মার্কিন চাপের বিরুদ্ধে ভেনিজুয়েলার প্রস্তুতি
ভেনিজুয়েলা তার কারিবীয় উপকূলে সেনা পাঠিয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো দাবি করেছেন যে দেশটির মিলিশিয়া মিলিয়ন-জনবল নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধের প্রস্তুতি হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে, যা ১৯৮০ দশকের পর থেকে সবচেয়ে বড় আকারে কারিবীয় অঞ্চলে জড়ো হচ্ছে।
প্রচারণার শক্তি
ভেনিজুয়েলা সরকারের প্রচারণা মেশিন পুরো শক্তিতে চলছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন, রেডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ভেনিজুয়েলাবাসীকে জানানো হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র একটি লোভী ও নাৎসী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র যা ভেনিজুয়েলার তেলসম্পদ দখল করতে চায়। তবে সরকারের দাবি, তাদের জাতীয় বলিভারিয়ান সশস্ত্র বাহিনী দেশের প্রতিরক্ষা সুরক্ষায় পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
সামরিক শক্তি এবং শারীরিক প্রস্তুতি
প্রচারিত ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুরুষ ও মহিলারা মিলিশিয়া প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে তারা বাধাপথ পেরিয়ে, কাঁটাতারের নিচ দিয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছে এবং রাইফেল নিয়ে অনুশীলন করছে। ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনীর সদস্যরা অস্থায়ী বাহনগুলোর উপর উঠে এবং গোলাবারুদ সরানোসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া, রুশ তৈরি যুদ্ধবিমানও আকাশে উড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতি
যুক্তরাষ্ট্র তার শক্তি বৃদ্ধি করেছে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আটটি নৌযান, একটি সাবমেরিন, F-35B যুদ্ধবিমান, P-8 পসেইডন গুপ্তচর বিমান এবং MQ-9 রিপার ড্রোন। পেন্টাগন তার বিশেষ অপারেশন বাহিনীও মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৬০ তম বিশেষ অভিযান বিমান রেজিমেন্ট, যা গ্রীন বেরেট, নেভি সীল এবং ডেলটা ফোর্সের জন্য কাজ করে।
ভেনিজুয়েলার সামরিক দুর্বলতা
যদিও মাদুরো সেনা পাঠানোর দাবি করছেন, বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দেশটির সামরিক বাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত শক্তি রাখে না। ভেনিজুয়েলা যে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তা মূলত সময়ক্ষেপণ করার জন্য। দেশটির অর্থনীতি ব্যাপক পতনে রয়েছে এবং সামরিক বাহিনী নানা কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
জনগণের দৃঢ়তা
ভেনিজুয়েলার জনগণ জানিয়েছে, তারা দেশের সুরক্ষার জন্য তাদের জীবন দিতে প্রস্তুত। “আমরা স্পষ্ট, আমাদের জীবন দিয়ে দেশের রক্ষা করতে হবে,” বলেছেন কারাকাসের এক কমিউনিটি নেতা ব্লানকা সোতো।
সরকারী প্রতিক্রিয়া
মাদুরো এবং তার সরকারী শীর্ষ নেতারা সামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তুত করতে ব্যস্ত রয়েছেন। তারা দেশটির আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যদের মিলিশিয়ায় যুক্ত করার চেষ্টা করছেন এবং মার্কিন আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য আরও লোক সংগ্রহ করছেন।
সামরিক পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা
ভেনিজুয়েলার অর্থনীতি এবং সামরিক বাহিনী কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত। বহু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা দেশ ত্যাগ করেছেন এবং সরকার শুধুমাত্র মাদুরোর অনুগতদের নিয়োগ দিচ্ছে। সাধারণ সৈন্যদের খাবারের অভাব এবং প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে, যার ফলে তাদের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ।
ভেনিজুয়েলা বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার জন্য প্রস্তুত নয়। মাদুরো সরকার জানে যে, এই পরিস্থিতি তাদের জন্য এক ধরনের অচিরাচর সময়ের অপেক্ষায়, যদিও তারা জানে এটি এক হারানো যুদ্ধ।
#Venezuela #USPressure #MilitaryStrength #CaribbeanTensions #Maduro #BolivarianMilitia