১১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কঠিন অর্থনীতির মধ্যেও আলো ঝলমলে বুখারেস্টের ক্রিসমাস মার্কেট স্বপ্ন, পুরাণ ও কূটনীতি: শিল্পে নতুন সেতু গড়ছে ভারত–রাশিয়া ভারত বদলেছে, কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট: পুতিন যুক্তরাষ্ট্রে H-1B ভিসায় সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনা আরও কঠোর হচ্ছে যদি আমেরিকা রাশিয়ান তেল কিনতে পারে, তবে ভারত কেন নয়?: পুতিন গ্রামীণ ব্যাংক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত আমেরিকান ইংরেজির প্রভাব ব্রিটিশ ইংরেজিতে পুতিন-মোদী সাক্ষাৎ: প্রতিরক্ষা চুক্তি, বাণিজ্য ও কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ ২০২৬ সালে সোনার দাম কোন পথে যাবে? রেকর্ড গড়ার পর বাজারে অনিশ্চয়তা ওকলাহোমায় লিঙ্গ এবং ধর্ম সম্পর্কিত একটি শিক্ষার্থীর প্রবন্ধ জাতীয় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে

ভালোবাসা, আনুগত্য আর সাফল্যের নতুন গল্প

ক্রিকেট মাঠে জয়ের সঙ্গে জীবনের জয়

ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি সম্প্রতি তার ক্যারিয়ারের ৫০তম ওয়ানডে শতক পূর্ণ করেছেন, একের পর এক রেকর্ড ভেঙেছেন এবং অবশেষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)-কে এনে দিয়েছেন তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপা। কিন্তু মাঠের এই সাফল্যের আড়ালে আরেক নীরব নায়িকা আছেন—অভিনেত্রী ও প্রযোজক আনুশকা শর্মা।
যে নারীকে একসময় ‘বিভ্রান্তি’ বা ‘অশুভ’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তিনি আজ সৌন্দর্য, সাহস আর ধৈর্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। শিরোপাজয়ের পর বক্তৃতায় কোহলি নিজেই প্রকাশ্যে তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন—‘তিনি আমার শক্তি আর সবচেয়ে বড় সহায়ক।’


সমালোচনার শিকার থেকে সম্মানের আসনে

একসময় আনুশকাকে অকারণে টেনে হিঁচড়ে সমালোচনায় নামানো হতো। কোহলি খেলায় জিতলে সেটা ছিল তার প্রতিভা, আর হারলে দোষ দেওয়া হতো স্ত্রীকে। অনলাইনে এমনকি তাকে মাঠে না আসার জন্য স্বাক্ষর অভিযান পর্যন্ত চালানো হয়েছিল।
২০২০ সালের আইপিএলে সুনীল গাভাস্কারের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য—যেখানে তিনি আনুশকার সঙ্গে লকডাউনের সময়কার একটি মজার ঘটনার সঙ্গে কোহলির ব্যাটিং দুর্দশার যোগসূত্র টানেন—সেটিও ব্যাপক সমালোচিত হয়। আনুশকা পাল্টা জবাব দেন, ‘কবে আমি ক্রিকেটের সঙ্গে টানা জুড়ে দেওয়া বন্ধ হবে?’ কোহলি তখনও প্রকাশ্যে সমালোচকদের এক শব্দে থামিয়েছিলেন: ‘লজ্জা।’


আবেগঘন জয় আর নতুন প্রতীকী মুহূর্ত

সব সমালোচনার পরও এই দম্পতি কখনো নিজেদের ভাঙতে দেননি। তাই আরসিবির জয়ের পর আহমেদাবাদের মাঠে কোহলি যখন হাঁটু গেড়ে বসে আনুশকাকে জড়িয়ে ধরেন, সেটি হয়ে ওঠে শুধু ক্রীড়ার নয়, জীবনেরও এক কবিতার মতো মুহূর্ত।
ছবিটি ইতোমধ্যেই ক্রিকেট ও জনপ্রিয় সংস্কৃতির ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। এটি ছিল শুধু কাপ জেতা নয়, বরং দীর্ঘ বছরের সমালোচনাকে ভালোবাসা ও আনুগত্য দিয়ে নীরবভাবে পরাজিত করার প্রতীক।


