সিলিকন ভ্যালির আত্মরক্ষার কৌশল
সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট মেটা ঘোষণা করেছে যে কিশোর ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের এআই চ্যাটবট এখন আর সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থাকবে না। নির্দিষ্ট “ক্যারেক্টার” চ্যাটবটগুলো — যেগুলো ব্যক্তিগত সহচরের মতো কথা বলে — সেগুলোর অ্যাক্সেস বাবা-মা চাইলে বন্ধ করতে পারবেন, এমনকি পুরোপুরি ব্লকও করতে পারবেন। কোম্পানি বলছে, মূল সহকারী ধরনের মেটা এআই বট থাকবে, কিন্তু সেটি কিশোরদের জন্য “বয়সোপযোগী সীমা” মেনে চলবে। এই বার্তাটি সরাসরি নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশ্যে: আমরা ঝুঁকি দেখি, আমরা রাশ টানছি, আমাদের ওপর আইন চাপিয়ে দেওয়ার আগে আমাদের কাজ করতে দিন।
স্কুল বোর্ড, মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী ও অনলাইন সুরক্ষা গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করছিল যে “সবসময় পাশে থাকা” এআই ফ্রেন্ড কিশোরদের মানসিকভাবে জড়িয়ে ফেলে। গভীর রাতে, একা স্ক্রল করার সময়, বটটি হয়ে উঠতে পারে এমন এক সঙ্গী যার সামনে কিশোর ব্যবহারকারী সব বলে ফেলে — ভয়, রাগ, লজ্জা। সমালোচকেরা দাবি করেন, কোম্পানিগুলো আগে নির্ভরতা বানাচ্ছে, পরে সেফটি ভাবছে। মেটা এবার বলছে, না, আমরা উল্টো পথে যাচ্ছি: আগে কন্ট্রোল, পরে আরও ঘনিষ্ঠতা।

এআই এখন টিনএজ প্রোডাক্ট
এই বিতর্ক কেবল “অশালীন কন্টেন্ট ব্লক” নয়। বড় টেক কোম্পানিগুলো এখন চাইছে এআইকে কিশোর জীবনের একেবারে প্রতিদিনের সহকারী বানাতে — পড়ার টিউটর, মানসিক কোচ, এমনকি স্টাইলিস্ট যে ফোনের গ্যালারি ঘেঁটে বলে দেবে কী পোস্ট করলে ভালো রিঅ্যাকশন আসবে। কিন্তু যত বেশি এআই মানুষের মতো আচরণ করছে, ততই প্রশ্ন উঠছে: সে কি এমন কথায় ঢুকবে যেগুলো আসলে একজন প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবকের দায়িত্ব? অপমানজনক ভাষা, আত্ম-ক্ষতির ইঙ্গিত, অনলাইন বুলিং, অনুপযুক্ত ঘনিষ্ঠতা — এসব জায়গায় ভুল পদক্ষেপ মানেই আইনি ঝড়।
মেটার নতুন কন্ট্রোলকে তাই দুইভাবে দেখা হচ্ছে। একদিকে এটা বাবা-মাকে শক্তিশালী করে, অন্তত কাগজে-কলমে। অন্যদিকে এটা কোম্পানির আইনি সুরক্ষা ঢাল: “আমরা সতর্ক করেছিলাম, টুল দিয়েছিলাম, সিদ্ধান্ত ছিল পরিবারের।” এখন নজর থাকবে বাকি প্ল্যাটফর্মগুলোর দিকে। তারা কি একই মডেল কপি করবে, নাকি সরকারের তৈরি বাধ্যতামূলক নিয়মের জন্য অপেক্ষা করবে?
সারাক্ষণ রিপোর্ট 

















