বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আশা প্রকাশ করেছেন যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন। একই সঙ্গে তিনি রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) সংশোধনের পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে বলেছেন, এটি ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরুৎসাহিত করবে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা
শুক্রবার গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন বলেন,
“আমি বিশ্বাস করি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন। আমরা সবাই তাঁর প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় আছি।”
সাংবাদিকরা যখন জানতে চান, কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারিত হয়েছে কি না, তখন তিনি বলেন,
“খুব শিগগিরই আপনারা নির্দিষ্ট দিন জানতে পারবেন। তবে আশা করছি, নভেম্বরের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন।”
নির্বাচনে তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ
তারেক রহমানের সম্ভাব্য নির্বাচনী আসন প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন,
“তিনি নিজেই একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। কোন আসন থেকে তিনি প্রার্থী হবেন, তা পরে ঠিক করা হবে। তিনি চাইলে বাংলাদেশের যেকোনো আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন,
“আমরা আশা করি আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা অবশ্যই চাই তিনি নির্বাচনে অংশ নিন।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি চলতি মাসের মধ্যেই ২০০ আসনে প্রার্থীদের অনুমোদন দেবে।
নতুন রাজনৈতিক জোটের আলোচনা
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-র সঙ্গে সম্ভাব্য জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“রাজনৈতিক আলোচনা চলছে, তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলাপ-আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দেখা যাক, বিষয়গুলো কীভাবে অগ্রসর হয়।”
আরপিও সংশোধনে অসন্তোষ
আরপিও সংশোধন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সালাহউদ্দিন বলেন,
“এই সংশোধন ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নিরুৎসাহজনক হবে। আমরা বেশ কিছু ধারায় একমত ছিলাম—যেমন ২০(১) উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো দল জোটে যোগ দিলে অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচন করতে পারবে। অধিকাংশ দলই এ পরিবর্তনকে সমর্থন করেছিল।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম এটি যথাযথভাবে বিবেচিত হবে। কিন্তু আরপিও যেভাবে একতরফাভাবে পাস হয়েছে, তা ছোট দলগুলোর জন্য সুযোগ সীমিত করে দিয়েছে। এতে অনেক সিনিয়র নেতারাও বঞ্চিত হবেন।”
‘না’ ভোট ও নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানোর ঘোষণা
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আরপিও কেন একতরফাভাবে পাস করা হলো? বিএনপি চায় একটি প্রাণবন্ত, বহুদলীয় সংসদ। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সালাহউদ্দিন জানান, বিএনপি একক প্রার্থীর আসনে ‘না’ ভোট চালু করার পক্ষে রয়েছে, যাতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হয়।
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি শিগগিরই নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠাবে, যেখানে আরপিও সংশোধনের কিছু ধারা নিয়ে আমাদের আপত্তি জানানো হবে।”
সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যে একদিকে যেমন তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ও দলের নির্বাচনী প্রস্তুতির ইঙ্গিত মেলে, অন্যদিকে আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে ছোট দলগুলোর রাজনৈতিক পরিসর সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কাও স্পষ্ট হয়। বিএনপি এখন অপেক্ষায় আছে—নভেম্বরের মধ্যেই তাদের শীর্ষ নেতার প্রত্যাবর্তন ও নির্বাচনী কৌশলের পরবর্তী ধাপের জন্য।
#রাজনীতি #বিএনপি #তারেকরহমান #সালাহউদ্দিনআহমেদ #নির্বাচন২০২৫ #আরপিওসংশোধন
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