তুচ্ছ বিষয় থেকে মিডিয়ার বিতর্ক তৈরি

শুধু জয়ের মুহূর্তই নয়, বিরুশকাকে (বিরাট+আনুশকা) ঘিরে প্রায়ই তৈরি হয় অকারণ বিতর্ক। কয়েক সপ্তাহ আগেই কোহলিকে স্পষ্ট করতে হয়েছিল কেন তিনি অভিনেত্রী অভনীৎ কৌরের একটি ভিডিও ‘লাইক’ করেছিলেন—তিনি জানান, সেটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছাড়া কিছুই নয়। অথচ এমন তুচ্ছ বিষয়কেও মিডিয়া রঙ চড়িয়ে খবর বানিয়েছে।
এই প্রবণতা শুধু ক্লান্তিকর নয়, বরং সাংবাদিকতার মর্যাদাকেই খাটো করছে। সত্য উদ্ঘাটনের বদলে সংবাদ মাধ্যম এখন সেলিব্রেটিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তুচ্ছ কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণেই ব্যস্ত।


টিকে থাকার শক্তি আর ভালোবাসার জয়

গুজব, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, দাম্পত্যে ভাঙনের অভিযোগ—সবকিছুর ভেতর দিয়েই বিরুশকা তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছেন। তারা প্রমাণ করেছেন প্রকৃত দম্পতির মানে হলো নীরব সমর্থন, যৌথ সাফল্য আর প্রয়োজনে একে অপরের পক্ষে শক্ত অবস্থান।
আজ কোহলি মাঠে রেকর্ড লিখছেন, আর আনুশকা লিখছেন নতুন গল্প—যেখানে তিনি আর বোঝা নন, বরং একজন চ্যাম্পিয়নের পেছনের প্রেরণা। কোহলির উপস্থিতি ম্যাচ জিতিয়েছে, কিন্তু আনুশকার উপস্থিতি দর্শকদের হৃদয় জয় করেছে। একসঙ্গে তারা শুধু একটি শিরোপা নয়, পুরো কাহিনীটাই জিতে নিয়েছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

কঠিন অর্থনীতির মধ্যেও আলো ঝলমলে বুখারেস্টের ক্রিসমাস মার্কেট

ভালোবাসা, আনুগত্য আর সাফল্যের নতুন গল্প

০৬:১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

ক্রিকেট মাঠে জয়ের সঙ্গে জীবনের জয়

ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি সম্প্রতি তার ক্যারিয়ারের ৫০তম ওয়ানডে শতক পূর্ণ করেছেন, একের পর এক রেকর্ড ভেঙেছেন এবং অবশেষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)-কে এনে দিয়েছেন তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপা। কিন্তু মাঠের এই সাফল্যের আড়ালে আরেক নীরব নায়িকা আছেন—অভিনেত্রী ও প্রযোজক আনুশকা শর্মা।
যে নারীকে একসময় ‘বিভ্রান্তি’ বা ‘অশুভ’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তিনি আজ সৌন্দর্য, সাহস আর ধৈর্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। শিরোপাজয়ের পর বক্তৃতায় কোহলি নিজেই প্রকাশ্যে তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন—‘তিনি আমার শক্তি আর সবচেয়ে বড় সহায়ক।’


