আমি জীবনের অধিকাংশ সময় আমেরিকান পুলিশ ব্যবস্থাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমার ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে আমি টহল অফিসার, গোয়েন্দা, প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছি এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত উইসকনসিনের ম্যাডিসন শহরের পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এই সময়ে আমি নৃশংসতা, সাহস এবং পরিত্রাণের অনেক দৃষ্টান্ত দেখেছি। কিন্তু আমি কখনও এমন এক ভয়াবহ পুলিশ-সম্পর্কিত হুমকি দেখিনি, যা আজ আমাদের গণতন্ত্রের সামনে উপস্থিত হয়েছে।
ফেডারেল সরকারের হুমকি ও রাজ্যের প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি মার্কিন বিচার বিভাগ ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তাদের প্রতি কড়া সতর্কবার্তা জারি করেছে, যারা প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে রাজ্য বা স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যালিফোর্নিয়ার আইন লঙ্ঘন করলে ফেডারেল ইমিগ্রেশন এজেন্টদের গ্রেপ্তার করতে পারে। বিচার বিভাগ দাবি করেছে, এই প্রস্তাব “অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র” এর সমতুল্য। গত অক্টোবরের শেষদিকে মার্কিন উপ-অ্যাটর্নি জেনারেল টড ব্ল্যাঞ্চ বলেছেন, “কেউ আমাদের এজেন্টদের হুমকি দিতে পারবে না। কেউ আমাদের আমেরিকাকে আবার নিরাপদ করার প্রচেষ্টা থামাতে পারবে না।”
আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই—যারা এই দেশে আসার পর গুরুতর অপরাধ করেছে, তাদের গ্রেপ্তারে স্থানীয় পুলিশ অবশ্যই ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE)-এর সঙ্গে সহযোগিতা করবে। কিন্তু মূল পার্থক্যটি সহযোগিতা ও প্রতিরোধের মধ্যে নয়; এটি আইনি ন্যায়বিচার ও বেআইনি ক্ষতির মধ্যে সীমারেখা টানে। ফেডারেল কর্তৃত্ব ও রাজ্য সার্বভৌমত্বের সংঘাত এখন দেখিয়ে দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ ক্ষমতা ও জবাবদিহিতার ভারসাম্য কতটা সংকটে রয়েছে।
অবৈধ অভিযান ও জনআস্থার ক্ষয়
সারা দেশে এখন ফেডারেল ইমিগ্রেশন এজেন্টরা—অনেক সময় মুখোশ পরে, পরিচয়হীন অবস্থায় এবং আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই—বিভিন্ন শহরে প্রবেশ করছে, দাবি করছে তারা “খুনি, ধর্ষক ও মাদক ব্যবসায়ী” ধরছে। কিন্তু বাস্তবে এই অভিযানগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বেপরোয়া, এবং স্থানীয় পুলিশের প্রতি জনআস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

একটি সংক্ষিপ্ত আইনি ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে: প্রথমবার সীমান্ত অবৈধভাবে পার হওয়া একটি লঘু অপরাধ (মিসডিমিনার), আর বহিষ্কারের পর পুনরায় প্রবেশ করা একটি গুরুতর অপরাধ (ফেলনি)। কিন্তু অধিকাংশ অনথিভুক্ত অভিবাসী অপরাধী নয়। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা নয়, বরং দেওয়ানি অভিবাসন প্রক্রিয়া চালানোর কথা। আর যারা নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয় চাইছে, তারা আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ বৈধভাবে তা করছে—এটি মার্কিন ও আন্তর্জাতিক উভয় আইনে স্বীকৃত অধিকার।
স্থানীয় পুলিশের করণীয়
স্থানীয় পুলিশ আইনি দিক থেকে ফেডারেল এজেন্টদের গ্রেপ্তার ঠেকাতে পারে না। কিন্তু নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার্থে তাদের অবশ্যই বেআইনি আটক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ফেডারেল কর্মকর্তাদের পরিচয় প্রকাশ, মুখোশ খুলে আইনসম্মত আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিটি সাক্ষাৎ, বলপ্রয়োগ বা জীবন-ঝুঁকির ঘটনায় বিস্তারিত নথি রাখতে হবে। সর্বোপরি, পুলিশ অফিসারদের মনে রাখতে হবে—তাদের আনুগত্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি নয়, বরং সংবিধানের প্রতি।
নৈতিক পুলিশিংয়ের দায়িত্ব
বর্তমানে অধিকাংশ পুলিশ বিভাগে “ডিউটি টু ইন্টারভিন” বা “হস্তক্ষেপের দায়িত্ব” নীতি রয়েছে, যা অনুযায়ী একজন অফিসার যদি অন্য অফিসারকে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করতে দেখেন, যা কারও জীবনের জন্য বিপজ্জনক বা আইনের পরিপন্থী, তবে তাকে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে হবে। এই দায়িত্ব ফেডারেল এজেন্টদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মূল লক্ষ্য হলো জীবন রক্ষা ও বেআইনি ক্ষতি প্রতিরোধ করা।

যখন ফেডারেল সংস্থা যেমন ICE বা বর্ডার প্যাট্রোল কোনো এলাকায় অভিযান চালায়, তখন স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা হওয়া উচিত তদারকি করা—অভিযান নয়, বরং পর্যবেক্ষণ ও আইনানুগ প্রক্রিয়া নিশ্চিতে সহায়তা করা। তাদের উচিত ICE-এর এজেন্টদের নাম নথিভুক্ত করা, তদারকির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি চাওয়া, আটককৃতদের নাম লিখে রাখা যাতে তাদের পরিবার ও আইনজীবীরা যোগাযোগ করতে পারেন, এবং প্রয়োজন হলে সাক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা।
তদারকি, বাধা নয়
এটি কোনো বাধা নয়—এটি গণতান্ত্রিক তদারকি। এটি সেই পুলিশিংয়ের রূপ, যেখানে ক্ষমতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় এবং মানব মর্যাদা সুরক্ষিত থাকে।
আমরা এখন এমন এক অভূতপূর্ব সময়ের মুখোমুখি, যেখানে স্থানীয় পুলিশের দায়িত্ব—সমাজের প্রতিটি নাগরিককে রক্ষা, সেবা ও নিরাপত্তা দেওয়া—একটি ফেডারেল সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিবাসন অভিযানের মুখে পড়েছে।
এখনই সময় স্থানীয় পুলিশ নেতৃত্বের জন্য পুলিশিংয়ের নৈতিক কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করার। পুলিশের বৈধতা অস্ত্র বা ব্যাজ থেকে আসে না; এটি আসে জনগণের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা থেকে, যাদের তারা সেবা দেয়।
#পুলিশ #যুক্তরাষ্ট্র #অভিবাসন #গণতন্ত্র #আইনেরশাসন #সারাক্ষণরিপোর্ট
ডেভিড সি. কুপার 


















