০২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
দুবাইয়ের লাইব্রেরিয়ান থেকে বিশ্বব্যাপী গল্প-আন্দোলন: ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল রঘুনাথের উদ্যোগ আইডিএফ–এর ‘হামাস গ্রাম’ প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভেতরে: আরবান গেরিলা যুদ্ধের নতুন রূপরেখা ঘরকে মাকড়সার হাত থেকে রক্ষা করুন—জালমুক্ত রাখার ৮টি সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর উপায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কেন জড়ো হয়েছেন প্রায় দেড়শো মানুষ? পল্লবীতে ককটেল বিস্ফোরণে পুলিশ সদস্য আহত আদানি বিরোধে সিঙ্গাপুর সালিশি স্থগিত: বাংলাদেশ আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন রাস আল খাইমাহর ওল্ড কর্নিশে দুই ১২ বছর বয়সী পাকিস্তানি বন্ধুর করুণ মৃত্যু মে মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক সাফল্য: মার্কিন প্রতিবেদনে নতুন তথ্য আরব সাগরে ১৩০ মিলিয়ন ডলারের মাদক জব্দ ইউরোপীয় ইউনিয়ন কীভাবে চীন থেকে আসা স্বল্পমূল্যের ই-কমার্স পণ্য নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়

পশ্চিম ইউক্রেনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ২৬ জন নিহত

তেরনোপিলে অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে ভয়াবহ ধ্বংস—নিখোঁজ বহু মানুষ, জেলেনস্কির আহ্বান আরও কঠোর আন্তর্জাতিক চাপের


তিন শিশুসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। প্রায় ১০০ জন আহত এবং ডজনখানেক মানুষ এখনো নিখোঁজ। জ্বালানি স্থাপনা ও আবাসিক ভবনে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাশিয়া ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পোল্যান্ড জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ এখনো যথেষ্ট নয়।


আক্রমণের ভয়াবহ রাত

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেরনোপিলে রাতভর রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহর ক্লাইমেনকো জানিয়েছেন, তিন শিশুসহ আরও ২৬ জন এখনো নিখোঁজ এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন।

হামলার লক্ষ্য ছিল আবাসিক ভবন। তেরনোপিলের একটি বহুতল ভবনের উপরের অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ায় কয়েকটি অংশ ভস্মীভূত হয়। আতঙ্কে কিছু বাসিন্দা জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন।

ক্লাইমেনকো বলেন, উদ্ধারকারীরা সারারাত ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ জীবিত আছে কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


হতাহতদের করুণ অভিজ্ঞতা

নিহতদের মধ্যে তিন শিশুর কথা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। অকসানা কোবেল নামের এক মা তার নবম তলার অ্যাপার্টমেন্টে থাকা ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। হামলার পরে ফোন করলে ছেলের শেষ কথা ছিল—“মা, আমি জেগে আছি, সব ঠিক হয়ে যাবে।” এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।


রাশিয়ার ব্যাপক হামলা ও অবকাঠামো ক্ষতি

ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া ওই রাতে ৪৭৬টি ড্রোন ও ৪৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এতে জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামোর বড় ক্ষতি হয়। তীব্র শীতে কয়েকটি অঞ্চলে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

লভিভ ও খারকিভসহ একাধিক শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রাজধানী কিয়েভে বহু মানুষ মেট্রো স্টেশনে আশ্রয় নেন।


পোল্যান্ডের সতর্কতা

ঘটনার পর ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ড সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে যায়। রেজেশও ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে আকাশসীমা রক্ষায় যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা হয়।


জেলেনস্কির বার্তা: আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে

হামলার সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তুরস্কে শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টায় ছিলেন। তিনি মিত্রদের প্রতি আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার আহ্বান জানান এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করার দাবি করেন।

জেলেনস্কি বলেন, “প্রতিটি বর্বর হামলা দেখিয়ে দেয়—রাশিয়ার ওপর চাপ এখনো যথেষ্ট নয়। কার্যকর নিষেধাজ্ঞা ও সহায়তাই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই হামলার বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।


যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামো নিয়ে আলোচনা

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধ-পরবর্তী একটি খসড়া কাঠামো মেনে নিতে বলেছে, যেখানে ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ছাড় দিতে হতে পারে, অস্ত্র কমাতে হতে পারে এবং সেনাবাহিনী ছোট করতে হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে কিয়েভে আলোচনা চলছে।


