০৩:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
খুলনার লবণচরা এলাকায় যুবককে গুলি, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর ওপর মুখোশধারীদের হামলা, ঢাকা–রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ ‘রেড জোন’ সিলেট: বড় ভূমিকম্পে ধসে পড়তে পারে হাজারো ভবন, নতুন করে সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা টঙ্গীতে জুটের বস্তার ৫ গুদামে আগুন, মসজিদের এসি পুড়ে গেছে বরিশাল ভূমিকম্পের পর হঠাৎ ভাঙনে বানারীপাড়ায় বসতবাড়ি ও জমি সন্ধ্যা নদীগর্ভে কুতুবদিয়া উপকূল থেকে ২৮ জেলেসহ ফিশিং ট্রলার ধরে নেওয়ার অভিযোগ, পরিবারগুলোর কান্না থামছে না ভূমিকম্পে সাবেক মেয়র মনজুরের ৭ তলা ভবন হেলে পড়ায় এলাকা ঘিরে কড়া পুলিশি প্রহরা কেরানিগঞ্জ জিনজিরায় ৭ তলা ভবন হেলে পড়ায় আতঙ্ক, বাসিন্দাদের রাত কাটছে রাস্তায় সাভারে আবার কম্পন, কারখানা–মহল্লা জুড়ে টানা উদ্বেগ বিজেপির অভিযোগ—অবৈধ ভোটার রক্ষা করতে এসআইআর বাধা দিচ্ছে তৃণমূল

বিশ্বমুখী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার পথে: হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিদেশি প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য

হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিদেশি প্রেসিডেন্ট ডায়ানা খোর নিজে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে বেড়ে উঠেছেন। তাই তিনি চান, জাপানের শিক্ষার্থীরা দেশীয় সীমার ভেতর না আটকে থেকে বিশ্বমুখী মানসিকতা গড়ে তুলুক। ১৪৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম বিদেশি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি ভাবলেন—এই নজর কাড়ার সুযোগকে কীভাবে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা যায়।

তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিকীকরণ ও বৈচিত্র্য (DEI) বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে। এখন বৃহত্তর পরিসরে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের কথা বলছেন তিনি। তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ টিকে আছে বিশ্বকে সামনে রেখে এগোনোর মধ্যেই।

 গ্লোবালাইজেশন ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধিই প্রধান লক্ষ্য
খোর বলেন, তার কাজের দুই প্রধান ক্ষেত্র হলো—বিশ্বায়ন ও DEI উন্নয়ন।
হোসেই বিশ্ববিদ্যালয় টোকিওর ছয়টি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি—টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াসেদা, মেইজি, কেইও এবং রিক্কিয়োর পাশাপাশি। জাপানের জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় ভালো শিক্ষার্থী আকর্ষণের প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে খোর মনে করেন, শিক্ষার্থীদের এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তারা বিশ্বকে বুঝতে পারে, যদিও তারা জাপান ছাড়বে না।

লিবারেল ও উদারচিন্তার বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে হোসেই
হিতোৎসুবাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিরোশি ওটা জানান, হোসেইকে সাধারণত উদারমানসিকতার বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়—বিশেষ করে সমাজবিজ্ঞান ও সমাজতত্ত্ব বিভাগে তাদের শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতিহাসসমৃদ্ধ হলেও উদার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত।
বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৫টি অনুষদ রয়েছে—আইন, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সামাজিক বিজ্ঞানের বিস্তৃত ক্ষেত্রজুড়ে। বিদেশি অতিথি অধ্যাপক নেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ সক্রিয়—প্রতি বছর ২০–৩০ জন গবেষক ও অধ্যাপক আসে।

জনসংখ্যা কমে যাওয়া—বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বড় চ্যালেঞ্জ
জাপানে উচ্চবিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৬৪৯টি, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১০টিতে।
১৯৯২ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ১৮ বছর বয়সী জনসংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে—এখন মাত্র ১০ লাখ।
এই সংকটের ফলে, শিক্ষার্থী সংগ্রহ করতে জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশমুখী হচ্ছে।

তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সামনে ভাষার বাধা বড় চ্যালেঞ্জ। জাপান তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় বিদেশিরা আসে ঠিকই, কিন্তু জাপানি ভাষায় পড়াশোনা করতে অনেকে আগ্রহী নয়। এর ফলে তাদের ভবিষ্যৎ চাকরির সুযোগও সীমিত হয়।
ওটা মনে করেন, আদর্শ সমাধান হলো—জাপানি ভাষা শেখার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে ইংরেজিতে শিক্ষা দেওয়া।
হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ইংরেজি ক্লাস থাকলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৫%—৩০,০০০ জনের মধ্যে প্রায় ১,২০০ জন।

 বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণে খোরের অভিজ্ঞতার ভূমিকা
হোসেইয়ের প্রধান অংশ এখনো জাপানি শিক্ষার্থী হলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বাড়ানো খোরের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। নিজে বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করায় তিনি মনে করেন, এই অভিজ্ঞতা তার কাজে লাগবে।

