তারকাখচিত আয়োজনে তহবিল, মনোবল দুটোই জাগাতে চায় শিল্পীরা
হ্যারিকেন মেলিসায় বিধ্বস্ত জামাইকায় ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে বড় আকারের এক বেনিফিট কনসার্টের আয়োজন করা হচ্ছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় দুই তারকা শ্যাগি ও শন পল। “জামাইকা স্ট্রং” শিরোনামের এই কনসার্টের লক্ষ্য, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য তহবিল গড়ে তোলা এবং একই সঙ্গে দুঃসময়ের মাঝে একটু স্বস্তি ও শক্তি দেওয়া। কয়েক সপ্তাহ আগে আঘাত হানা মেলিসা বহু বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছে, বিদ্যুৎ ও পানীয়জল সরবরাহ বন্ধ করেছে এবং অনেক এলাকায় মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য করেছে। রোলিং স্টোনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শ্যাগি বলেছেন, তাঁরা যখন দেখেছেন মানুষ রাস্তার ধারে ঘুমাচ্ছে, অনেক বাড়িতে এখনো লাশ আটকে আছে, তখন আর চুপ করে থাকা সম্ভব ছিল না।
কনসার্ট থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বাড়িঘর মেরামত, স্কুল পুনর্নির্মাণ এবং চিকিৎসাসহ জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে আয়োজকরা। স্থানীয় এনজিও ও চার্চ নেটওয়ার্কের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুততম সময়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তারা পিছিয়ে না পড়ে। তালিকায় শ্যাগি–শন পলের পাশাপাশি আছেন একাধিক সিনিয়র আর্টিস্ট ও তরুণ শিল্পী, যা জামাইকার সমৃদ্ধ সঙ্গীত ঐতিহ্য ও প্রজন্মজুড়ে একাত্মতার ছবি তুলে ধরবে। অনেকের কাছে এই কনসার্ট কেবল বিনোদন নয়, বরং বিপর্যয়ের মাঝেও সংস্কৃতি ও কমিউনিটির শক্তি দেখানোর সুযোগ।

বাংলা উপশিরোনাম ২ — জলবায়ু ন্যায়বিচার থেকে ডিজিটাল সমর্থন
ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টির কারণে বহু দ্বীপ রাষ্ট্র অভূতপূর্ব চাপের মুখে রয়েছে। উষ্ণ সমুদ্রপৃষ্ঠ ও পরিবর্তিত আবহাওয়া প্যাটার্নের প্রভাবে ঝড়গুলো আরও শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীদের সতর্কতা। এর ফলে পর্যটননির্ভর অর্থনীতি ও কৃষিনির্ভর গ্রামীণ এলাকায় ক্ষতির বোঝা বাড়ছে, মানুষের কাজ হারানো ও দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়াও যেন নিয়মিত দৃশ্য। “জামাইকা স্ট্রং” কনসার্টে অংশ নেওয়া শিল্পীরা তাই নিজেদের অংশগ্রহণকে কেবল ত্রাণ কর্মসূচি নয়, বরং জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবি উত্থাপনের অংশ হিসেবেও দেখছেন।
ডিজিটাল যুগে এই আয়োজনের প্রভাব সীমান্তের অনেক বাইরে গিয়ে পড়তে পারে। লাইভস্ট্রিম, সোশ্যাল ক্লিপ, হ্যাশট্যাগ—সব মিলিয়ে কনসার্টের মুহূর্তগুলো আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছে পৌঁছাতে খুব বেশি সময় লাগবে না। বিদেশে থাকা জামাইকান প্রবাসী ও ক্যারিবীয় সংগীতপ্রেমীদের অনলাইনে ডোনেশন, মার্চেন্ডাইজ বা অংশীদার দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে স্থানীয় তহবিলের পাশাপাশি বৈশ্বিক সমর্থনও জোগাড় হওয়ার আশা করছেন আয়োজকরা। সফল হলে এই মডেল ভবিষ্যতে ক্যারিবীয় ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে শিল্পী–নেতৃত্বাধীন ত্রাণ উদ্যোগের নতুন উদাহরণ তৈরি করতে পারে—যেখানে সুর, মঞ্চ ও সংহতি একসঙ্গে কাজ করে পুনর্গঠনের পথ সহজ করবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















