মোটামুটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ সালে এশিয়া মহাদেশে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
আনাতোল অবশ্য একটি ছোট্ট ক্ষেত্রে ইংরেজের আদেশ অমান্য করেছিলেন। কুর্মিটোলার ‘বাসা’য় দশ বছর বয়সের এক বালক আনাতোলের আদালীর কাজ করত। সেই আদালী ছেলেটি একবার আনাতোলের জীবন রক্ষা করেছিল- ওঁর জুতার ভেতরে একটি ছোট্ট বিষাক্ত সাপ লুকিয়েছিল, ছেলেটি সাপটিকে মেরে ফেলে এবং নিজের গর্ব প্রদর্শনের জন্য মেরে ফেলা সাপটিকে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল।
ছেলেটি এতো সামান্য ইংরেজি জানত যে তার সঙ্গে আলাপচারিতা চালিয়ে যেতে বেশ কঠিনই ছিল তবে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের মৃত্যুর পরে ট্রুম্যান প্রেসিডেন্ট হলে ছেলেটি জানতে চেয়েছিল যে ট্রম্যান রুজভেল্টের ছেলে কিনা- এবং আনাতোল ছেলেটির প্রশ্ন ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন। ঢাকা ত্যাগের পূর্বে এই আদালী ছেলেটিকে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে অন্তত ছোটোখাটো কিছু একটা উপহার দেয়ার অদম্য ইচ্ছার কাছে আনাতোল আত্মসমর্পন করেন। নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে নিজের ‘অ্যালার্ম ক্লক’টি আর্দালী ছেলেটির হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসের ছয় ও নয় তারিখে যথাক্রমে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দুই ধরনের দুটো মার্কিন বোমার যথাক্রমে ইউরেনিয়াম-২৩৫ ও প্লুটোনিয়াম-২৩৯, নিক্ষেপ প্রশান্ত মহাসাগরীয় ফ্রন্টের তথা জাপানের আত্মসমর্পনকে ত্বরান্বিত করে। মোটামুটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ সালে এশিয়া মহাদেশে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। সেইসঙ্গে বিশ্বায়িত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধেরও অবসান ঘটে।
১৯৪৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর, চীনের জাতীয়তাবাদী সরকারের অস্থায়ী রাজধানী নানকিং-য়ে চীনে থেকে যাওয়া জাপানি কমান্ডারদের ও জেনেরালিসিমৌ চিয়াং কাই শেকের প্রতিনিধিদলের মধ্যে “অ্যাক্ট অব সারেন্ডার- চায়না থিয়েটার” স্বাক্ষরিত হয়। এই সই-সাবুদের মাধ্যমে চীনা থিয়েটারের জাপানি বাহিনী আত্মসমর্পন করে এবং চীন সুদীর্ঘ বছর পরে ফরমোজার (তাইওয়ান) সার্বভৌম ক্ষমতা পুনরায় ফিরে পায়।
(চলবে)