ট্রেইলারে নতুন গ্যালাক্সি, নতুন চরিত্র আর সিনেমাটিক ইউনিভার্সের ইঙ্গিত
নিন্টেন্ডো ও ইলুমিনেশন অ্যানিমেশন যৌথভাবে প্রকাশ করেছে নতুন অ্যানিমেটেড ছবি ‘সুপার মারিও গ্যালাক্সি’র প্রথম অফিসিয়াল ট্রেইলার, যা ২০২৩ সালের সফল ‘দ্য সুপার মারিও ব্রস. মুভি’র ধারাবাহিকতায় তৈরি হচ্ছে। ভ্যারাইটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন ছবিতে মারিওকে দেখা যাবে মহাকাশযাত্রায়, যেখানে সে সাক্ষাৎ পাবে কসমিক অভিভাবক রোজালিনার সঙ্গে—এই চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী ব্রি লারসন। ট্রেইলারের ভিজ্যুয়ালে দেখা যায় তারাভরা আকাশের মাঝে ভেসে থাকা কমেট অবজারভেটরি, অদ্ভুত সব গ্রহ আর মূল গেমের স্মৃতিবহুল প্ল্যাটফর্মিং ধারণাকে বড় পর্দার জন্য পুনর্গঠিত করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে হাজির হয়েছে বাউজার জুনিয়র; চরিত্রটির কণ্ঠে এবার অভিনেতা-পরিচালক বেনি সাফডি।
প্রথম ছবির তুলনায় এবার টোন ও আবহ অনেক বেশি স্বপ্নময় ও পরীক্ষাধর্মী বলে মনে করছেন ভক্তরা। মারিওর চেনা সঙ্গীরা—লুইজি, পীচ, টোড—ট্রেইলারে থাকলেও তাদের উপস্থিতি খুবই সীমিত; বরং কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে উঠে এসেছে রোজালিনা ও তার কসমিক সঙ্গীরা। এতে করে গল্পটা শুধু মাশরুম কিংডমের চেনা গণ্ডিতে আটকে না থেকে, গ্যালাক্সি জুড়ে নানা বাস্তবতা আর সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করছে। একাধিক দৃশ্যে লুমা, বিকল্প গ্যালাক্সি আর রহস্যময় ‘স্টার ফ্র্যাগমেন্ট’ দেখিয়ে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য স্পিন-অফ বা ক্রসওভার ছবির ইঙ্গিত দিয়েছে নির্মাতারা। নিন্টেন্ডোর জন্য এটি এমন এক সুযোগ, যেখানে গেমের জগৎকে সিনেমার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।

বাংলা উপশিরোনাম ২ — গেম–টু–ফিল্ম সাফল্যের নতুন ধারা
গেম থেকে অনুপ্রাণিত সিনেমা এখন আর ব্যতিক্রম নয়, বরং হলিউডের মূলধারার অংশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘দ্য লাস্ট অব আস’, ‘ফাইভ নাইটস অ্যাট ফ্রেডিজ’ বা ‘সনিক দ্য হেজহগ’ প্রমাণ করেছে, শক্ত ভক্তভিত্তি আর যত্নশীল নির্মাণ একসঙ্গে হলে বক্স অফিসে বড় সাফল্য পাওয়া সম্ভব। ৯০–এর দশকের ব্যর্থ লাইভ-অ্যাকশন অভিজ্ঞতার পর বহু বছর দূরে থাকা নিন্টেন্ডো এখন অনেক সতর্ক ও অংশীদারিত্বনির্ভর মডেলে কাজ করছে, যেখানে শিগেরু মিয়ামোতোসহ মূল সৃজনশীল টিম প্রতিটি ধাপে জড়িত থাকেন। ব্রি লারসন ও বেনি সাফডির মতো তারকাকে ভয়েস কাস্টে রাখা এ কৌশলেরই অংশ, যাতে শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক দর্শকরাও আকৃষ্ট হয়।
স্ট্রিমিং যুগে ছবিটির মুক্তি পরিকল্পনায়ও রয়েছে বহুস্তর। আগের মারিও ছবি প্রথমে প্রেক্ষাগৃহে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার পর ডিজিটাল ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘ সময় ধরে দেখা হয়েছে, যা নিন্টেন্ডোর গেম বিক্রি ও ব্র্যান্ড পরিচিতি দুটোই বাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ‘সুপার মারিও গ্যালাক্সি’র ক্ষেত্রেও একই ধরনের উইন্ডো ধরে এগোনো হবে—প্রথমে সিনেমা হল, পরে ক্রমান্বয়ে ভিওডি ও স্ট্রিমিং। ছবিটি যদি দর্শকের সঙ্গে সংযোগ গড়তে পারে, তবে ‘দ্য লেজেন্ড অব জেলদা’ থেকে শুরু করে আরও অনেক গেম সিরিজের সিনেমা অভিযোজন ত্বরান্বিত হতে পারে। তখন নিন্টেন্ডোকে শুধু কনসোল নির্মাতা নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ ক্রস–মিডিয়া বিনোদন জায়ান্ট হিসেবে দেখা হবে—যার দুনিয়া একসঙ্গে গেম কন্ট্রোলার, বড় পর্দা আর থিম পার্কের অভিজ্ঞতায় বিস্তৃত।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















