১০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৯) শেয়ারবাজারে টানা উত্থান, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব আরও ইতিবাচক সিরাজগঞ্জে ব্র্যাক–ফিলিপস ফাউন্ডেশনের নতুন চার হেলথ সেন্টার প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমলেও আস্থার লড়াইয়ে এগোচ্ছে চীন কাশ্মীরি মানেই সন্ত্রাসী নন- ওমর আব্দুল্লাহ গোপন সস রক্ষায় কঠোর নজরদারি: রেইজিং কেইনসের রহস্যময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সিআইএ–এর মূল্যায়নকে অস্বীকার করলেন ট্রাম্প ট্রাম্পের কৃষিপণ্য শুল্ক ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে পারে ভারতের রপ্তানি ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৭৮৮ রোগী

কাশ্মীরি মানেই সন্ত্রাসী নন- ওমর আব্দুল্লাহ

দিল্লির সাম্প্রতিক মারাত্মক বিস্ফোরণের পর পুরো কাশ্মীরি সম্প্রদায়কে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন কাশ্মীরের বিশিষ্ট নেতা আলমগীর উমর আব্দুল্লাহ। তাঁর দাবি, কয়েকজনের অপরাধে গোটা জনগোষ্ঠীকে সন্দেহের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, ফলে সাধারণ কাশ্মীরিদের জীবন এখন হয়ে উঠেছে ভীতিকর ও সংকটপূর্ণ।


প্রেক্ষাপট

রাজধানী দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষের মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশে আলোড়ন তৈরি হয়। বিস্ফোরণের তদন্ত চললেও কাশ্মীরি জনগোষ্ঠী নিয়ে এক ধরনের অস্বস্তি ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।


কাশ্মীরিদের প্রতি সন্দেহের দৃষ্টি নিয়ে ক্ষোভ

উমর আব্দুল্লাহর মতে, পুরো বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন প্রত্যেক কাশ্মীরিই সম্ভাব্য সন্দেহভাজন। তিনি বলেন, আজকের পরিস্থিতিতে বাবা-মায়েরা সন্তানদের বাইরে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। অন্যের অপরাধের দায় কাশ্মীরির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে, আর সেই কারণে সাধারণ মানুষও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে সংকোচ বোধ করছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, দোষী হতে পারে মাত্র কয়েকজন, কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ডের পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে হাজারো নির্দোষ কাশ্মীরিকে।


জে-কে রেজিস্ট্রেশন গাড়ি নিয়ে আতঙ্ক

উমর আব্দুল্লাহ আরও জানান, দিল্লির রাস্তায় জে-কে রেজিস্ট্রেশনের যেকোনো গাড়ি এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে গাড়ি চালালেই নিজেকে অপরাধীর মতো মনে হয়। তিনি নিজেও ভাবছেন—এই মুহূর্তে গাড়ি চালানো কতটা নিরাপদ।


‘প্রত্যেক কাশ্মীরি সন্ত্রাসী নন’

উমর আব্দুল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, কাশ্মীরের প্রত্যেক মুসলিমকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ভাবা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি মনে করেন, এই ধারাবাহিক সন্দেহ কাশ্মীরিদের সামাজিক মর্যাদা, মানসিক স্বাস্থ্যে এবং দৈনন্দিন নিরাপত্তায় গভীর প্রভাব ফেলছে।


সতর্ক বার্তা ও প্রয়োজনীয় আহ্বান

তাঁর মতে, তদন্ত অবশ্যই চলবে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় যেন নির্দোষরা ভয়, সন্দেহ এবং ঘৃণার শিকার না হন—এটাই তাঁর প্রধান দাবি। রাষ্ট্র ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করে এই বিভাজন কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


বিশ্লেষণ

কয়েকজনের অপরাধকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর কাশ্মীরি জনগোষ্ঠীর ওপর সন্দেহের আবহ তৈরি হওয়া—এমন প্রবণতা দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক জনমত ও পরিচয়সংকটের এক গভীর প্রতিফলন। কাশ্মীরি শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও পরিবারগুলো এখন যে চাপের মুখে পড়েছেন, তা শুধু সামাজিক নয়—মানসিক ও নিরাপত্তাগত দিক থেকেও উদ্বেগজনক।

এ পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং একই সঙ্গে নির্দোষ কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।


