ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন রেকর্ড হয়েছে। সূচক সামান্য বাড়লেও মোট লেনদেন নেমে এসেছে ৩৫৫ কোটি টাকায়, যা বাজারের নিষ্প্রভ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে।
সামান্য সূচক বৃদ্ধি, কিন্তু বাজারে গতি নেই
ডিএসইর ইতিহাসে এর আগে সর্বশেষ কম লেনদেন হয়েছিল চলতি বছরের ২৩ জুন, যখন ২৭৬ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়। এর আগে সোমবার ৩৯৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল, যা চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল—বুধবারের পরিমাণ সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
দিনশেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স (DSEX) মাত্র ৫ পয়েন্ট বেড়ে সামান্য পুনরুদ্ধার করেছে, যা দিনের শুরুতে পতনের পর হালকা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। অন্যদিকে শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস (DSES) অপরিবর্তিত থাকে এবং ব্লুচিপ সূচক ডিএস৩০ (DS30) ৫ পয়েন্ট বেড়েছে।
বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতন
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৭৮টির শেয়ারের দর কমেছে, ১৪৫টির বেড়েছে, আর ৭৪টি অপরিবর্তিত থেকেছে। দরপতন হওয়া শেয়ারগুলোর অধিকাংশই ‘বি’ ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির, যেসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের তেমন লভ্যাংশ দেয় না।
অন্যদিকে ‘এ’ ক্যাটাগরির মৌলিকভাবে শক্তিশালী কোম্পানিগুলোর মধ্যে তুলনামূলক স্থিতিশীলতা ছিল—১০৫টির দাম বেড়েছে, ৮১টির কমেছে এবং ৩৫টির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ব্লক মার্কেট লেনদেন ও শীর্ষ শেয়ার
ব্লক মার্কেটে ২০টি কোম্পানির মোট ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে সিটি ইন্স্যুরেন্স পিএলসি ছিল শীর্ষে, যার ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
দিনের সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধিকারী শেয়ার ছিল আরামিট লিমিটেড, যার দর প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ছিল দিনের সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানি, যার দর ৯ শতাংশের বেশি কমেছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও পতন
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দিনশেষে অল-শেয়ার মূল্য সূচক (CASPI) ১৩ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়। এখানেও বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে—৯৩টি কমেছে, ৭২টি বেড়েছে, আর ১৮টি অপরিবর্তিত থেকেছে।
সিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা আগের সেশনের ১২ কোটি ২৩ লাখ টাকার চেয়ে সামান্য বেশি।
ডিএসইর মতো এখানেও আরামিট লিমিটেড ছিল শীর্ষ লাভকারী কোম্পানি (১০% বৃদ্ধি), আর ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ছিল সবচেয়ে বড় দরপতনের শিকার, যার দর কমেছে ১০ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা, স্বল্পমেয়াদি মুনাফার প্রবণতা ও তারল্য সংকটের কারণে বাজারে গতিহীনতা দেখা দিয়েছে। সূচক সামান্য ঘুরে দাঁড়ালেও সামগ্রিকভাবে লেনদেনের নিম্নগতি বাজারের আস্থাহীনতার প্রতিফলন।
#t ঢাকা_স্টক_এক্সচেঞ্জ, ডিএসই, পুঁজিবাজার, শেয়ার_লেনদেন, বিনিয়োগ, সিএসই, আর্থিক_সংবাদ, সারাক্ষণ_রিপোর্ট