০৭:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
কলকাতার পিচে ধাক্কা খাওয়ার পর ভারতের ব্যাটিং দুর্বলতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ ইন্দোনেশিয়ার সেন্ট্রাল জাভায় ভয়াবহ ভূমিধস: অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু, বহু মানুষ নিখোঁজ একটি জাজমেন্ট ও কিছু সমস্যা মুহুরী নদী: একটি আন্তঃসীমান্ত নদীর গল্প — উৎস, জীবন ও চিরস্থায়ী সংকট মার্কিন-দক্ষিণ কোরিয়া বাণিজ্য চুক্তির পর দেশে বড় বিনিয়োগ ঘোষণা স্যামসাং ও হিউন্দাইয়ের চীন সফরে জার্মান অর্থমন্ত্রী: বাণিজ্য ঘাটতি, রেয়ার আর্থ সংকট ও ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনে নতুন উত্তেজনা রাশিয়ার নোভোরোসিস্ক বন্দর আবারও তেল রফতানি শুরু করেছে  সাফা কবির: আলো-অন্ধকার ছুঁয়ে উঠে আসা এক তারকার আত্মজয়ের গল্প বিশাল উলি ম্যামথ ‘ইউকা’র জমাট দেহে চমকপ্রদ আবিষ্কার জামায়াত নেতার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ

সৌদি যুবরাজের যুক্তরাষ্ট্র সফর: প্রতিরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পারমাণবিক কর্মসূচি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু

সংক্ষিপ্তসার

– সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়
– এআই ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি সৌদির প্রধান অগ্রাধিকার
– যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন ট্রাম্প

সৌদি আরবের বাস্তবিক শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। এই সফরের লক্ষ্য পুরোনো তেল ও নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আরও গভীর করা এবং বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির মতো খাতে নতুন সহযোগিতার পথ খোলা।

এটি এমবিএস-এর ২০১৮ সালের পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। ওই বছর ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক জামাল খাশোগজিকে হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল সৌদি সরকার। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা উপসংহারে জানিয়েছিল, খাশোগজির ‘ধরপাকড় বা হত্যার’ অনুমোদন এমবিএসই দিয়েছিলেন। যদিও তিনি এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশনার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন, তবে শাসক হিসেবে তিনি এর দায় স্বীকার করেন।

সাত বছরেরও বেশি সময় পর দুই দেশের নেতৃত্ব এখন এগিয়ে যেতে আগ্রহী।

ট্রাম্প সৌদির ঘোষিত ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন এবং মানবাধিকার প্রসঙ্গে তিনি নীরব আছেন—এই সফরেও একই অবস্থান বজায় রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।

Saudi crown prince visits US with defence, AI and nuclear on the agenda

অন্যদিকে সৌদি আরব আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অ্যাক্সেস এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অগ্রগতি চাইছে।

একজন সৌদি বিশ্লেষক আজিজ আলঘাশিয়ান বলেন, “খাশোগজি হত্যাকাণ্ডের অধ্যায় এখন অনেকটাই পেছনে ফেলে আসা হয়েছে।”

প্রতিরক্ষা চুক্তি: মূল আলোচ্য

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের ভিত্তি ছিল—সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রকে অনুকূল দামে তেল সরবরাহ করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে। কিন্তু ২০১৯ সালে ইরানের হামলার পরও যুক্তরাষ্ট্র কোনো জবাব না দেওয়ায় সেই সমীকরণে ধাক্কা লাগে।

সম্প্রতি ইসরায়েল কাতারের দোহায় হামলা চালানোর পর নিরাপত্তা উদ্বেগ আবার বাড়ে। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প কাতারের সঙ্গে নির্বাহী আদেশে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেন। বিশ্লেষকদের মতে, সৌদিও একই ধরনের একটি চুক্তি পেতে পারে।

সৌদি আরব বহুদিন ধরে মার্কিন কংগ্রেস অনুমোদিত একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তি চাইছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলছে, সৌদি যদি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার উদ্যোগ নেয়, তাহলেই এটি সম্ভব। আর রিয়াদ বলছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্প্রতি জানিয়েছেন, তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিপক্ষে অবস্থান বজায় রাখবেন।

শান্তি চুক্তি করানো এখন আমার শখ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

