০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
স্বপ্ন, পুরাণ ও কূটনীতি: শিল্পে নতুন সেতু গড়ছে ভারত–রাশিয়া ভারত বদলেছে, কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট: পুতিন যুক্তরাষ্ট্রে H-1B ভিসায় সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনা আরও কঠোর হচ্ছে যদি আমেরিকা রাশিয়ান তেল কিনতে পারে, তবে ভারত কেন নয়?: পুতিন গ্রামীণ ব্যাংক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত আমেরিকান ইংরেজির প্রভাব ব্রিটিশ ইংরেজিতে পুতিন-মোদী সাক্ষাৎ: প্রতিরক্ষা চুক্তি, বাণিজ্য ও কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ ২০২৬ সালে সোনার দাম কোন পথে যাবে? রেকর্ড গড়ার পর বাজারে অনিশ্চয়তা ওকলাহোমায় লিঙ্গ এবং ধর্ম সম্পর্কিত একটি শিক্ষার্থীর প্রবন্ধ জাতীয় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা: অগ্রগতি নেই, যুদ্ধ থামানো কঠিন

ভালো স্মৃতি চাই? আগে ‘স্মৃতি’ বলতে কী বোঝায় তা নতুন করে ভাবুন

বিজ্ঞান, অভ্যাস ও প্রচলিত ভুল ধারণা
নতুন গবেষণা বলছে—আমাদের স্মৃতি কোনো হার্ডড্রাইভ নয়; এটি এক ধরনের গল্প–গঠনকারী ব্যবস্থা, যা বর্তমান প্রয়োজন মেটাতে অতীতকে পুনর্নির্মাণ করে। রবিবার প্রকাশিত এক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, ছবি–তোলা–মতো নির্ভুলতা খোঁজার বদলে শেখা শক্তিশালী হয় যখন আমরা ‘স্পেসিং’ করি, নিজে নিজে মনে করে (রিট্রিভাল) যাচাই করি, আর তথ্যকে গল্প বা পরিচিত স্থানের সঙ্গে যুক্ত করি। ঘুম, অ্যারোবিক ব্যায়াম ও স্ট্রেস–নিয়ন্ত্রণও জরুরি, কারণ স্মৃতি–কনসোলিডেশন বিশ্রামের ওপর নির্ভরশীল এবং দীর্ঘস্থায়ী চাপ মনোযোগ–ব্যবস্থাকে দুর্বল করে।
কয়েকটি ভ্রান্ত ধারণা ভাঙা দরকার। ‘ব্রেইন–গেম’ সাধারণত সীমিত দক্ষতা বাড়ায়, সর্বজনীন উন্নতি নয়। বই বারবার পড়া পরীক্ষায় ততটা কাজে দেয় না, নিজেরে প্রশ্ন করে স্মৃতি টেকসই হয়। ‘ক্র্যামিং’ অল্প–সময় কাজে লাগলেও দ্রুত ভুলে যায়। আর একসাথে বহু কাজ (মাল্টিটাস্কিং) আসলে এনকোডিং–প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে—মনোযোগই প্রবেশদ্বার। সবচেয়ে বড় বিষয়—স্মৃতি এক ধরনের পরিচয়ের কাজও; অভিজ্ঞতাকে নতুন ফ্রেমে দেখলে আমরা তা বয়ে বেড়ানোর ধরন বদলে ফেলি, তাই থেরাপিতেও পুরোনো স্মৃতিকে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যবহারিক কৌশল: কীভাবে স্মৃতি ‘স্টিকি’ করবেন
প্রথমে শেখার মাঝে ইচ্ছাকৃত বিরতি রাখুন—কয়েক দিন ধরে ছোট সেশন। কাছাকাছি বিষয়ের মধ্যে পালা বদল (ইন্টারলিভিং) করুন, যাতে ঠিক পদ্ধতিটি তুলতে হয়। পরের ধাপ—পড়াকে কুইজে রূপ দিন: বই বন্ধ করে মূল কথাগুলো মনে করুন, তারপর মিলিয়ে নিন। তৃতীয়ত, ‘কিউ’–কে দৃশ্যমান করুন—নতুন ধারণাকে প্রাণবন্ত ছবি বা পরিচিত রুটের সঙ্গে জুড়ে দিন (মেমরি প্যালেস)। চতুর্থত, ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন; ডিপ স্লিপ ও আরইএম স্মৃতিকে ভঙ্গুর অবস্থা থেকে স্থায়ী নেটওয়ার্কে তোলে। শেষে, স্ট্রেস–লোড সীমিত রাখুন—হাঁটা, শ্বাস–ব্যায়াম বা প্রকৃতির সংস্পর্শ; কারণ কর্টিসল–অ্যাড্রেনালিন এনকোডিং নষ্ট করতে পারে।
বাস্তব প্রত্যাশা রাখুন। বয়স, প্রেক্ষাপট ও মনোযোগ–ভাঙা স্ক্রল—সব মিলিয়ে “ভুলে যাচ্ছি” মনে হতে পারে; তবু ধারাবাহিক কৌশল কাজ দেয়। শিক্ষার্থীর জন্য সাপ্তাহিক রিট্রিভাল–প্র্যাকটিস ও স্পেসড–রিভিউ; পেশাজীবীর জন্য নাম–সঙ্গে প্রসঙ্গ জোড়া; সেবাদাতার জন্য ছবি ও রুটিন দিয়ে পরিচিতি–নোঙর করা—এসবই প্রযোজ্য।
ফোনকে ‘প্রস্থেটিক’ স্মৃতি বানানোও খারাপ নয়—যদি আমরা বুঝে নেই কোনটা বাইরে রাখব, কোনটা মাথায় ধরে রাখব। স্মৃতিকে গল্প–গঠনকারী হিসেবে দেখলে লক্ষ্য আরেকটু মানবিক হয়: নিখুঁত স্মরণ নয়, বরং কার্যকর, দীর্ঘস্থায়ী জীবন–স্ক্রিপ্ট তৈরি।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্বপ্ন, পুরাণ ও কূটনীতি: শিল্পে নতুন সেতু গড়ছে ভারত–রাশিয়া

