০১:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
সেমিয়ার্কা: কাজাখস্তানের স্তেপে প্রাচীন ব্রোঞ্জ যুগের একটি শহরের খোঁজ এআই বদলে দিচ্ছে আর্থিক খাতের শক্তির সমীকরণ ঢাকায় সবজি–প্রোটিনে আগুন-দাম: নিম্ন আয়ের মানুষের টিকে থাকার লড়াই চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ৫ সশস্ত্র বাহিনী দিবস শুক্রবার পালিত হবে ডাকসু নেত্রীর বাড়িতে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণ স্টক মার্কেট সপ্তাহ শেষ করল নিম্নমুখী লেনদেনে বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সিরিজ জয়ের পথে বাংলাদেশ আরও চারজনের মৃত্যুতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক কোনো বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ শক্তিকে সুযোগ দেব না: সিএসসি-কে ঢাকার বার্তা

খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের লাগামহীন দাম

সরকারি সিদ্ধান্তেও নিয়ন্ত্রণহীন বাজার

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে না, বরং দিন দিন বাড়ছে। অথচ সরকার আমদানি বাড়ানো ও দাম সমন্বয়ের পদক্ষেপ নিয়েছিল। গত ১২ আগস্ট সরকার লিটার প্রতি ১৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করে। কিন্তু বাস্তবে এখন বাজারে সুপার তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০–১৬৫ টাকায়, অপরিশোধিত তেলও ১৫৩–১৬০ টাকায়।


আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে ১৮ লাখ ৯৮ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল প্রায় ১৬ লাখ ৭০ হাজার টন। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। তবুও খাতুনগঞ্জে দাম উল্টো বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি।


দোষ কার: বিশ্ববাজার নাকি সিন্ডিকেট?

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, মালয়েশিয়ার বুকিং রেট ওঠানামার কারণে দাম বাড়ছে। তবে হিসাব মিলছে না। বুকিং রেট কমলেও খাতুনগঞ্জে দাম কমছে না।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব থাকলেও সরবরাহ পর্যাপ্ত, তাই ডলার না বাড়লে দাম আরও বাড়বে না। কিন্তু অন্য এক ব্যবসায়ীর মতে, বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। বিশ্ববাজারে কমলেও তারা স্থানীয় বাজারে দাম নামায় না।


ভোক্তার সুরক্ষা নেই

ভোক্তা সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সরকারের নজরদারি দুর্বল। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশনের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এস এম নাজার হোসেন বলেছেন, “সরকার দাম বেঁধে দিলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। দাম বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তার ঘাড়ে চাপানো হয়, কিন্তু কমলে তার সুবিধা পান না।”

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। বিভাগের সহকারী পরিচালক মাহমুদা আখতার বলেন, পূজা ছুটির পর আবারও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সয়াবিন তেলও বাড়ছে

শুধু ভোজ্যতেল নয়, খোলা সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। বর্তমানে লিটার প্রতি ১৭৫–১৭৮ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ১৬৮ টাকা। টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।


কারা বেশি আমদানি করছে

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে টিকে গ্রুপ—৭ লাখ টন। এরপর আবুল খায়ের গ্রুপ ৫.৬ লাখ টন, সিটি গ্রুপ ২.৫ লাখ টন এবং মেঘনা গ্রুপ ১.৮ লাখ টন আমদানি করেছে।

এ ছাড়া প্রাণ, আকিজ বেকারি, অলিম্পিক, বোম্বে সুইটস, নেসলে ও স্কয়ারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের খাদ্য উৎপাদনের জন্য তেল আমদানি করছে। বড় গ্রুপগুলো নিজেরাই অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করে বাজারে সরবরাহ করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সেমিয়ার্কা: কাজাখস্তানের স্তেপে প্রাচীন ব্রোঞ্জ যুগের একটি শহরের খোঁজ

খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের লাগামহীন দাম

১১:৫১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

সরকারি সিদ্ধান্তেও নিয়ন্ত্রণহীন বাজার

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে না, বরং দিন দিন বাড়ছে। অথচ সরকার আমদানি বাড়ানো ও দাম সমন্বয়ের পদক্ষেপ নিয়েছিল। গত ১২ আগস্ট সরকার লিটার প্রতি ১৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করে। কিন্তু বাস্তবে এখন বাজারে সুপার তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০–১৬৫ টাকায়, অপরিশোধিত তেলও ১৫৩–১৬০ টাকায়।


আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে ১৮ লাখ ৯৮ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল প্রায় ১৬ লাখ ৭০ হাজার টন। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। তবুও খাতুনগঞ্জে দাম উল্টো বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি।


দোষ কার: বিশ্ববাজার নাকি সিন্ডিকেট?

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, মালয়েশিয়ার বুকিং রেট ওঠানামার কারণে দাম বাড়ছে। তবে হিসাব মিলছে না। বুকিং রেট কমলেও খাতুনগঞ্জে দাম কমছে না।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব থাকলেও সরবরাহ পর্যাপ্ত, তাই ডলার না বাড়লে দাম আরও বাড়বে না। কিন্তু অন্য এক ব্যবসায়ীর মতে, বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। বিশ্ববাজারে কমলেও তারা স্থানীয় বাজারে দাম নামায় না।


ভোক্তার সুরক্ষা নেই

ভোক্তা সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সরকারের নজরদারি দুর্বল। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশনের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এস এম নাজার হোসেন বলেছেন, “সরকার দাম বেঁধে দিলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। দাম বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তার ঘাড়ে চাপানো হয়, কিন্তু কমলে তার সুবিধা পান না।”

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। বিভাগের সহকারী পরিচালক মাহমুদা আখতার বলেন, পূজা ছুটির পর আবারও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সয়াবিন তেলও বাড়ছে

শুধু ভোজ্যতেল নয়, খোলা সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। বর্তমানে লিটার প্রতি ১৭৫–১৭৮ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ১৬৮ টাকা। টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।


কারা বেশি আমদানি করছে

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে টিকে গ্রুপ—৭ লাখ টন। এরপর আবুল খায়ের গ্রুপ ৫.৬ লাখ টন, সিটি গ্রুপ ২.৫ লাখ টন এবং মেঘনা গ্রুপ ১.৮ লাখ টন আমদানি করেছে।

এ ছাড়া প্রাণ, আকিজ বেকারি, অলিম্পিক, বোম্বে সুইটস, নেসলে ও স্কয়ারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের খাদ্য উৎপাদনের জন্য তেল আমদানি করছে। বড় গ্রুপগুলো নিজেরাই অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করে বাজারে সরবরাহ করছে।