যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্ক নতুন উত্তেজনার মাঝেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জি–টু’ মন্তব্যে বেইজিং খুব একটা উৎসাহ দেখায়নি। সমান শক্তির ইঙ্গিত পেলেও চীনের মতে, দুই দেশের আধিপত্যে বিশ্ব পরিচালনার ধারণা তাদের কূটনৈতিক নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় সাম্প্রতিক বৈঠকের আগে ‘জি–টু’ ধারণা ফের সামনে আনেন—অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে বিশ্বের দুই প্রধান শক্তি হিসেবে একসঙ্গে ভূমিকা রাখার ভাবনা। কিন্তু বেইজিং এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও ধারণাটি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করছে।
জি–টু ধারণার পটভূমি
২০০০-এর দশকে অর্থনীতিবিদ ফ্রেড বার্গস্টেন ‘জি–টু’ বিন্যাসের কথা বলেন। ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর চীন দ্রুত শক্তি হিসেবে ওঠায় আলোচনাটি গুরুত্ব পায়। তবে চীন শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে—বিশ্বের সব সমস্যা দুই দেশ মিলে সমাধান করা বাস্তবসম্মত নয়।
কেন চীনের আপত্তি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘জি–টু’ ধারণায় আধিপত্যের আভাস রয়েছে। এতে উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়ার মতো প্রস্তুতি চীনের নেই। বেইজিং দীর্ঘদিন ধরে বহু-মেরুবিশ্বের পক্ষে এবং একক বা দ্বৈত আধিপত্যের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে।

ট্রাম্প–শি বৈঠকের বার্তা
দক্ষিণ কোরিয়ার বাসানে ট্রাম্প ও শি জিনপিং প্রথমবার মুখোমুখি সাক্ষাৎ করেন। উত্তেজনা কমানো ও বাণিজ্য–সংশ্লিষ্ট আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হলেও চীন প্রকাশ্যে ‘হেজিমনি’ বা আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের বক্তব্য মূলত রাজনৈতিক সৌজন্য, কোনো কাঠামোগত নীতি নয়।
চীনের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি
চীন জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক মিশনে ভূমিকা বাড়ালেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো একক বিশ্বনেতা হতে চায় না। উন্নয়নশীল বিশ্বকে পাশে রেখে নিজেদের শক্তি বাড়ানোই তাদের মূল লক্ষ্য। তাই ‘জি–টু’ মতবাদ গ্রহণ করলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন চাপ তৈরি হবে।
ট্রাম্পের মন্তব্য কূটনৈতিক আলোচনাকে নরম করার প্রচেষ্টা হলেও চীনের কাছে এটি কার্যকর কোনো বিশ্বব্যবস্থার ধারণা নয়। বেইজিংয়ের কৌশল—প্রভাবশালী হওয়া, কিন্তু বিশ্বকে দুই দেশের নিয়ন্ত্রণে সীমিত না রাখা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