যদি ট্রাম্প কাতার-ধাঁচের একটি নির্বাহী আদেশ দেন, তবে তা সৌদির কাঙ্ক্ষিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তি হবে না—তবে ‘প্রক্রিয়ার একটি ধাপ’ হবে বলে মনে করেন আলঘাশিয়ান।

একজন পশ্চিমা কূটনীতিক বলেন, “ট্রাম্প চান সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ, আর সৌদি চায় পূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি। বাস্তবতা হলো—শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষই তাদের ইচ্ছার কম কিছু পাবে। এটিই কূটনীতি।”

মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন বিশ্লেষক ডেনিস রসের মতে, সম্ভাবনা রয়েছে এমন এক চুক্তির যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব হুমকির মুখে কীভাবে তাৎক্ষণিকভাবে পরামর্শ ও প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নির্ধারণ থাকবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সৌদিকে সরাসরি রক্ষায় সামরিকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রতিশ্রুতি দেবে না। সহায়তার ধরন হতে পারে—অস্ত্র প্রতিস্থাপন, থাড বা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন, নৌবাহিনী পাঠানো বা প্রয়োজন হলে আক্রমণাত্মক সামরিক সহায়তা প্রদান।

এআই ও পারমাণবিক চুক্তি: আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার নতুন অধ্যায়

সৌদি আরব তার ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করা, প্রযুক্তিনির্ভর খাত শক্তিশালী করা এবং আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে এআই ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তিতে জোর দিচ্ছে।

বিশেষভাবে উন্নত কম্পিউটার চিপ পাওয়ার অনুমোদন সৌদির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্র গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। ইতিমধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহু-বিলিয়ন ডলারের ডেটা সেন্টার চুক্তি করে উন্নত চিপের অ্যাক্সেস পেয়েছে।

একই সঙ্গে এমবিএস চান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়ন নিয়ে চুক্তি করতে। এটি সৌদিকে জ্বালানি বহুমুখীকরণে সহায়তা করবে এবং আমিরাত ও ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক সক্ষমতায় প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দেবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে—সৌদি আরব পারমাণবিক জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ বা ব্যবহৃত জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার মতো কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দিক, যেগুলো বোমা তৈরির সম্ভাব্য পথ। এই শর্তে সৌদি আগে রাজি হয়নি।

ডেনিস রস আশা করছেন, অন্তত পারমাণবিক শক্তি নিয়ে অগ্রগতির একটি যৌথ বিবৃতি কিংবা একটি প্রাথমিক চুক্তি ঘোষণা হতে পারে।

দুই দেশের দীর্ঘ ইতিহাস, আঞ্চলিক অস্থিরতা ও উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রেক্ষাপটে এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও পারমাণবিক সক্ষমতা—সবক্ষেত্রেই বড় ধরনের সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কলকাতার পিচে ধাক্কা খাওয়ার পর ভারতের ব্যাটিং দুর্বলতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ

সৌদি যুবরাজের যুক্তরাষ্ট্র সফর: প্রতিরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পারমাণবিক কর্মসূচি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু

০৪:৩০:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

সংক্ষিপ্তসার

– সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়
– এআই ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি সৌদির প্রধান অগ্রাধিকার
– যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন ট্রাম্প

সৌদি আরবের বাস্তবিক শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। এই সফরের লক্ষ্য পুরোনো তেল ও নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আরও গভীর করা এবং বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির মতো খাতে নতুন সহযোগিতার পথ খোলা।

এটি এমবিএস-এর ২০১৮ সালের পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। ওই বছর ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক জামাল খাশোগজিকে হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল সৌদি সরকার। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা উপসংহারে জানিয়েছিল, খাশোগজির ‘ধরপাকড় বা হত্যার’ অনুমোদন এমবিএসই দিয়েছিলেন। যদিও তিনি এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশনার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন, তবে শাসক হিসেবে তিনি এর দায় স্বীকার করেন।

সাত বছরেরও বেশি সময় পর দুই দেশের নেতৃত্ব এখন এগিয়ে যেতে আগ্রহী।

ট্রাম্প সৌদির ঘোষিত ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন এবং মানবাধিকার প্রসঙ্গে তিনি নীরব আছেন—এই সফরেও একই অবস্থান বজায় রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।

Saudi crown prince visits US with defence, AI and nuclear on the agenda

অন্যদিকে সৌদি আরব আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অ্যাক্সেস এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অগ্রগতি চাইছে।

