‘শাটারের’ জন্য বোনা বাঁশের বন্ধনী। দরজা তৈরি হয়েছে কাঠের তক্তা দিয়ে এবং হাওয়া খেলানোর জন্য রয়েছে ছয়টি খোলা জায়গা।
তেজগাঁ বিমানবন্দর
তেজগাঁয় এখনও যে বিমানবন্দর তা বিমানবাহিনীর হাতে গড়ে উঠেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, মিত্রবাহিনীর যুদ্ধ বিমানঘাঁটি হিসেবে। শুরুতে তা যুদ্ধঘাটি হিসেবে নির্মিত হলেও পরেও তার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। জ্বালানি সরবরাহ ও পরিবহনের জন্যই তা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই অবস্থার পরিবর্তন হয় এবং বিমান আসা-যাওয়া শুরু করে। এখানে তখন বিমানবহরের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯২-তে।
এ্যান্থনি সিলভা নামে এক সৈনিক যিনি এখানে ছিলেন বলেছেন, “তেজগাঁ ঘাঁটির সার্বক্ষণিক পাহারাদারি করত গুর্খাবাহিনী এবং অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট্ গান নিয়ে অতন্দ্র প্রহরারত ছিলো ব্রিটিশ ভারত সেনাবাহিনীর সেনারা। এখানে বেশির ভাল ছিল সি ১০৯ কার্গো বিমান। জালানি ভর্তি করে পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হতো তেজগাঁ।”
তেজগাঁও বিমানবন্দর যখন চালু ছিল
মার্কিন মেজর জন পি. বন্ধুরাস্ট ঘাটিতে অফিসারদের জন্য বরাদ্দকৃত বাসায় থাকতেন। লিখেছেন তিনি “আমার থাকার ব্যবস্থা হয় ‘বাসা’ নামক ভবনের এক রুমের কোয়ার্টারে, সাইজে বাসাটি প্রায় ২০ বাই ৬০ ফুট। ‘বাসা’র ছাদ নির্মাণে কাঠের স্তম্ভ ও বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করে ছাদের ফ্রেমটিকে মজবুত করা হয়েছে; দুই দিকে ছয়টি করে বসানো বাঁশের খুঁটি নিচের দিকে নেমে গেছে যাতে হাওয়া খেলতে পারে বা চলাচল করতে পারে; মিহি করে কাটা বাঁশ দিয়ে বোনা ‘চাটাই’ দিয়ে তৈরি দেয়াল ও পার্টিশন দেয়ার দেয়াল: এগুলোকে শক্ত মজবুত করে বাঁধার জন্য বোনা বাঁশের বন্ধনী; প্রায় আট ইঞ্চি পুরু ছনের ছাদ।
জানালাও মিহি করে কাটা বাঁশ দিয়ে বোনা ‘চাটাই’ দিয়ে তৈরি, ‘শাটারের’ জন্য বোনা বাঁশের বন্ধনী। দরজা তৈরি হয়েছে কাঠের তক্তা দিয়ে এবং হাওয়া খেলানোর জন্য রয়েছে ছয়টি খোলা জায়গা। বাসায় কোনো পরদা ছিল না, পরে অবশ্য পর্দা টাঙানো হয়। চারটে রুম ও একটি অর্ধেক-রুম নিয়ে এক একটি ‘বাসা’ নামে পরিচিত ভবন নির্মিত হয়েছে। চারটি রুমের প্রতিটি বরাদ্দ হয়েছে এক একজন অফিসারকে এবং অর্ধেক রুম ছিল আদালীর কোয়ার্টার।”
(চলবে)