সমালোচনার শিকার থেকে সম্মানের আসনে

একসময় আনুশকাকে অকারণে টেনে হিঁচড়ে সমালোচনায় নামানো হতো। কোহলি খেলায় জিতলে সেটা ছিল তার প্রতিভা, আর হারলে দোষ দেওয়া হতো স্ত্রীকে। অনলাইনে এমনকি তাকে মাঠে না আসার জন্য স্বাক্ষর অভিযান পর্যন্ত চালানো হয়েছিল।
২০২০ সালের আইপিএলে সুনীল গাভাস্কারের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য—যেখানে তিনি আনুশকার সঙ্গে লকডাউনের সময়কার একটি মজার ঘটনার সঙ্গে কোহলির ব্যাটিং দুর্দশার যোগসূত্র টানেন—সেটিও ব্যাপক সমালোচিত হয়। আনুশকা পাল্টা জবাব দেন, ‘কবে আমি ক্রিকেটের সঙ্গে টানা জুড়ে দেওয়া বন্ধ হবে?’ কোহলি তখনও প্রকাশ্যে সমালোচকদের এক শব্দে থামিয়েছিলেন: ‘লজ্জা।’


আবেগঘন জয় আর নতুন প্রতীকী মুহূর্ত

সব সমালোচনার পরও এই দম্পতি কখনো নিজেদের ভাঙতে দেননি। তাই আরসিবির জয়ের পর আহমেদাবাদের মাঠে কোহলি যখন হাঁটু গেড়ে বসে আনুশকাকে জড়িয়ে ধরেন, সেটি হয়ে ওঠে শুধু ক্রীড়ার নয়, জীবনেরও এক কবিতার মতো মুহূর্ত।
ছবিটি ইতোমধ্যেই ক্রিকেট ও জনপ্রিয় সংস্কৃতির ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। এটি ছিল শুধু কাপ জেতা নয়, বরং দীর্ঘ বছরের সমালোচনাকে ভালোবাসা ও আনুগত্য দিয়ে নীরবভাবে পরাজিত করার প্রতীক।


তুচ্ছ বিষয় থেকে মিডিয়ার বিতর্ক তৈরি

শুধু জয়ের মুহূর্তই নয়, বিরুশকাকে (বিরাট+আনুশকা) ঘিরে প্রায়ই তৈরি হয় অকারণ বিতর্ক। কয়েক সপ্তাহ আগেই কোহলিকে স্পষ্ট করতে হয়েছিল কেন তিনি অভিনেত্রী অভনীৎ কৌরের একটি ভিডিও ‘লাইক’ করেছিলেন—তিনি জানান, সেটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছাড়া কিছুই নয়। অথচ এমন তুচ্ছ বিষয়কেও মিডিয়া রঙ চড়িয়ে খবর বানিয়েছে।
এই প্রবণতা শুধু ক্লান্তিকর নয়, বরং সাংবাদিকতার মর্যাদাকেই খাটো করছে। সত্য উদ্ঘাটনের বদলে সংবাদ মাধ্যম এখন সেলিব্রেটিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তুচ্ছ কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণেই ব্যস্ত।


টিকে থাকার শক্তি আর ভালোবাসার জয়

গুজব, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, দাম্পত্যে ভাঙনের অভিযোগ—সবকিছুর ভেতর দিয়েই বিরুশকা তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছেন। তারা প্রমাণ করেছেন প্রকৃত দম্পতির মানে হলো নীরব সমর্থন, যৌথ সাফল্য আর প্রয়োজনে একে অপরের পক্ষে শক্ত অবস্থান।
আজ কোহলি মাঠে রেকর্ড লিখছেন, আর আনুশকা লিখছেন নতুন গল্প—যেখানে তিনি আর বোঝা নন, বরং একজন চ্যাম্পিয়নের পেছনের প্রেরণা। কোহলির উপস্থিতি ম্যাচ জিতিয়েছে, কিন্তু আনুশকার উপস্থিতি দর্শকদের হৃদয় জয় করেছে। একসঙ্গে তারা শুধু একটি শিরোপা নয়, পুরো কাহিনীটাই জিতে নিয়েছেন।