০৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
পরিষ্কার জ্বালানির প্রবৃদ্ধিতে বৈশ্বিক নিঃসরণ স্থিতিশীল, তবে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে এআই ব্যবহারের গতি বাড়ায় নতুন নিরাপত্তা স্তর ঘোষণা ওপেনএআইয়ের শীতের শুরুতে যুদ্ধের চাপ বাড়াচ্ছে ইউক্রেন, দীর্ঘ সংঘাতের ইঙ্গিত মস্কোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নতুন কড়াকড়ি, চাপের মুখে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির চাপ বাড়ছে,মানবিক সহায়তা নিয়ে উদ্বেগ চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভিয়েতনামের বিরল খনিজে ১৯ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এলএস ইকো এনার্জির নতুন মুম্বাই বিমানবন্দর চালু, উড়োজাহাজ খাতে আদানির এক লাখ কোটি টাকার বাজি চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত খনি কোম্পানির ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি, ইকুয়েডরের বড় তামা প্রকল্প কিনছে জিয়াংসি কপার সিউলই পারে যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া পরমাণু আলোচনা পুনরুজ্জীবিত করতে: বাস্তবতার পথে নতুন কৌশল মার্কিন বাজারে ভারতের রপ্তানি বাড়লেও ভেতরে দুর্বলতার ইঙ্গিত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১১)

একাদশ পরিচ্ছেদ

ক্রমে হতাশা টু’টি টিপে ধরল আমার। কোথায় যাব আমি, কোথায় খুঁজব? এক সময় কচি ওক্ বনে-ছাওয়া একটা টিলার নিচে এসে পৌঁছলুম, আর ক্লান্ত, অবসন্ন হয়ে সুগন্ধ, বুনো ক্লোভার-ঘাসে ছাওয়া একটা ফাঁকা জায়গায় শুয়ে পড়লুম চুপচাপ। অনেকক্ষণ ওখানে শুয়ে পড়ে রইলুম, আর যতই আমি ঘটনাটার কথা ভাবতে লাগলুম ততই যে-মারাত্মক ভুলটা ঘটে গেছে সেটা আরও জোরালো, আরও স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল মনের কাছে। রক্তচোষা কালো জোঁকের মতো আমার মনের মধ্যে চেপে বসতে লাগল সেই ব্যাপারটা।

না-না, চুবুক আমার উদ্দেশ্যেই থুথু দিয়েছিলেন, আমার দিকেই, অফিসারের দিকে নয় মোটেই। কারণ, চুবুক আসল ব্যাপার কিছু বুঝতে পারেন নি; তিনি সেই কাদেত-ছোকরার কাগজপত্রের ব্যাপার কিছুই জানতেন না, আমিও তাঁকে ও-বিষয়ে কিছু বলতে ভুলে গিয়েছিলুম। প্রথমে চুবুক মনে করেছিলেন, তাঁর মতো আমিও বুঝি বন্দী হয়েছি, কিন্তু পরে যখন তিনি আমাকে সদর দপ্তরের বাইরে সি’ড়িতে বসে থাকতে দেখলেন, বিশেষ করে পরে যখন ক্যাপ্টেনকে আমার কাঁধে বন্ধুভাবে হাত দিতে দেখলেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই ভেবেছিলেন আমি শ্বেতরক্ষীদের পক্ষে চলে গিয়েছি।

শ্বেতরক্ষী অফিসারটি আমার জন্যে যেরকম উদ্বেগ প্রকাশ করছিল আর আমার দিকে যতখানি মনোযোগ দিচ্ছিল তাতে চুবুকের পক্ষে এছাড়া অন্য কোনো কিছু ভাবা সম্ভবই ছিল না, শেষ মুহূর্তে আমার দিকে ওঁর সেই থুথু ছোড়া যেন সালফিউরিক অ্যাসিড দিয়ে আমার সারা দেহ পুড়িয়ে দিচ্ছিল। আরও তীর, তিক্ত, মর্মান্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই চিন্তাটা যে ওই ভুল ধারণা সংশোধনের তখন আর কোনো উপায় ছিল না, এমন আর কেউ ছিল না যার কাছে সমস্ত ব্যাপারটা খুলে বলতে পারতুম আমি, আমার দোষ লাঘব করতে পারতুম। সবচেয়ে বড় কথা, চুবুক আর ছিলেন না, তাঁকে আর আমার দেখার কোনো সম্ভাবনা ছিল না কোনোদিন, সেদিন নয়, তারপরও নয়, আর কোনোদিনও নয়…

