০৪:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
মিয়ানমারের ২০২৫ নির্বাচন সারাদেশে হবে না—জুন্তা প্রধানের স্বীকারোক্তি চীনে চাহিদা ও উৎপাদন খাতে স্থবিরতা—মূল্যপতনে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা কাইলি জেনার আবার ‘কিং কাইলি’—নতুন সিঙ্গেল ‘ফোর্থ স্ট্রাইক বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে পুনরুদ্ধার—ফেডের সুদহার কমানোর ইঙ্গিতে ডলারের পতন হোক্কাইদোর ছোট্ট লাইব্রেরির ‘প্রশ্ন-দেয়াল’—দেশজুড়ে বেস্টসেলার বাজারে উদ্বৃত্ত সরবরাহ ও যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনায় তেলের দামে পতন আসিয়ান পাওয়ার গ্রিডে এডিবির প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার—ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও যুক্ত ওপেনএআইয়ের সঙ্গে ওয়ালমার্টের নতুন উদ্যোগ — চ্যাটজিপিটিতে এখন সরাসরি কেনাকাটার সুযোগ উইন্ডোজ ১০ শেষ—এবার ‘বড় ঘোষণা’ ইঙ্গিত দিল মাইক্রোসফট মার্কিন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অ্যাশলি টেলিস গ্রেপ্তার: গোপন নথি ফাঁস ও চীনের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ

শিয়ালবাড়ি অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মরদেহ শনাক্তে প্রয়োজন হতে পারে ডিএনএ পরীক্ষা

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৬

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়িতে অবস্থিত এনআর গার্মেন্টস কারখানা ও সংলগ্ন রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ১৬টি দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা দ্রুতই পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।

উদ্ধার করা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে মরদেহগুলোর চেহারা এতটাই দগ্ধ যে কোনোভাবেই শনাক্ত করা সম্ভব নয়। ফলে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থলের কাছে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “তল্লাশি অভিযান শেষে আমরা পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করেছি। তাদের মুখমণ্ডল সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়ে গেছে, কোনোভাবেই চেনা সম্ভব নয়।”

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ভবনের ছাদ সম্পূর্ণভাবে টিন ও চাটাই দিয়ে ঢাকা ছিল এবং ছাদে যাওয়ার দরজার গ্রিলের দুই পাশে দুটি তালা লাগানো ছিল, যা এখনো বন্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। “এ কারণেই শ্রমিকরা উপরে পালানোর কোনো সুযোগ পাননি,” বলেন তিনি।

বিষাক্ত ধোঁয়ায় মৃত্যুর আশঙ্কা

লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, “রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণের পর সেখান থেকে বিষাক্ত সাদা ধোঁয়া বের হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই ধোঁয়ার প্রভাবে শ্রমিকরা অচেতন হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।”

তিনি আরও জানান, উদ্ধার অভিযানে একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন, তবে কোনো ফায়ার সার্ভিস সদস্য আহত হননি। “এখনও পর্যন্ত কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি,” তিনি জানান।

নিয়ন্ত্রণে আসেনি রাসায়নিক গুদামের আগুন

ঘটনাস্থলে অন্তত ১২টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কাজ করছে। গার্মেন্টস অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও রাসায়নিক গুদামের আগুন তখনও জ্বলছিল বলে জানান তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “ওই গুদামে ছয় থেকে সাত ধরনের রাসায়নিক পদার্থ সংরক্ষিত ছিল। এসব রাসায়নিকের প্রকৃতি অনুযায়ী আগুন পুরোপুরি নিভাতে সময় লাগবে।”

শনাক্তে সময় লাগবে

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মরদেহগুলো এতটাই দগ্ধ যে প্রত্যেকের পরিচয় নির্ধারণের একমাত্র উপায় হবে ডিএনএ পরীক্ষা। এদিকে স্থানীয়রা জানান, ভবনে থাকা কর্মীরা আগুন লাগার পর বের হতে না পেরে চিৎকার করছিলেন, কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ঘন ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়।

শিয়ালবাড়ির এই অগ্নিকাণ্ড আবারও স্মরণ করিয়ে দিল, শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি কীভাবে মুহূর্তেই প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা, গুদামে রাখা রাসায়নিক ও ভবনের অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার মূল কারণ।

#অগ্নিকাণ্ড #শিয়ালবাড়ি #মিরপুর #ফায়ারসার্ভিস #ডিএনএপরীক্ষা #কারখানাদুর্ঘটনা #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের ২০২৫ নির্বাচন সারাদেশে হবে না—জুন্তা প্রধানের স্বীকারোক্তি

শিয়ালবাড়ি অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মরদেহ শনাক্তে প্রয়োজন হতে পারে ডিএনএ পরীক্ষা

০১:১৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৬

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়িতে অবস্থিত এনআর গার্মেন্টস কারখানা ও সংলগ্ন রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ১৬টি দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা দ্রুতই পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।

উদ্ধার করা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে মরদেহগুলোর চেহারা এতটাই দগ্ধ যে কোনোভাবেই শনাক্ত করা সম্ভব নয়। ফলে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থলের কাছে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “তল্লাশি অভিযান শেষে আমরা পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করেছি। তাদের মুখমণ্ডল সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়ে গেছে, কোনোভাবেই চেনা সম্ভব নয়।”

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ভবনের ছাদ সম্পূর্ণভাবে টিন ও চাটাই দিয়ে ঢাকা ছিল এবং ছাদে যাওয়ার দরজার গ্রিলের দুই পাশে দুটি তালা লাগানো ছিল, যা এখনো বন্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। “এ কারণেই শ্রমিকরা উপরে পালানোর কোনো সুযোগ পাননি,” বলেন তিনি।

বিষাক্ত ধোঁয়ায় মৃত্যুর আশঙ্কা

লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, “রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণের পর সেখান থেকে বিষাক্ত সাদা ধোঁয়া বের হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই ধোঁয়ার প্রভাবে শ্রমিকরা অচেতন হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।”

তিনি আরও জানান, উদ্ধার অভিযানে একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন, তবে কোনো ফায়ার সার্ভিস সদস্য আহত হননি। “এখনও পর্যন্ত কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি,” তিনি জানান।

নিয়ন্ত্রণে আসেনি রাসায়নিক গুদামের আগুন

ঘটনাস্থলে অন্তত ১২টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কাজ করছে। গার্মেন্টস অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও রাসায়নিক গুদামের আগুন তখনও জ্বলছিল বলে জানান তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “ওই গুদামে ছয় থেকে সাত ধরনের রাসায়নিক পদার্থ সংরক্ষিত ছিল। এসব রাসায়নিকের প্রকৃতি অনুযায়ী আগুন পুরোপুরি নিভাতে সময় লাগবে।”

শনাক্তে সময় লাগবে

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মরদেহগুলো এতটাই দগ্ধ যে প্রত্যেকের পরিচয় নির্ধারণের একমাত্র উপায় হবে ডিএনএ পরীক্ষা। এদিকে স্থানীয়রা জানান, ভবনে থাকা কর্মীরা আগুন লাগার পর বের হতে না পেরে চিৎকার করছিলেন, কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ঘন ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়।

শিয়ালবাড়ির এই অগ্নিকাণ্ড আবারও স্মরণ করিয়ে দিল, শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি কীভাবে মুহূর্তেই প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা, গুদামে রাখা রাসায়নিক ও ভবনের অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার মূল কারণ।

#অগ্নিকাণ্ড #শিয়ালবাড়ি #মিরপুর #ফায়ারসার্ভিস #ডিএনএপরীক্ষা #কারখানাদুর্ঘটনা #সারাক্ষণরিপোর্ট