০৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের বৃদ্ধি: কারণ ও প্রভাব বিমানবন্দর অগ্নিকাণ্ডে রপ্তানিকারকদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ তৎপরতা যশোর এখন বাংলাদেশের শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র ওমানের দুর্ঘটনায় নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে আট মাস পর ভারতে আটক ১২ বাংলাদেশি নাবিকের দেশে ফেরা নারী অধিকার ও শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্নে ইলা মিত্রের শতবর্ষে নওগাঁয় র‌্যালি যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে ভেনিজুয়েলা: সামরিক প্রস্তুতি ও দুর্বলতা ভিক্টোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুধ খামার বিক্রয়: লাভজনক সুযোগ এবং সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য গঠনমূলক পদক্ষপে ভারতের রুশ তেল কেনার বিষয়ে ট্রাম্পের দাবির প্রতিক্রিয়া ইরানে পুরানো ক্ষত পুনরুজ্জীবিত: মার্কিন ও ইসরাইলি আক্রমণে উদ্বেগের নতুন ঢেউ

শরতের ক্লান্তি কাটানোর প্রাকৃতিক উপায়

শরতের ক্লান্তি: কেন হয় এবং কীভাবে মোকাবিলা করবেন

শরতের শুরুতেই শীতল বাতাস এবং সোনালী-কমলা পাতাগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ঋতু পরিবর্তন এসে গেছে। যদি আপনি অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত, মনমরা বা শক্তিহীনতা অনুভব করছেন, তবে এটি কি শুধু ছুটির পরের অবসাদ, নাকি এর পিছনে কিছু বড় কারণ রয়েছে? এই মৌসুমী ক্লান্তির কারণ সম্পর্কে জানতে এবং এর থেকে মুক্তি পেতে, আমরা মনোবিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনা করেছি।

কেন শরতে বেশি ক্লান্তি অনুভূত হয়?

মনোবিজ্ঞানী ড. এরিকা ডি ল্যাঞ্জ বলেন, “শরতে অনেকেই ক্লান্তি অনুভব করেন, এবং এর পেছনে মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরবৃত্তীয় কারণ রয়েছে।”

একটি বড় কারণ হলো সূর্যের আলো কমে যাওয়া। “আলোর প্রভাব আমাদের শরীরের ভেতরকার ঘড়ি, যা স্বস্তি এবং ঘুমের সময়নির্ধারণ করে, তার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে,” বলেন ড. ডি ল্যাঞ্জ। শীতকালে দিনের আলো কমে যাওয়ার ফলে আমাদের শরীরকে সজাগ এবং সতেজ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

এছাড়া, কম আলো মানে হলো আমাদের ব্রেইন কম সেরোটোনিন তৈরি করে, যা মুড এবং শক্তির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সেরোটোনিনের কম মাত্রা আমাদের ক্লান্ত এবং মেজাজহীন করে তোলে।

মৌসুমী অবসাদ: শরতের পরিণতি

ড. রবি গিল বলেন, “শরতের পরিবর্তন অনেকের জন্য মানসিক ক্লান্তির কারণ হতে পারে, যা ‘মৌসুমী অবসাদ’ নামে পরিচিত।” এটি সাধারণত জীবনের চাপের কারণে হয়, যেমন নতুন কাজের চাপ বা নতুন স্কুল টার্ম শুরু হওয়া।

এছাড়া, শরতের সাথে যুক্ত শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনগুলি যেমন কম আলো, কম সেরোটোনিন, এবং মেলাটোনিনের প্রভাবও ক্লান্তি সৃষ্টি করে।

মৌসুমী ক্লান্তি কাটানোর জন্য ১০টি উপায়

১. সূর্যের আলোতে সময় কাটান: সকালের বা দুপুরের সূর্যালোকের মধ্যে বাইরে থাকুন যাতে শরীরের ঘড়ি ঠিক থাকে এবং শক্তি বজায় থাকে।
২. শরীরচর্চা করুন: প্রতিদিন মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম বা সাইক্লিং করুন।
৩. পুষ্টিকর খাবার খান: মৌসুমী ফল, শাকসবজি এবং পূর্ণ শস্য খান যাতে শক্তির স্তর স্থিতিশীল থাকে।
৪. প্রচুর পানি পান করুন: শীতকালেও পানি বা হারবাল চা পান করতে ভুলবেন না, কারণ পানির অভাব ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
৫. মনোযোগী হন: ধ্যান বা মনোযোগী চর্চা চাপ কমায় এবং শক্তি বাড়ায়।
৬. নিয়মিত ঘুম: একই সময়ে বিছানায় যান এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করুন।
৭. স্ট্রেস কমান: বেশি চিনি এবং ক্যাফেইন খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলি মাঝে মাঝে শক্তি দেয় কিন্তু পরে তীব্র ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
৮. মনের পরিবর্তন করুন: গ্রীষ্মের ক্ষতি না ভেবে শরতের ইতিবাচক দিকগুলো যেমন আরামদায়ক রুটিন বা মৌসুমী খাবারকে উপভোগ করুন।
৯. ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: ক্লান্তি বেশি হলে কাজগুলো ছোট ছোট ধাপে ভাগ করুন।
১০. নিজেকে সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করুন: ক্লান্তিকে দুর্বলতা হিসেবে না দেখে মৌসুমী পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রহণ করুন।