রাশিয়ার দাবি ও পাল্টা বক্তব্য

রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের কথিত “সন্ত্রাসী হামলা”র জবাবে এ বিমান হামলা চালিয়েছে। রুশ পক্ষের অভিযোগ—ইউক্রেন মার্কিন তৈরি ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভোরোনেঝ শহরে আঘাত হেনেছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা কেবল রাশিয়ার সামরিক স্থাপনাতেই হামলা চালিয়েছে।


#ইউক্রেন রাশিয়া #তেরনোপিলহামলা যুদ্ধ #জেলেনস্কি #ড্রোনহামলা #ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ড #বিদ্যুৎসংকট

জনপ্রিয় সংবাদ

দুবাইয়ের লাইব্রেরিয়ান থেকে বিশ্বব্যাপী গল্প-আন্দোলন: ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল রঘুনাথের উদ্যোগ

পশ্চিম ইউক্রেনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ২৬ জন নিহত

১২:৩৬:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

তেরনোপিলে অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে ভয়াবহ ধ্বংস—নিখোঁজ বহু মানুষ, জেলেনস্কির আহ্বান আরও কঠোর আন্তর্জাতিক চাপের


তিন শিশুসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। প্রায় ১০০ জন আহত এবং ডজনখানেক মানুষ এখনো নিখোঁজ। জ্বালানি স্থাপনা ও আবাসিক ভবনে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাশিয়া ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পোল্যান্ড জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ এখনো যথেষ্ট নয়।


আক্রমণের ভয়াবহ রাত

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেরনোপিলে রাতভর রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহর ক্লাইমেনকো জানিয়েছেন, তিন শিশুসহ আরও ২৬ জন এখনো নিখোঁজ এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন।

হামলার লক্ষ্য ছিল আবাসিক ভবন। তেরনোপিলের একটি বহুতল ভবনের উপরের অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ায় কয়েকটি অংশ ভস্মীভূত হয়। আতঙ্কে কিছু বাসিন্দা জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন।

ক্লাইমেনকো বলেন, উদ্ধারকারীরা সারারাত ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ জীবিত আছে কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


হতাহতদের করুণ অভিজ্ঞতা

নিহতদের মধ্যে তিন শিশুর কথা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। অকসানা কোবেল নামের এক মা তার নবম তলার অ্যাপার্টমেন্টে থাকা ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। হামলার পরে ফোন করলে ছেলের শেষ কথা ছিল—“মা, আমি জেগে আছি, সব ঠিক হয়ে যাবে।” এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।


রাশিয়ার ব্যাপক হামলা ও অবকাঠামো ক্ষতি

ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া ওই রাতে ৪৭৬টি ড্রোন ও ৪৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এতে জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামোর বড় ক্ষতি হয়। তীব্র শীতে কয়েকটি অঞ্চলে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

লভিভ ও খারকিভসহ একাধিক শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রাজধানী কিয়েভে বহু মানুষ মেট্রো স্টেশনে আশ্রয় নেন।


পোল্যান্ডের সতর্কতা

ঘটনার পর ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ড সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে যায়। রেজেশও ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে আকাশসীমা রক্ষায় যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা হয়।


জেলেনস্কির বার্তা: আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে

হামলার সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তুরস্কে শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টায় ছিলেন। তিনি মিত্রদের প্রতি আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার আহ্বান জানান এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করার দাবি করেন।

জেলেনস্কি বলেন, “প্রতিটি বর্বর হামলা দেখিয়ে দেয়—রাশিয়ার ওপর চাপ এখনো যথেষ্ট নয়। কার্যকর নিষেধাজ্ঞা ও সহায়তাই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই হামলার বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।


যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামো নিয়ে আলোচনা

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধ-পরবর্তী একটি খসড়া কাঠামো মেনে নিতে বলেছে, যেখানে ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ছাড় দিতে হতে পারে, অস্ত্র কমাতে হতে পারে এবং সেনাবাহিনী ছোট করতে হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে কিয়েভে আলোচনা চলছে।


রাশিয়ার দাবি ও পাল্টা বক্তব্য

রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের কথিত “সন্ত্রাসী হামলা”র জবাবে এ বিমান হামলা চালিয়েছে। রুশ পক্ষের অভিযোগ—ইউক্রেন মার্কিন তৈরি ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভোরোনেঝ শহরে আঘাত হেনেছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা কেবল রাশিয়ার সামরিক স্থাপনাতেই হামলা চালিয়েছে।


#ইউক্রেন রাশিয়া #তেরনোপিলহামলা যুদ্ধ #জেলেনস্কি #ড্রোনহামলা #ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ড #বিদ্যুৎসংকট