বান্দরবানের রোয়াংছড়ি বাস স্টেশন এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটে কনটেন্ট আপলোডের অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। দম্পতির তৈরি ১১২টি ভিডিও অনলাইনে ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে।
অভিযুক্ত দম্পতির পরিচয়
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মোহাম্মদ আজিম (২৮) ও তার স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট তৈরি ও প্রকাশ করছিলেন। বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আনে দেশীয় ওয়েবসাইট ‘দ্য ডিসেন্ট’।
কার্যক্রম ও অনুসন্ধানের তথ্য
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ২০২৪ সালের মে মাসে তারা প্রথম ভিডিও প্রকাশ করেন। এক বছরের মধ্যে তারা মোট ১১২টি ভিডিও প্রকাশ করেন, যা বিশ্বজুড়ে ২ কোটি ৬৭ লাখ বারের বেশি দেখা হয়েছে।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা জানান, “ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তথ্য যাচাই শেষে ঢাকার সিআইডি দল অভিযান পরিচালনা করে।”
গ্রেপ্তার ও হেফাজতে স্থানান্তর
বান্দরবান থানার ওসি মো. পারভেজ জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে আজিম ও বৃষ্টিকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা সিআইডির হেফাজতে রয়েছেন।
আড়ালের পেশা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম
সিআইডির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন খান জানান, দম্পতি বান্দরবানে ফল ব্যবসায়ীর পরিচয়ে অবস্থান করছিলেন।
“তারা একাধিক আন্তর্জাতিক প্রাপ্তবয়স্ক প্ল্যাটফর্মে ভিডিও আপলোড করতেন এবং নিজেদের মডেল হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে—বিশেষ করে টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে—প্রচার করতেন,” তিনি বলেন।
নতুন সদস্য সংগ্রহ ও আর্থিক প্রলোভন
তদন্তে আরও জানা যায়, তারা টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে নগদ অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে নতুন কনটেন্ট নির্মাতাদের যুক্ত করতেন এবং অন্যদেরও একই কাজে উৎসাহিত করতেন।
তাদের সঙ্গে একটি ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ চক্রেরও যোগ থাকতে পারে, যারা অনলাইনে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিল বলে ধারণা করছে সিআইডি।
বিলাসী জীবনযাপন ও জব্দ সামগ্রী
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, সীমিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সাধারণ পরিবারের পটভূমি থাকা সত্ত্বেও দম্পতি অনলাইনে বিলাসবহুল জীবনযাপন প্রদর্শন করতেন।অভিযানকালে সিআইডি তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করেছে।
আইনি প্রক্রিয়া ও চলমান তদন্ত
আজিম ও বৃষ্টির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের, আদালতে সোপর্দ ও রিমান্ড চাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চক্রের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
# বান্দরবান, সিআইডি, পর্নোগ্রাফি, ডিজিটাল অপরাধ, বাংলাদেশ পুলিশ, অনলাইন অপরাধ, সারাক্ষণ রিপোর্ট