উমর আব্দুল্লাহর বক্তব্য স্পষ্ট—সমাজের বড় কোনও জনগোষ্ঠীকে কয়েকজনের অপরাধের জন্য দায়ী করা অন্যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, বিভাজন যত বাড়বে, ততই দুর্বল হবে নাগরিক সংহতি। তাঁর আহ্বান—বিচার দ্রুত ও নিরপেক্ষ হোক, কিন্তু নির্দোষরা যাতে অপমান বা সন্দেহের শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা হোক।

জনপ্রিয় সংবাদ

তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি

কাশ্মীরি মানেই সন্ত্রাসী নন- ওমর আব্দুল্লাহ

০৮:৪৮:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

দিল্লির সাম্প্রতিক মারাত্মক বিস্ফোরণের পর পুরো কাশ্মীরি সম্প্রদায়কে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন কাশ্মীরের বিশিষ্ট নেতা আলমগীর উমর আব্দুল্লাহ। তাঁর দাবি, কয়েকজনের অপরাধে গোটা জনগোষ্ঠীকে সন্দেহের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, ফলে সাধারণ কাশ্মীরিদের জীবন এখন হয়ে উঠেছে ভীতিকর ও সংকটপূর্ণ।


প্রেক্ষাপট

রাজধানী দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষের মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশে আলোড়ন তৈরি হয়। বিস্ফোরণের তদন্ত চললেও কাশ্মীরি জনগোষ্ঠী নিয়ে এক ধরনের অস্বস্তি ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।


কাশ্মীরিদের প্রতি সন্দেহের দৃষ্টি নিয়ে ক্ষোভ

উমর আব্দুল্লাহর মতে, পুরো বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন প্রত্যেক কাশ্মীরিই সম্ভাব্য সন্দেহভাজন। তিনি বলেন, আজকের পরিস্থিতিতে বাবা-মায়েরা সন্তানদের বাইরে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। অন্যের অপরাধের দায় কাশ্মীরির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে, আর সেই কারণে সাধারণ মানুষও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে সংকোচ বোধ করছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, দোষী হতে পারে মাত্র কয়েকজন, কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ডের পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে হাজারো নির্দোষ কাশ্মীরিকে।


জে-কে রেজিস্ট্রেশন গাড়ি নিয়ে আতঙ্ক

উমর আব্দুল্লাহ আরও জানান, দিল্লির রাস্তায় জে-কে রেজিস্ট্রেশনের যেকোনো গাড়ি এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে গাড়ি চালালেই নিজেকে অপরাধীর মতো মনে হয়। তিনি নিজেও ভাবছেন—এই মুহূর্তে গাড়ি চালানো কতটা নিরাপদ।


‘প্রত্যেক কাশ্মীরি সন্ত্রাসী নন’

উমর আব্দুল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, কাশ্মীরের প্রত্যেক মুসলিমকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ভাবা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি মনে করেন, এই ধারাবাহিক সন্দেহ কাশ্মীরিদের সামাজিক মর্যাদা, মানসিক স্বাস্থ্যে এবং দৈনন্দিন নিরাপত্তায় গভীর প্রভাব ফেলছে।


সতর্ক বার্তা ও প্রয়োজনীয় আহ্বান

তাঁর মতে, তদন্ত অবশ্যই চলবে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় যেন নির্দোষরা ভয়, সন্দেহ এবং ঘৃণার শিকার না হন—এটাই তাঁর প্রধান দাবি। রাষ্ট্র ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করে এই বিভাজন কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


বিশ্লেষণ

কয়েকজনের অপরাধকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর কাশ্মীরি জনগোষ্ঠীর ওপর সন্দেহের আবহ তৈরি হওয়া—এমন প্রবণতা দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক জনমত ও পরিচয়সংকটের এক গভীর প্রতিফলন। কাশ্মীরি শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও পরিবারগুলো এখন যে চাপের মুখে পড়েছেন, তা শুধু সামাজিক নয়—মানসিক ও নিরাপত্তাগত দিক থেকেও উদ্বেগজনক।

এ পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং একই সঙ্গে নির্দোষ কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।


উমর আব্দুল্লাহর বক্তব্য স্পষ্ট—সমাজের বড় কোনও জনগোষ্ঠীকে কয়েকজনের অপরাধের জন্য দায়ী করা অন্যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, বিভাজন যত বাড়বে, ততই দুর্বল হবে নাগরিক সংহতি। তাঁর আহ্বান—বিচার দ্রুত ও নিরপেক্ষ হোক, কিন্তু নির্দোষরা যাতে অপমান বা সন্দেহের শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা হোক।