ঘরোয়া চিপ আর ডেটা সেন্টারে ঝুঁকছে বাজার
মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের চাপ বাড়ার পর চীনে নিজস্ব এআই অবকাঠামো গড়ে তোলার দৌড় নতুন মাত্রা পেয়েছে। টোকিওভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মাত্র ৩১ বছর বয়সী এক চীনা উদ্যোক্তা এই ঢেউয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত এআই অবকাঠামো কোম্পানির শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে দফায় দফায় দাম বেড়েছে, ফলে কাগজে কলমে তার ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারে।
কোম্পানিটি মূলত এমন ডেটা সেন্টার ও বিশেষ চিপ সমাধান দিচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নিষিদ্ধ করা অতি উন্নত সেমিকন্ডাক্টরের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বড় বড় ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম, ব্যাংক, ফিনটেক ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে তাদের কম্পিউটিং ক্লাস্টার ভাড়া নিচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, যেসব নিষেধাজ্ঞা চীনের এআই অগ্রগতি আটকে দেওয়ার জন্য আনা হয়েছিল, তা উল্টো দেশীয় বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনকে আরও ত্বরান্বিত করছে।
![]()
ঝুঁকি, প্রশ্ন আর রাজনৈতিক ইঙ্গিত
তবে এই দ্রুত উত্থান কিছু মৌলিক প্রশ্নও তুলে দিয়েছে। আয় ও মুনাফার গতি কি এত দ্রুত বাড়বে, যত দ্রুত বিনিয়োগ ও মূল্যায়ন বাড়ছে—এটা বিনিয়োগকারীদের বড় সংশয়। দেশজুড়ে ডজনখানেক প্রতিদ্বন্দ্বী একই ধরনের ডেটা সেন্টার ও এআই চিপ ব্যবসা গড়ে তুলতে দৌড়াচ্ছে; অনেকেই মনে করছেন, পুরো খাতেই এখন ‘বুদবুদের’ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তৈরি করা স্থানীয় চিপগুলো উন্নত মার্কিন হার্ডওয়্যারের কতটা সমমানের পারফরম্যান্স দিতে পারবে, তা নিয়েও প্রযুক্তি মহলে বিতর্ক আছে।
রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমের চোখে এই তরুণ উদ্যোক্তা এখন “প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা”র প্রতীক। দলীয় ভাষণে তার কোম্পানিকে দেখানো হচ্ছে, ‘আমেরিকান কম্পোনেন্ট ছাড়া’ও কৌশলগত খাতে চীন নিজের ভরসা নিজেই গড়ে তুলতে পারছে—এর উদাহরণ হিসেবে। তবে একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ সচেতন যে ব্যক্তিমালিকানাধীন এসব প্ল্যাটফর্মের হাতে বিপুল পরিমাণ সংবেদনশীল ডেটা ও ক্রিটিক্যাল সেবা গড়ে উঠছে, যা ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণের নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
আন্তর্জাতিকভাবে এই ঘটনাকে দেখা হচ্ছে সরবরাহ শৃঙ্খলের পুনর্গঠন হিসেবে। মার্কিন চিপ নির্মাতারা দীর্ঘমেয়াদি বাজার হারানোর ঝুঁকিতে পড়ছে; আবার জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোকে আরও কড়া রপ্তানি নিয়মের মধ্যে ভারসাম্য খুঁজে নিতে হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা নজর রাখছেন, চীনের এআই অবকাঠামো নির্মাণ কি এই উচ্চ ব্যয়তালিকা টেকসইভাবে ধরে রাখতে পারবে, নাকি শিগগিরই মূল্যায়নে সংশোধন আসবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