ভালো স্মৃতি চাই? আগে ‘স্মৃতি’ বলতে কী বোঝায় তা নতুন করে ভাবুন

০৫:০০:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

বিজ্ঞান, অভ্যাস ও প্রচলিত ভুল ধারণা
নতুন গবেষণা বলছে—আমাদের স্মৃতি কোনো হার্ডড্রাইভ নয়; এটি এক ধরনের গল্প–গঠনকারী ব্যবস্থা, যা বর্তমান প্রয়োজন মেটাতে অতীতকে পুনর্নির্মাণ করে। রবিবার প্রকাশিত এক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, ছবি–তোলা–মতো নির্ভুলতা খোঁজার বদলে শেখা শক্তিশালী হয় যখন আমরা ‘স্পেসিং’ করি, নিজে নিজে মনে করে (রিট্রিভাল) যাচাই করি, আর তথ্যকে গল্প বা পরিচিত স্থানের সঙ্গে যুক্ত করি। ঘুম, অ্যারোবিক ব্যায়াম ও স্ট্রেস–নিয়ন্ত্রণও জরুরি, কারণ স্মৃতি–কনসোলিডেশন বিশ্রামের ওপর নির্ভরশীল এবং দীর্ঘস্থায়ী চাপ মনোযোগ–ব্যবস্থাকে দুর্বল করে।
কয়েকটি ভ্রান্ত ধারণা ভাঙা দরকার। ‘ব্রেইন–গেম’ সাধারণত সীমিত দক্ষতা বাড়ায়, সর্বজনীন উন্নতি নয়। বই বারবার পড়া পরীক্ষায় ততটা কাজে দেয় না, নিজেরে প্রশ্ন করে স্মৃতি টেকসই হয়। ‘ক্র্যামিং’ অল্প–সময় কাজে লাগলেও দ্রুত ভুলে যায়। আর একসাথে বহু কাজ (মাল্টিটাস্কিং) আসলে এনকোডিং–প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে—মনোযোগই প্রবেশদ্বার। সবচেয়ে বড় বিষয়—স্মৃতি এক ধরনের পরিচয়ের কাজও; অভিজ্ঞতাকে নতুন ফ্রেমে দেখলে আমরা তা বয়ে বেড়ানোর ধরন বদলে ফেলি, তাই থেরাপিতেও পুরোনো স্মৃতিকে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যবহারিক কৌশল: কীভাবে স্মৃতি ‘স্টিকি’ করবেন
প্রথমে শেখার মাঝে ইচ্ছাকৃত বিরতি রাখুন—কয়েক দিন ধরে ছোট সেশন। কাছাকাছি বিষয়ের মধ্যে পালা বদল (ইন্টারলিভিং) করুন, যাতে ঠিক পদ্ধতিটি তুলতে হয়। পরের ধাপ—পড়াকে কুইজে রূপ দিন: বই বন্ধ করে মূল কথাগুলো মনে করুন, তারপর মিলিয়ে নিন। তৃতীয়ত, ‘কিউ’–কে দৃশ্যমান করুন—নতুন ধারণাকে প্রাণবন্ত ছবি বা পরিচিত রুটের সঙ্গে জুড়ে দিন (মেমরি প্যালেস)। চতুর্থত, ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন; ডিপ স্লিপ ও আরইএম স্মৃতিকে ভঙ্গুর অবস্থা থেকে স্থায়ী নেটওয়ার্কে তোলে। শেষে, স্ট্রেস–লোড সীমিত রাখুন—হাঁটা, শ্বাস–ব্যায়াম বা প্রকৃতির সংস্পর্শ; কারণ কর্টিসল–অ্যাড্রেনালিন এনকোডিং নষ্ট করতে পারে।
বাস্তব প্রত্যাশা রাখুন। বয়স, প্রেক্ষাপট ও মনোযোগ–ভাঙা স্ক্রল—সব মিলিয়ে “ভুলে যাচ্ছি” মনে হতে পারে; তবু ধারাবাহিক কৌশল কাজ দেয়। শিক্ষার্থীর জন্য সাপ্তাহিক রিট্রিভাল–প্র্যাকটিস ও স্পেসড–রিভিউ; পেশাজীবীর জন্য নাম–সঙ্গে প্রসঙ্গ জোড়া; সেবাদাতার জন্য ছবি ও রুটিন দিয়ে পরিচিতি–নোঙর করা—এসবই প্রযোজ্য।
ফোনকে ‘প্রস্থেটিক’ স্মৃতি বানানোও খারাপ নয়—যদি আমরা বুঝে নেই কোনটা বাইরে রাখব, কোনটা মাথায় ধরে রাখব। স্মৃতিকে গল্প–গঠনকারী হিসেবে দেখলে লক্ষ্য আরেকটু মানবিক হয়: নিখুঁত স্মরণ নয়, বরং কার্যকর, দীর্ঘস্থায়ী জীবন–স্ক্রিপ্ট তৈরি।