০৮:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
স্বপ্ন, পুরাণ ও কূটনীতি: শিল্পে নতুন সেতু গড়ছে ভারত–রাশিয়া ভারত বদলেছে, কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট: পুতিন যুক্তরাষ্ট্রে H-1B ভিসায় সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনা আরও কঠোর হচ্ছে যদি আমেরিকা রাশিয়ান তেল কিনতে পারে, তবে ভারত কেন নয়?: পুতিন গ্রামীণ ব্যাংক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত আমেরিকান ইংরেজির প্রভাব ব্রিটিশ ইংরেজিতে পুতিন-মোদী সাক্ষাৎ: প্রতিরক্ষা চুক্তি, বাণিজ্য ও কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ ২০২৬ সালে সোনার দাম কোন পথে যাবে? রেকর্ড গড়ার পর বাজারে অনিশ্চয়তা ওকলাহোমায় লিঙ্গ এবং ধর্ম সম্পর্কিত একটি শিক্ষার্থীর প্রবন্ধ জাতীয় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা: অগ্রগতি নেই, যুদ্ধ থামানো কঠিন

মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা: অগ্রগতি নেই, যুদ্ধ থামানো কঠিন

মস্কোতে আলোচনা: সামান্য অগ্রগতি

মস্কোতে ইউক্রেনের যুদ্ধ সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা কোনো তৃপ্তিদায়ক ফলাফল নিয়ে আসেনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় কোনো ধরনের সমঝোতা হয়নি। ক্রীমলিনের মতে, রাশিয়ার সামরিক সাফল্যগুলোই যুক্তরাষ্ট্রকে বেশিরভাগ সময়ের জন্য নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে। তবে, ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তারা এখনও সন্দিহান যে, পুতিন কি সত্যিই যুদ্ধ সমাধানে আগ্রহী।

আলোচনার বিষয়ে প্রধান বক্তব্য

রাশিয়ার প্রধান পররাষ্ট্রনীতির উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেছেন, “এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতা পাওয়া যায়নি, তবে কিছু মার্কিন প্রস্তাব মোটামুটি গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, রাশিয়ার সামরিক সাফল্য আলোচনা প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পুতিনের মতে, কোনো চুক্তি হতে হলে তা “মাঠের বাস্তবতায়” ভিত্তি করা উচিত, এবং রাশিয়া বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছে, সে কারণে তিনি কোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত নন।

ইউক্রেনের পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার অগ্রগতি

রাশিয়ার সেনাবাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ শহর পোক্রোভস্ক দখল করেছে, যা রাশিয়ার সেনাদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করার পথ খুলে দিতে পারে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শহরটি এখনও তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছে, তবে ন্যাটো কর্মকর্তারা বলছেন, এই মুহূর্তে পুরো দোনেৎস্কের দখল সম্ভব নয়। তারা ধারণা করছেন যে, রাশিয়ার পক্ষে এটি সম্পূর্ণ দখল করতে আরও এক থেকে দুই বছর সময় লাগবে।

মার্কিন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার ফলাফল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল, যা প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারসহ গঠিত, পুতিনকে চারটি আলাদা নথি উপস্থাপন করেছে। ক্রীমলিন জানায়, তারা আলোচনা বিষয়ক কোনো তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করবে না, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চারটি নথি মূল 28-পয়েন্ট পরিকল্পনাটির বিষয়বস্তু পৃথকভাবে ভাগ করে।

এদিকে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ইউক্রেনীয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং একটি পরবর্তী আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রস্তুতি চলছে।

ইউক্রেনের অবস্থান এবং ইউরোপের উদ্বেগ

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্কট এবং আর্থিক চাপের কারণে, ইউক্রেনের অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। ইউরোপীয়রা যে অনুকূল আলোচনা তৈরির চেষ্টা করছে তা আরও কিছুটা জটিল হয়ে উঠেছে, কারণ তারা রাশিয়ার গ্যাস থেকে নিজেদের মুক্ত করতে চায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ান গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে, যদিও ২০২২ সালের ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই ইউরোপীয়রা রাশিয়ান গ্যাস আমদানিতে ব্যাপক হ্রাস করেছে।

যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব

এদিকে, রাশিয়া যুদ্ধের খরচ এবং তেলের রাজস্ব কমে যাওয়ার কারণে আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে। নতুন অনুমোদিত রাশিয়ার ত্রৈমাসিক বাজেটে একটি বড় ঘাটতির পূর্বাভাস রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার খরচ এখন দুই পক্ষের জন্যই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এবং এটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি উদ্যোগের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করতে পারে।

 

পুতিনের অবস্থান

বিশেষজ্ঞ ভ্লাদিমির পাস্তুখভের মতে, পুতিন এখনও এমন অবস্থায় নেই যে, তিনি যেকোনো মূল্যে শান্তি চান। তিনি কেবলমাত্র এমন শর্তে যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত, যা রাশিয়ার জন্য উপকারী। এটি নির্দেশ করে যে, যুদ্ধের সমাপ্তি এখনো অনেক দূরের ব্যাপার।

সমঝোতা কীভাবে সম্ভব হবে?

