নারী অধিকারের পক্ষে অবস্থান থেকে সাহসী সিদ্ধান্ত
লেখিকা, অভিনেত্রী ও খোলামেলা নারীবাদী মতাদর্শের সমর্থক মীরা সেতি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন—তিনি বিতর্কিত বা নারীবিদ্বেষী ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজ করেন না। আগস্ট মাসে এক আলোচনায় লেখক মুনিব কাদিরের সঙ্গে নারী অধিকার নিয়ে কথা বলার সময় সেতি জানান, তিনি এআরওয়াই ডিজিটালের জনপ্রিয় নাটক মেইন ম্যান্টো নহি হুঁ-তে অভিনয়ের প্রস্তাব পান। কিন্তু নাটকের লেখক খালিলুর রহমান কামারের নারী-বিরোধী মনোভাবের কারণে তিনি প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন।
কাজের ইচ্ছে ছিল, কিন্তু নীতির কাছে আপস নয়
সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ওই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, মীরা সেতি জানাচ্ছেন, তিনি মূলত কাজটি করতে চেয়েছিলেন, কারণ এতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন হুমায়ুন সাঈদ ও সজল আলি, যাদের সঙ্গে তিনি আগে কুছ আঁকাহী নাটকে অভিনয় করেছেন। তবে তিনি মনে করেন, নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার থাকা অর্থহীন হয়ে যেত যদি তিনি এমন একজনের সঙ্গে কাজ করতেন, যিনি প্রকাশ্যে নারীদের সম্পর্কে “অদ্ভুত ও অবমাননাকর কথা” বলেন।
গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ ফিরিয়ে দেওয়া
মীরা যে চরিত্রটি ফিরিয়ে দেন, সেটি ছিল নাটকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র—মিস মারিয়া, প্রধান চরিত্র ম্যান্টোর (হুমায়ুন সাঈদ) ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আস্থাভাজন। পরে এই চরিত্রে অভিনয় করেন সানম সাঈদ। নাটকটি সমালোচনার মুখে পড়ে, কারণ এতে এক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ম্যান্টো ও তাঁর ছাত্রী মেহমাল (সজল আলি)-এর মধ্যে সম্পর্ককে রোমান্টিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
সানম সাঈদের শর্ত ও নৈতিক অবস্থান
সানম সাঈদ এক সাক্ষাৎকারে জানান, শুরুতে প্রকল্পটি নিয়ে তাঁরও দ্বিধা ছিল। তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, কোনো বিষয় তাঁর নৈতিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে হলে তিনি সেটির প্রতিবাদ করবেন।
বিতর্কিত সংলাপ ও দর্শকের ক্ষোভ
নাটকটির শুরু থেকেই নানা বিতর্ক দেখা দেয়; একটি পর্বে মোটা মানুষকে নিয়ে কৌতুক করার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। দর্শকরা হতাশ হন যে, এমন এক সংলাপ খালিলুর রহমান কামারের লেখা চিত্রনাট্যে থাকলেও, সেটি সজল আলির মতো একজন অভিনেত্রীকে দিয়েও পরিবেশিত হয়েছে।
খালিলুর রহমান কামার ও নারীবিদ্বেষের অভিযোগ
মীরা সেতির সিদ্ধান্ত বোঝা কঠিন নয়, কারণ কামারের নারীদের প্রতি মনোভাব বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি একাধিকবার নারী অধিকারকর্মী মারভি সিরমেদকে সরাসরি টেলিভিশনে গালিগালাজ করেছেন এবং নূর মুকাদ্দামের নির্মম হত্যাকাণ্ডের জন্য নারীবাদকে দায়ী করেছেন।
মীরার মন্তব্য: “তিনি নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন”
এর আগেও মীরা সেতি খালিলুর রহমান কামার সম্পর্কে বলেছিলেন, “তিনি নিজের ক্ষতি করেছেন, যদিও তিনি তা বোঝেন না। এখন তিনি এমন এক চিন্তাধারার প্রচারক হয়ে উঠেছেন যা অত্যন্ত কুৎসিত ও পশ্চাৎপদ। তিনি নিজেকে উন্মোচিত করেছেন, আর যা তিনি প্রকাশ করেছেন, তা ভীষণভাবে কদর্য।”