০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
নরওয়ের নির্জন পথে হাঁটাঃ ধ্বংসপ্রায় পাহাড়, বন্য জঙ্গল এবং ভেজা পায়ের স্মৃতি সুগন্ধি ও মোহনীয়তার সোনালী অধ্যায়: শালিমারের ১০০ বছর প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২০) ব্যাকস্টেজে নিরাপত্তাকর্মীকে হামলার অভিযোগে অফসেটের বিরুদ্ধে মামলা মাস্টারের কন্যার অজানা গল্প: জন চিভারের পরিবার ও সাহিত্যিক জীবনের অন্তর্দৃষ্টি ম্যাগা যুগের ভাবনার উৎস খোঁজে—‘ফিউরিয়াস মাইন্ডস’-এর গভীর বিশ্লেষণ মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬২) ৩০০ ডলারের ‘স্মার্ট’ পানির বোতল বলছে, সুস্থতা এখন বিলাসের অংশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫১) মৃতদের আহ্বান: মেক্সিকোর মৃত্যু সংস্কৃতির পুনর্মূল্যায়ন

ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত— ভাঙচুর দলীয় কার্যালয় ও মোটরসাইকেল

সংঘর্ষের সূচনা ও স্থান

ভোলায় শনিবার দুপুরে বিএনপি ও আন্দালিব রহমান পার্থ পরিচালিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-র সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাংবাদিকও রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোলা নিউ মার্কেট ও পৌরসভা এলাকার আশপাশে।

কীভাবে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে

সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, একই সময় বিএনপি ও বিজেপি দুটি পৃথক মিছিল বের করলে মুখোমুখি অবস্থানে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রথমে উভয় পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং শেষে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সহিংসতার সময় সড়কে পার্ক করা কয়েকটি মোটরসাইকেল এবং স্থানীয় বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।

পুলিশের হস্তক্ষেপ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে এবং অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে। কিছু সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়, তবে এলাকায় উত্তেজনা দীর্ঘ সময় বিরাজ করে।

বিএনপির অভিযোগ

দিনের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রথমে বিজেপি হামলা চালায়।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রইসুল আলম বলেন, “বাংলা স্কুল ব্রিজ এলাকার কাছে যখন আমাদের মিছিল যাচ্ছিল, তখন বিজেপি কর্মীরা ককটেল ও ইট ছুড়ে আক্রমণ চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন, যাদের অনেককেই হাসপাতালে নিতে হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান ও এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।

বিজেপির পাল্টা অভিযোগ

অন্যদিকে, ভোলা জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোনিরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কর্মীরাই তাদের সমাবেশে হামলা চালিয়েছে এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।
তিনি বলেন, “আমরা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর সমর্থনে লিফলেট বিতরণের সময় হঠাৎ বিএনপি কর্মীরা আক্রমণ করে। আমাদের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।”
তার অভিযোগ, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির একটি অংশ বিজেপির ঐক্য নষ্টের চেষ্টা করছে।

উত্তেজনার প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। দীর্ঘদিনের সম্পর্কহীনতা এবং প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা এই সংঘর্ষের মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভোলার এই সংঘর্ষ কেবল একটি জেলা-স্তরের সহিংসতা নয়, বরং আসন্ন নির্বাচনের আগে বিরোধী রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান ভাঙনের প্রতিচ্ছবি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে নির্বাচনের আগে আরও অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।


#ভোলা_সংঘর্ষ #বিএনপি #বিজেপি #রাজনীতি #বাংলাদেশ_নির্বাচন #সহিংসতা #সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

নরওয়ের নির্জন পথে হাঁটাঃ ধ্বংসপ্রায় পাহাড়, বন্য জঙ্গল এবং ভেজা পায়ের স্মৃতি

ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত— ভাঙচুর দলীয় কার্যালয় ও মোটরসাইকেল

১১:৩৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

সংঘর্ষের সূচনা ও স্থান

ভোলায় শনিবার দুপুরে বিএনপি ও আন্দালিব রহমান পার্থ পরিচালিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-র সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাংবাদিকও রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোলা নিউ মার্কেট ও পৌরসভা এলাকার আশপাশে।

কীভাবে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে

সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, একই সময় বিএনপি ও বিজেপি দুটি পৃথক মিছিল বের করলে মুখোমুখি অবস্থানে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রথমে উভয় পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং শেষে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সহিংসতার সময় সড়কে পার্ক করা কয়েকটি মোটরসাইকেল এবং স্থানীয় বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।

পুলিশের হস্তক্ষেপ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে এবং অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে। কিছু সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়, তবে এলাকায় উত্তেজনা দীর্ঘ সময় বিরাজ করে।

বিএনপির অভিযোগ

দিনের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রথমে বিজেপি হামলা চালায়।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রইসুল আলম বলেন, “বাংলা স্কুল ব্রিজ এলাকার কাছে যখন আমাদের মিছিল যাচ্ছিল, তখন বিজেপি কর্মীরা ককটেল ও ইট ছুড়ে আক্রমণ চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন, যাদের অনেককেই হাসপাতালে নিতে হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান ও এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।

বিজেপির পাল্টা অভিযোগ

অন্যদিকে, ভোলা জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোনিরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কর্মীরাই তাদের সমাবেশে হামলা চালিয়েছে এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।
তিনি বলেন, “আমরা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর সমর্থনে লিফলেট বিতরণের সময় হঠাৎ বিএনপি কর্মীরা আক্রমণ করে। আমাদের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।”
তার অভিযোগ, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির একটি অংশ বিজেপির ঐক্য নষ্টের চেষ্টা করছে।

উত্তেজনার প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। দীর্ঘদিনের সম্পর্কহীনতা এবং প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা এই সংঘর্ষের মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভোলার এই সংঘর্ষ কেবল একটি জেলা-স্তরের সহিংসতা নয়, বরং আসন্ন নির্বাচনের আগে বিরোধী রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান ভাঙনের প্রতিচ্ছবি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে নির্বাচনের আগে আরও অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।


#ভোলা_সংঘর্ষ #বিএনপি #বিজেপি #রাজনীতি #বাংলাদেশ_নির্বাচন #সহিংসতা #সারাক্ষণ_রিপোর্ট