টাতিয়ানা স্টানোভায়ার মতে, মস্কো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ প্রয়োগ করতে চাইছে যেন তারা কিয়েভকে এই শর্তগুলো মেনে নিতে বাধ্য করে। তবে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কিয়েভের জন্য কোনো ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি গ্রহণযোগ্য হবে, এবং সংঘাতের কোথায় স্থগিত করা হবে।


জনপ্রিয় সংবাদ

স্বপ্ন, পুরাণ ও কূটনীতি: শিল্পে নতুন সেতু গড়ছে ভারত–রাশিয়া

মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা: অগ্রগতি নেই, যুদ্ধ থামানো কঠিন

০৭:৪৬:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

মস্কোতে আলোচনা: সামান্য অগ্রগতি

মস্কোতে ইউক্রেনের যুদ্ধ সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা কোনো তৃপ্তিদায়ক ফলাফল নিয়ে আসেনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় কোনো ধরনের সমঝোতা হয়নি। ক্রীমলিনের মতে, রাশিয়ার সামরিক সাফল্যগুলোই যুক্তরাষ্ট্রকে বেশিরভাগ সময়ের জন্য নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে। তবে, ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তারা এখনও সন্দিহান যে, পুতিন কি সত্যিই যুদ্ধ সমাধানে আগ্রহী।

আলোচনার বিষয়ে প্রধান বক্তব্য

রাশিয়ার প্রধান পররাষ্ট্রনীতির উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেছেন, “এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতা পাওয়া যায়নি, তবে কিছু মার্কিন প্রস্তাব মোটামুটি গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, রাশিয়ার সামরিক সাফল্য আলোচনা প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পুতিনের মতে, কোনো চুক্তি হতে হলে তা “মাঠের বাস্তবতায়” ভিত্তি করা উচিত, এবং রাশিয়া বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছে, সে কারণে তিনি কোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত নন।

ইউক্রেনের পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার অগ্রগতি

রাশিয়ার সেনাবাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ শহর পোক্রোভস্ক দখল করেছে, যা রাশিয়ার সেনাদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করার পথ খুলে দিতে পারে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শহরটি এখনও তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছে, তবে ন্যাটো কর্মকর্তারা বলছেন, এই মুহূর্তে পুরো দোনেৎস্কের দখল সম্ভব নয়। তারা ধারণা করছেন যে, রাশিয়ার পক্ষে এটি সম্পূর্ণ দখল করতে আরও এক থেকে দুই বছর সময় লাগবে।

মার্কিন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার ফলাফল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল, যা প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারসহ গঠিত, পুতিনকে চারটি আলাদা নথি উপস্থাপন করেছে। ক্রীমলিন জানায়, তারা আলোচনা বিষয়ক কোনো তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করবে না, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চারটি নথি মূল 28-পয়েন্ট পরিকল্পনাটির বিষয়বস্তু পৃথকভাবে ভাগ করে।

এদিকে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ইউক্রেনীয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং একটি পরবর্তী আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রস্তুতি চলছে।

ইউক্রেনের অবস্থান এবং ইউরোপের উদ্বেগ

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্কট এবং আর্থিক চাপের কারণে, ইউক্রেনের অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। ইউরোপীয়রা যে অনুকূল আলোচনা তৈরির চেষ্টা করছে তা আরও কিছুটা জটিল হয়ে উঠেছে, কারণ তারা রাশিয়ার গ্যাস থেকে নিজেদের মুক্ত করতে চায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ান গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে, যদিও ২০২২ সালের ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই ইউরোপীয়রা রাশিয়ান গ্যাস আমদানিতে ব্যাপক হ্রাস করেছে।

যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব

এদিকে, রাশিয়া যুদ্ধের খরচ এবং তেলের রাজস্ব কমে যাওয়ার কারণে আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে। নতুন অনুমোদিত রাশিয়ার ত্রৈমাসিক বাজেটে একটি বড় ঘাটতির পূর্বাভাস রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার খরচ এখন দুই পক্ষের জন্যই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এবং এটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি উদ্যোগের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করতে পারে।

 

পুতিনের অবস্থান

বিশেষজ্ঞ ভ্লাদিমির পাস্তুখভের মতে, পুতিন এখনও এমন অবস্থায় নেই যে, তিনি যেকোনো মূল্যে শান্তি চান। তিনি কেবলমাত্র এমন শর্তে যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত, যা রাশিয়ার জন্য উপকারী। এটি নির্দেশ করে যে, যুদ্ধের সমাপ্তি এখনো অনেক দূরের ব্যাপার।

সমঝোতা কীভাবে সম্ভব হবে?

টাতিয়ানা স্টানোভায়ার মতে, মস্কো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ প্রয়োগ করতে চাইছে যেন তারা কিয়েভকে এই শর্তগুলো মেনে নিতে বাধ্য করে। তবে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কিয়েভের জন্য কোনো ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি গ্রহণযোগ্য হবে, এবং সংঘাতের কোথায় স্থগিত করা হবে।