শরতের ক্লান্তি একটি স্বাভাবিক ঘটনা হলেও, এই সময়ে শরীর এবং মনকে সতেজ রাখতে কিছু প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করলে সহজেই এটি মোকাবিলা করা যায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের বৃদ্ধি: কারণ ও প্রভাব

শরতের ক্লান্তি কাটানোর প্রাকৃতিক উপায়

১২:৩৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

শরতের ক্লান্তি: কেন হয় এবং কীভাবে মোকাবিলা করবেন

শরতের শুরুতেই শীতল বাতাস এবং সোনালী-কমলা পাতাগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ঋতু পরিবর্তন এসে গেছে। যদি আপনি অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত, মনমরা বা শক্তিহীনতা অনুভব করছেন, তবে এটি কি শুধু ছুটির পরের অবসাদ, নাকি এর পিছনে কিছু বড় কারণ রয়েছে? এই মৌসুমী ক্লান্তির কারণ সম্পর্কে জানতে এবং এর থেকে মুক্তি পেতে, আমরা মনোবিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনা করেছি।

কেন শরতে বেশি ক্লান্তি অনুভূত হয়?

মনোবিজ্ঞানী ড. এরিকা ডি ল্যাঞ্জ বলেন, “শরতে অনেকেই ক্লান্তি অনুভব করেন, এবং এর পেছনে মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরবৃত্তীয় কারণ রয়েছে।”

একটি বড় কারণ হলো সূর্যের আলো কমে যাওয়া। “আলোর প্রভাব আমাদের শরীরের ভেতরকার ঘড়ি, যা স্বস্তি এবং ঘুমের সময়নির্ধারণ করে, তার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে,” বলেন ড. ডি ল্যাঞ্জ। শীতকালে দিনের আলো কমে যাওয়ার ফলে আমাদের শরীরকে সজাগ এবং সতেজ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

এছাড়া, কম আলো মানে হলো আমাদের ব্রেইন কম সেরোটোনিন তৈরি করে, যা মুড এবং শক্তির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সেরোটোনিনের কম মাত্রা আমাদের ক্লান্ত এবং মেজাজহীন করে তোলে।

মৌসুমী অবসাদ: শরতের পরিণতি

ড. রবি গিল বলেন, “শরতের পরিবর্তন অনেকের জন্য মানসিক ক্লান্তির কারণ হতে পারে, যা ‘মৌসুমী অবসাদ’ নামে পরিচিত।” এটি সাধারণত জীবনের চাপের কারণে হয়, যেমন নতুন কাজের চাপ বা নতুন স্কুল টার্ম শুরু হওয়া।

এছাড়া, শরতের সাথে যুক্ত শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনগুলি যেমন কম আলো, কম সেরোটোনিন, এবং মেলাটোনিনের প্রভাবও ক্লান্তি সৃষ্টি করে।

মৌসুমী ক্লান্তি কাটানোর জন্য ১০টি উপায়

১. সূর্যের আলোতে সময় কাটান: সকালের বা দুপুরের সূর্যালোকের মধ্যে বাইরে থাকুন যাতে শরীরের ঘড়ি ঠিক থাকে এবং শক্তি বজায় থাকে।
২. শরীরচর্চা করুন: প্রতিদিন মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম বা সাইক্লিং করুন।
৩. পুষ্টিকর খাবার খান: মৌসুমী ফল, শাকসবজি এবং পূর্ণ শস্য খান যাতে শক্তির স্তর স্থিতিশীল থাকে।
৪. প্রচুর পানি পান করুন: শীতকালেও পানি বা হারবাল চা পান করতে ভুলবেন না, কারণ পানির অভাব ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
৫. মনোযোগী হন: ধ্যান বা মনোযোগী চর্চা চাপ কমায় এবং শক্তি বাড়ায়।
৬. নিয়মিত ঘুম: একই সময়ে বিছানায় যান এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করুন।
৭. স্ট্রেস কমান: বেশি চিনি এবং ক্যাফেইন খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলি মাঝে মাঝে শক্তি দেয় কিন্তু পরে তীব্র ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
৮. মনের পরিবর্তন করুন: গ্রীষ্মের ক্ষতি না ভেবে শরতের ইতিবাচক দিকগুলো যেমন আরামদায়ক রুটিন বা মৌসুমী খাবারকে উপভোগ করুন।
৯. ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: ক্লান্তি বেশি হলে কাজগুলো ছোট ছোট ধাপে ভাগ করুন।
১০. নিজেকে সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করুন: ক্লান্তিকে দুর্বলতা হিসেবে না দেখে মৌসুমী পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রহণ করুন।


শরতের ক্লান্তি একটি স্বাভাবিক ঘটনা হলেও, এই সময়ে শরীর এবং মনকে সতেজ রাখতে কিছু প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করলে সহজেই এটি মোকাবিলা করা যায়।