চীনে নিয়ন্ত্রণ বিক্রি, নতুন যৌথ উদ্যোগে বয়ু ক্যাপিটালের শেয়ার ৬০ শতাংশ
বিশ্বখ্যাত কফি ব্র্যান্ড স্টারবাকস ঘোষণা করেছে যে তারা তাদের চীন শাখার নিয়ন্ত্রণ বিক্রি করতে যাচ্ছে বয়ু ক্যাপিটাল নামের একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের কাছে। এই চুক্তির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার, যা সাম্প্রতিক সময়ে কোনো বৈশ্বিক ভোক্তা কোম্পানির চীনা ইউনিট বিক্রির সবচেয়ে বড় চুক্তিগুলোর একটি।
এই চুক্তির আওতায় স্টারবাকস ও বয়ু ক্যাপিটাল যৌথভাবে একটি নতুন উদ্যোগ পরিচালনা করবে। নতুন এই যৌথ কোম্পানিতে বয়ু ক্যাপিটাল থাকবে সর্বাধিক ৬০ শতাংশ মালিকানায়, আর স্টারবাকস রাখবে বাকি ৪০ শতাংশ শেয়ার।
ব্র্যান্ড ও মেধাস্বত্ব থাকবে স্টারবাকসের নিয়ন্ত্রণে
যদিও স্টারবাকস নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে যে তারা এখনো ব্র্যান্ডের মালিক থাকবে এবং নতুন যৌথ উদ্যোগকে তাদের নাম ও মেধাস্বত্ব (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি) ব্যবহারের লাইসেন্স দেবে। অর্থাৎ স্টারবাকসের ব্র্যান্ড ইমেজ, নকশা ও অভিজ্ঞতা অপরিবর্তিত থাকবে।

চীনা বাজারে স্টারবাকসের মোট মূল্য ১৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে
স্টারবাকসের অনুমান, তাদের চীনা খুচরা ব্যবসার মোট মূল্য ১৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এই মূল্য নির্ধারণে যৌথ উদ্যোগে বিক্রি হওয়া নিয়ন্ত্রণমূল্য এবং স্টারবাকসের অবশিষ্ট অংশীদারিত্ব—উভয়ই অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
স্থানীয় প্রতিযোগিতায় বাজার হারাচ্ছে স্টারবাকস
চীনে স্টারবাকসের এই বড় ধরনের বিক্রির সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে কঠিন বাজার প্রতিযোগিতা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থানীয় কফি ব্র্যান্ডগুলো তুলনামূলকভাবে সস্তা দামে পণ্য সরবরাহ করছে, যা অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে গ্রাহকদের অভ্যাসে বড় পরিবর্তন এনেছে।
ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, চীনে স্টারবাকসের বাজার অংশীদারিত্ব ২০১৯ সালে ৩৪ শতাংশ থাকলেও ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো চীন স্টারবাকসের বিশ্বব্যাপী মোট ক্যাফের প্রায় এক-পঞ্চমাংশের আবাসস্থল।

বিশ্লেষণ: ব্র্যান্ড টিকে থাকবে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ থাকবে না
এই চুক্তির মাধ্যমে স্টারবাকস মূলত চীনে তাদের উপস্থিতি বজায় রাখছে, কিন্তু কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ছাড়ছে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের হাতে। এর ফলে কোম্পানিটি একদিকে ঝুঁকি কমাতে পারবে, অন্যদিকে ব্র্যান্ডের প্রভাব ধরে রাখতে সক্ষম হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই কৌশল সফল হবে কিনা, তা নির্ভর করবে চীনের কফি বাজারের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশের ওপর।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