একজন সৌদি বিশ্লেষক আজিজ আলঘাশিয়ান বলেন, “খাশোগজি হত্যাকাণ্ডের অধ্যায় এখন অনেকটাই পেছনে ফেলে আসা হয়েছে।”

প্রতিরক্ষা চুক্তি: মূল আলোচ্য

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের ভিত্তি ছিল—সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রকে অনুকূল দামে তেল সরবরাহ করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে। কিন্তু ২০১৯ সালে ইরানের হামলার পরও যুক্তরাষ্ট্র কোনো জবাব না দেওয়ায় সেই সমীকরণে ধাক্কা লাগে।

সম্প্রতি ইসরায়েল কাতারের দোহায় হামলা চালানোর পর নিরাপত্তা উদ্বেগ আবার বাড়ে। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প কাতারের সঙ্গে নির্বাহী আদেশে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেন। বিশ্লেষকদের মতে, সৌদিও একই ধরনের একটি চুক্তি পেতে পারে।

সৌদি আরব বহুদিন ধরে মার্কিন কংগ্রেস অনুমোদিত একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তি চাইছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলছে, সৌদি যদি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার উদ্যোগ নেয়, তাহলেই এটি সম্ভব। আর রিয়াদ বলছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্প্রতি জানিয়েছেন, তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিপক্ষে অবস্থান বজায় রাখবেন।

শান্তি চুক্তি করানো এখন আমার শখ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

যদি ট্রাম্প কাতার-ধাঁচের একটি নির্বাহী আদেশ দেন, তবে তা সৌদির কাঙ্ক্ষিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তি হবে না—তবে ‘প্রক্রিয়ার একটি ধাপ’ হবে বলে মনে করেন আলঘাশিয়ান।

একজন পশ্চিমা কূটনীতিক বলেন, “ট্রাম্প চান সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ, আর সৌদি চায় পূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি। বাস্তবতা হলো—শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষই তাদের ইচ্ছার কম কিছু পাবে। এটিই কূটনীতি।”

মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন বিশ্লেষক ডেনিস রসের মতে, সম্ভাবনা রয়েছে এমন এক চুক্তির যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব হুমকির মুখে কীভাবে তাৎক্ষণিকভাবে পরামর্শ ও প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নির্ধারণ থাকবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সৌদিকে সরাসরি রক্ষায় সামরিকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রতিশ্রুতি দেবে না। সহায়তার ধরন হতে পারে—অস্ত্র প্রতিস্থাপন, থাড বা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন, নৌবাহিনী পাঠানো বা প্রয়োজন হলে আক্রমণাত্মক সামরিক সহায়তা প্রদান।

এআই ও পারমাণবিক চুক্তি: আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার নতুন অধ্যায়

সৌদি আরব তার ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করা, প্রযুক্তিনির্ভর খাত শক্তিশালী করা এবং আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে এআই ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তিতে জোর দিচ্ছে।

বিশেষভাবে উন্নত কম্পিউটার চিপ পাওয়ার অনুমোদন সৌদির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্র গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। ইতিমধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহু-বিলিয়ন ডলারের ডেটা সেন্টার চুক্তি করে উন্নত চিপের অ্যাক্সেস পেয়েছে।

একই সঙ্গে এমবিএস চান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়ন নিয়ে চুক্তি করতে। এটি সৌদিকে জ্বালানি বহুমুখীকরণে সহায়তা করবে এবং আমিরাত ও ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক সক্ষমতায় প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দেবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে—সৌদি আরব পারমাণবিক জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ বা ব্যবহৃত জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার মতো কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দিক, যেগুলো বোমা তৈরির সম্ভাব্য পথ। এই শর্তে সৌদি আগে রাজি হয়নি।

ডেনিস রস আশা করছেন, অন্তত পারমাণবিক শক্তি নিয়ে অগ্রগতির একটি যৌথ বিবৃতি কিংবা একটি প্রাথমিক চুক্তি ঘোষণা হতে পারে।

দুই দেশের দীর্ঘ ইতিহাস, আঞ্চলিক অস্থিরতা ও উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রেক্ষাপটে এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও পারমাণবিক সক্ষমতা—সবক্ষেত্রেই বড় ধরনের সমঝোতার চেষ্টা চলছে।