ার পর এলাকাজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ডা. এম. এ. হালিম লাভলু জানান, সন্দেহভাজন সাতজন চিকিৎসাধীন আছেন; এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, দুজনের উপসর্গ রয়ে গেছে।

আতঙ্কের সূত্রপাত

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, কয়েকজনের ত্বকে ঘা দেখা দেওয়ার পর বিষয়টি সামনে আসে। তাঁরা ২০ সেপ্টেম্বর রাহমতপুর হাট থেকে কেনা গরুর মাংস খেয়েছিলেন।

পরীক্ষায় যা জানা গেছে

ফ্রিজে সংরক্ষিত অবশিষ্ট মাংস পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়, জবাই করা গরুটি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ছিল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামজুড়ে ভয় ও শঙ্কা তৈরি হয়। একই মাংস খাওয়া আরও কয়েকজনের নমুনা আইইডিসিআর সংগ্রহ করে; তাঁদের মধ্যে দুজনের অ্যানথ্রাক্স–সংশ্লিষ্ট উপসর্গ পাওয়া গেছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

চিকিৎসা অবস্থা ও ঝুঁকি

ডা. লাভলু জানান, সময়মতো শনাক্ত না হলে অ্যানথ্রাক্সের প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি থাকে। তবে বর্তমানে যারা চিকিৎসাধীন, তাঁরা ভালো সাড়া দিচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষের পরামর্শ

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অলতাব হোসেন অসুস্থ প্রাণীর মাংস না খাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আক্রান্ত পশুর মৃতদেহ অন্তত ছয় ফুট গভীরে মাটি চাপা দিতে হবে, যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়।

সচেতনতা কার্যক্রম

প্রাণিসম্পদ বিভাগ স্থানীয়দের সচেতন করতে উঠানে সভা এবং কসাই–দোকানিদের সঙ্গে বৈঠকসহ জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে।

জেলার সর্বশেষ পরিস্থিতি

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহিনা আখতার জানিয়েছেন, মিঠাপুকুর, পীরগাছা ও কাউনিয়া—এই তিন উপজেলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৮ জন অ্যানথ্রাক্সের রোগী শনাক্ত হয়েছে। তিনি জানান, সব উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা সতর্ক আছেন এবং বর্তমানে অতিরিক্ত আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।