উত্তরাখণ্ডের সৃষ্টি: ইতিহাস ও প্রয়োজনীয়তা
1996 সালে উত্তরাখণ্ড রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। এই সময়ে রাজ্যটি তার স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক পরিচয় ও ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি পেতে সক্ষম হলেও, এখনও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য অনেক পথ বাকি রয়েছে।
দীর্ঘদিনের দাবী ও আন্দোলন
উত্তরাখণ্ড রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি প্রথম দিকে ১৮১৫ সালে উঠেছিল, যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কুমাওনের উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৯৩৮ সালে জওহরলাল নেহরু এর সমর্থনে এটি রাজনৈতিকভাবে আলোচিত হয়, এবং স্বাধীনতার পরেও স্থানীয় নেতারা পাহাড়ি অঞ্চলকে সমতল অঞ্চল থেকে আলাদা করার জন্য দাবি তুলেছিলেন। তবে তখন এটি গুরুত্ব পায়নি। পরবর্তীতে, ১৯৭৯ সালে প্রথম রাজনৈতিক দল ‘উত্তরাখণ্ড ক্রান্তি দল’ গঠিত হয়, যা রাজ্যটির জন্য আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
১৯৯৪ সালে, গারওয়ালি ও কুমাওনি জনগণের মধ্যে পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে একসাথে উত্তরাখণ্ডি পরিচয়ে একত্রিত হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আসে। এরপর ১৯৯৬ সালে, রাষ্ট্রপতি এই রাজ্যটির জন্য একটি পৃথক বিল প্রস্তাব করেন, যা ১৯৯৮ সালে পাস হয়।

দাবীগুলোর পেছনে কারণ
রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ও সম্পদ বণ্টন ছিল প্রধান দুটি কারণ। উত্তরাখণ্ডের জন্য রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ছিল একটি বড় সমস্যা। প্রতিবেশী হিমাচল প্রদেশের তুলনায় উত্তরাখণ্ডে মাত্র ২২টি আসন ছিল, যদিও জনসংখ্যা প্রায় সমান ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে, জনগণ রাজ্যটির জন্য আলাদা আসনের দাবি জানান। এছাড়া, রাজ্যের সম্পদ বিভিন্নভাবে শোষিত হচ্ছিল এবং এর প্রাপ্যতার তুলনায় খুব কম উন্নয়ন হয়েছিল।
উত্তরাখণ্ড বনাম উত্তর প্রদেশ
উত্তরাখণ্ড উন্নয়নের দিক দিয়ে উত্তর প্রদেশের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য জরিপ ৫ এর মতে, উত্তর প্রদেশের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে জন্মের সময় লিঙ্গ অনুপাত ৯৪৩, যেখানে উত্তরাখণ্ডে এটি ৯৩৭। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও উত্তরাখণ্ড কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের সমস্যা
তবে রাজ্যটির জন্য কিছু বড় সমস্যা রয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে এখনও অনেক উন্নতির প্রয়োজন। সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শহরাঞ্চলের চারটি জেলায় ৫০% চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে, এবং পাহাড়ি এলাকার জেলাগুলিতে এটি ৭০% পর্যন্ত পৌঁছেছে। এছাড়া, দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে রাজ্যটি বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উত্তরাখণ্ডের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, তবে উন্নতির জন্য আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। ভবিষ্যতে রাজ্যটি আরো উন্নত এবং সমৃদ্ধ হবে এমন আশা করা হচ্ছে, তবে প্রয়োজন আরও কার্যকরী নীতি এবং রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট।
#উত্তরাখণ্ড #রাজনৈতিকপ্রতিনিধিত্ব #গারওয়ালি #কুমাওনি #জাতীয়পরিবারস্বাস্থ্যজরিপ #দুর্যোগ #শিক্ষা #স্বাস্থ্য #ইতিহাস #সমস্যা #অর্জন #চ্যালেঞ্জ #উন্নয়ন #রাজ্য #রাষ্ট্র
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















