০৯:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান এর ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী সিরাজগঞ্জ কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু সেনাপ্রধানের সাথে পাকিস্তানের এর জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শর্ত রাখল এনসিপি বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে এগোতে অঙ্গীকার পৃথিবীতে এখনও ৬৬ কোটি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন জীবন কাটাচ্ছে রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১০) সাজালেন মুফতি মোহেববুল্লাহ’র অপহরণ, তদন্তে বেরিয়ে এলো মিথ্যা নাটক আদালতে চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে জামায়াতের দাবি—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবারের নির্বাচন সম্ভব নয়

যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য আশায় স্বর্ণের চাহিদা কমেছে

বাণিজ্য আশায় স্বর্ণবাজারে পতন

মঙ্গলবার স্বর্ণের দাম টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কমে প্রায় তিন সপ্তাহের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদী মনোভাব বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণ কেনার আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর আসন্ন নীতিগত সিদ্ধান্তের দিকেও এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি নিবদ্ধ।


বাজারের সর্বশেষ পরিস্থিতি

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১২টার দিকে (০৬৫২ জিএমটি) স্পট গোল্ডের দাম ১ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৩,৯৪১.৬৫ ডলারে নেমে আসে—যা ১০ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন।
ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ ফিউচারও ১.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৩,৯৫৭.৫০ ডলারে।


যুক্তরাষ্ট্র–চীন আলোচনায় ইতিবাচক ইঙ্গিত

কেসিএম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করায় নিরাপদ বিনিয়োগের প্রবাহ কমেছে, যা স্বর্ণের দাম কমানোর প্রধান কারণ।”

 

রবিবার দুই দেশের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা একটি বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো নির্ধারণে সমঝোতায় পৌঁছেছেন, যা এই সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চূড়ান্ত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ওয়াটারার আরও বলেন, “যদি ট্রাম্প ও শির বৈঠক ফলপ্রসূ হয়, তবে স্বর্ণবাজারে চাপ থাকতে পারে। তবে ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার কমায় বা ‘নরম’ নীতি অবলম্বন করে, তা স্বর্ণের জন্য সহায়ক হতে পারে।”


এশিয়া সফরে ট্রাম্পের বাণিজ্য উদ্যোগ

এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্ভব। তিনি মালয়েশিয়ায় সফরকালে চারটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ বিষয়ক একাধিক চুক্তির ঘোষণা দেন।
এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোও সাম্প্রতিক উত্থান ধরে রেখেছে, কারণ বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেওয়ার আগ্রহ বাড়িয়েছে।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বাজার

বিনিয়োগকারীদের চোখ এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের দিকে, যেটি বুধবার নীতি সভা শেষে সুদের হার কমাতে পারে বলে বাজারে জোর অনুমান। ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যে ভবিষ্যৎ নীতি নিয়ে দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) ও জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এই সপ্তাহে তাদের নীতি সুদ অপরিবর্তিত রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


বছরের প্রবণতা ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর অবস্থা

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম প্রায় ৫.৩ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০ অক্টোবর রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪,৩৮১.২১ ডলারে পৌঁছেছিল। ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক অস্থিরতা, সুদ কমার সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রমবর্ধমান ক্রয় — সব মিলিয়ে এই ঊর্ধ্বগতি বজায় ছিল।

মঙ্গলবার অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর বাজারেও পতন দেখা গেছে—স্পট সিলভার ০.৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪৬.৫১ ডলার, প্লাটিনাম ২.৬ শতাংশ কমে ১,৫৪৯.৮৫ ডলার এবং প্যালাডিয়াম ১.২ শতাংশ কমে ১,৩৮৫.৫০ ডলারে নেমে আসে।


#ট্যাগ: #স্বর্ণবাজার, #যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য, #ফেডারেল রিজার্ভ, #বৈশ্বিক অর্থনীতি, #কেন্দ্রীয় ব্যাংক, #সোনা, #বাণিজ্য চুক্তি, #সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান এর ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী

যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য আশায় স্বর্ণের চাহিদা কমেছে

০৫:৪৭:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

বাণিজ্য আশায় স্বর্ণবাজারে পতন

মঙ্গলবার স্বর্ণের দাম টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কমে প্রায় তিন সপ্তাহের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদী মনোভাব বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণ কেনার আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর আসন্ন নীতিগত সিদ্ধান্তের দিকেও এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি নিবদ্ধ।


বাজারের সর্বশেষ পরিস্থিতি

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১২টার দিকে (০৬৫২ জিএমটি) স্পট গোল্ডের দাম ১ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৩,৯৪১.৬৫ ডলারে নেমে আসে—যা ১০ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন।
ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ ফিউচারও ১.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৩,৯৫৭.৫০ ডলারে।


যুক্তরাষ্ট্র–চীন আলোচনায় ইতিবাচক ইঙ্গিত

কেসিএম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করায় নিরাপদ বিনিয়োগের প্রবাহ কমেছে, যা স্বর্ণের দাম কমানোর প্রধান কারণ।”

 

রবিবার দুই দেশের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা একটি বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো নির্ধারণে সমঝোতায় পৌঁছেছেন, যা এই সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চূড়ান্ত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ওয়াটারার আরও বলেন, “যদি ট্রাম্প ও শির বৈঠক ফলপ্রসূ হয়, তবে স্বর্ণবাজারে চাপ থাকতে পারে। তবে ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার কমায় বা ‘নরম’ নীতি অবলম্বন করে, তা স্বর্ণের জন্য সহায়ক হতে পারে।”


এশিয়া সফরে ট্রাম্পের বাণিজ্য উদ্যোগ

এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্ভব। তিনি মালয়েশিয়ায় সফরকালে চারটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ বিষয়ক একাধিক চুক্তির ঘোষণা দেন।
এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোও সাম্প্রতিক উত্থান ধরে রেখেছে, কারণ বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেওয়ার আগ্রহ বাড়িয়েছে।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বাজার

বিনিয়োগকারীদের চোখ এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের দিকে, যেটি বুধবার নীতি সভা শেষে সুদের হার কমাতে পারে বলে বাজারে জোর অনুমান। ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যে ভবিষ্যৎ নীতি নিয়ে দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) ও জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এই সপ্তাহে তাদের নীতি সুদ অপরিবর্তিত রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


বছরের প্রবণতা ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর অবস্থা

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম প্রায় ৫.৩ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০ অক্টোবর রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪,৩৮১.২১ ডলারে পৌঁছেছিল। ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক অস্থিরতা, সুদ কমার সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রমবর্ধমান ক্রয় — সব মিলিয়ে এই ঊর্ধ্বগতি বজায় ছিল।

মঙ্গলবার অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর বাজারেও পতন দেখা গেছে—স্পট সিলভার ০.৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪৬.৫১ ডলার, প্লাটিনাম ২.৬ শতাংশ কমে ১,৫৪৯.৮৫ ডলার এবং প্যালাডিয়াম ১.২ শতাংশ কমে ১,৩৮৫.৫০ ডলারে নেমে আসে।


#ট্যাগ: #স্বর্ণবাজার, #যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য, #ফেডারেল রিজার্ভ, #বৈশ্বিক অর্থনীতি, #কেন্দ্রীয় ব্যাংক, #সোনা, #বাণিজ্য চুক্তি, #সারাক্ষণ_রিপোর্ট