জঙ্গলের মধ্যে সেই কাঁড়েয় আমি যে মারাত্মক ভুল আচরণ করেছিলুম তার জন্যে আত্মধিক্কারে বুকটা যেন খানখান হয়ে যাচ্ছিল। অথচ কাছেপিঠে তখন এমন একজনও কেউ ছিল না যার কাছে মনের কথা উজাড় করে দিয়ে একটু হালকা হতে পারতুম। চারিদিকে ছিল শুধুই স্তব্ধতা। আর খালি পাখির কিচিরমিচির, আর ব্যাঙের ডাক।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

পরিষ্কার জ্বালানির প্রবৃদ্ধিতে বৈশ্বিক নিঃসরণ স্থিতিশীল, তবে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১১)

০৮:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

একাদশ পরিচ্ছেদ

ক্রমে হতাশা টু’টি টিপে ধরল আমার। কোথায় যাব আমি, কোথায় খুঁজব? এক সময় কচি ওক্ বনে-ছাওয়া একটা টিলার নিচে এসে পৌঁছলুম, আর ক্লান্ত, অবসন্ন হয়ে সুগন্ধ, বুনো ক্লোভার-ঘাসে ছাওয়া একটা ফাঁকা জায়গায় শুয়ে পড়লুম চুপচাপ। অনেকক্ষণ ওখানে শুয়ে পড়ে রইলুম, আর যতই আমি ঘটনাটার কথা ভাবতে লাগলুম ততই যে-মারাত্মক ভুলটা ঘটে গেছে সেটা আরও জোরালো, আরও স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল মনের কাছে। রক্তচোষা কালো জোঁকের মতো আমার মনের মধ্যে চেপে বসতে লাগল সেই ব্যাপারটা।

না-না, চুবুক আমার উদ্দেশ্যেই থুথু দিয়েছিলেন, আমার দিকেই, অফিসারের দিকে নয় মোটেই। কারণ, চুবুক আসল ব্যাপার কিছু বুঝতে পারেন নি; তিনি সেই কাদেত-ছোকরার কাগজপত্রের ব্যাপার কিছুই জানতেন না, আমিও তাঁকে ও-বিষয়ে কিছু বলতে ভুলে গিয়েছিলুম। প্রথমে চুবুক মনে করেছিলেন, তাঁর মতো আমিও বুঝি বন্দী হয়েছি, কিন্তু পরে যখন তিনি আমাকে সদর দপ্তরের বাইরে সি’ড়িতে বসে থাকতে দেখলেন, বিশেষ করে পরে যখন ক্যাপ্টেনকে আমার কাঁধে বন্ধুভাবে হাত দিতে দেখলেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই ভেবেছিলেন আমি শ্বেতরক্ষীদের পক্ষে চলে গিয়েছি।

শ্বেতরক্ষী অফিসারটি আমার জন্যে যেরকম উদ্বেগ প্রকাশ করছিল আর আমার দিকে যতখানি মনোযোগ দিচ্ছিল তাতে চুবুকের পক্ষে এছাড়া অন্য কোনো কিছু ভাবা সম্ভবই ছিল না, শেষ মুহূর্তে আমার দিকে ওঁর সেই থুথু ছোড়া যেন সালফিউরিক অ্যাসিড দিয়ে আমার সারা দেহ পুড়িয়ে দিচ্ছিল। আরও তীর, তিক্ত, মর্মান্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই চিন্তাটা যে ওই ভুল ধারণা সংশোধনের তখন আর কোনো উপায় ছিল না, এমন আর কেউ ছিল না যার কাছে সমস্ত ব্যাপারটা খুলে বলতে পারতুম আমি, আমার দোষ লাঘব করতে পারতুম। সবচেয়ে বড় কথা, চুবুক আর ছিলেন না, তাঁকে আর আমার দেখার কোনো সম্ভাবনা ছিল না কোনোদিন, সেদিন নয়, তারপরও নয়, আর কোনোদিনও নয়…

জঙ্গলের মধ্যে সেই কাঁড়েয় আমি যে মারাত্মক ভুল আচরণ করেছিলুম তার জন্যে আত্মধিক্কারে বুকটা যেন খানখান হয়ে যাচ্ছিল। অথচ কাছেপিঠে তখন এমন একজনও কেউ ছিল না যার কাছে মনের কথা উজাড় করে দিয়ে একটু হালকা হতে পারতুম। চারিদিকে ছিল শুধুই স্তব্ধতা। আর খালি পাখির কিচিরমিচির, আর ব্যাঙের ডাক।