হংকংয়ে জন্ম নেওয়া খোর প্রথমে চিকিৎসক হওয়ার কথা ভাবলেও সমাজবিজ্ঞানের প্রতি তাঁর ঝোঁক তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে তিনি সমাজতত্ত্বে পিএইচডি অর্জন করেন। তার গবেষণার মূল ক্ষেত্র ছিল লিঙ্গ ও সাম্যতা—বিশেষ করে এশিয়ার প্রেক্ষাপটে, কারণ তখনকার গবেষণা পশ্চিমা ধারণায় সীমাবদ্ধ ছিল।

ভৌগোলিক কারণে তিনি জাপানে আসেন এবং ১৯৯৯ সালে হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শুরুতে ইংরেজি শেখাতেন, পরে ধীরে ধীরে নেতৃত্বস্থানে পৌঁছান। ২০২১ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।

 নেতৃত্বগুণে সহকর্মীদের প্রশংসা
তার সহকর্মীরা তাকে শান্ত, নির্ভুল ও দক্ষ প্রশাসক হিসেবে বর্ণনা করেন।
গ্লোবাল ও ইন্টারডিসিপ্লিনারি স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ইউ নিয়িয়া জানান, ১৭ বছর আগে প্রথম সাক্ষাৎ থেকেই তিনি খোরের বিশ্লেষণী ক্ষমতা লক্ষ্য করেছিলেন।
ইন্টারভিউতে খোর তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—‘আপনি জাপানে ফিরে আসতে চান কেন?’—যা নিয়িয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল।

 DEI কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার সিদ্ধান্ত
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে খোর বিশ্ববিদ্যালয়ের DEI কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তবে তখন তার সীমাবদ্ধতাও ছিল—উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব হচ্ছিল না।
এই উপলব্ধিই প্রেসিডেন্ট হওয়ার সিদ্ধান্তে ভূমিকা রেখেছে।

হোসেইয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হাজুকি কানেকো, যিনি এখন খণ্ডকালীন শিক্ষক, বলেন—DEI কেন্দ্রের কারণে শিক্ষার্থীরা এখন নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ পাচ্ছে।
তার মতে, “আমি চাইতাম আমার সময়েও এমন একটি কেন্দ্র থাকুক।”

 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা—পরিবর্তনের সম্ভাবনা
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ২০৩০ সালে শেষ হবে। নতুন পরিকল্পনা তৈরি করার দায়িত্ব এখন খোরের।
তিনি বলেন, “জাপানের সব প্রতিষ্ঠানের মতো এখানেও রক্ষণশীল অংশ আছে। কিন্তু পরিবর্তনের সম্ভাবনাও আমি স্পষ্টভাবে দেখি।”

#শিক্ষা সংস্কার  #জাপান  #হোসেই_বিশ্ববিদ্যালয়  #ডায়ানা_খোর  #আন্তর্জাতিকীকরণ  #বৈচিত্র্য_ও_অন্তর্ভুক্তি

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনার লবণচরা এলাকায় যুবককে গুলি, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে

বিশ্বমুখী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার পথে: হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিদেশি প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য

০১:৫৭:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিদেশি প্রেসিডেন্ট ডায়ানা খোর নিজে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে বেড়ে উঠেছেন। তাই তিনি চান, জাপানের শিক্ষার্থীরা দেশীয় সীমার ভেতর না আটকে থেকে বিশ্বমুখী মানসিকতা গড়ে তুলুক। ১৪৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম বিদেশি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি ভাবলেন—এই নজর কাড়ার সুযোগকে কীভাবে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা যায়।

তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিকীকরণ ও বৈচিত্র্য (DEI) বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে। এখন বৃহত্তর পরিসরে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের কথা বলছেন তিনি। তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ টিকে আছে বিশ্বকে সামনে রেখে এগোনোর মধ্যেই।

 গ্লোবালাইজেশন ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধিই প্রধান লক্ষ্য
খোর বলেন, তার কাজের দুই প্রধান ক্ষেত্র হলো—বিশ্বায়ন ও DEI উন্নয়ন।
হোসেই বিশ্ববিদ্যালয় টোকিওর ছয়টি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি—টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াসেদা, মেইজি, কেইও এবং রিক্কিয়োর পাশাপাশি। জাপানের জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় ভালো শিক্ষার্থী আকর্ষণের প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে খোর মনে করেন, শিক্ষার্থীদের এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তারা বিশ্বকে বুঝতে পারে, যদিও তারা জাপান ছাড়বে না।

লিবারেল ও উদারচিন্তার বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে হোসেই
হিতোৎসুবাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিরোশি ওটা জানান, হোসেইকে সাধারণত উদারমানসিকতার বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়—বিশেষ করে সমাজবিজ্ঞান ও সমাজতত্ত্ব বিভাগে তাদের শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতিহাসসমৃদ্ধ হলেও উদার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত।
বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৫টি অনুষদ রয়েছে—আইন, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সামাজিক বিজ্ঞানের বিস্তৃত ক্ষেত্রজুড়ে। বিদেশি অতিথি অধ্যাপক নেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ সক্রিয়—প্রতি বছর ২০–৩০ জন গবেষক ও অধ্যাপক আসে।

জনসংখ্যা কমে যাওয়া—বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বড় চ্যালেঞ্জ
জাপানে উচ্চবিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৬৪৯টি, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১০টিতে।
১৯৯২ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ১৮ বছর বয়সী জনসংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে—এখন মাত্র ১০ লাখ।
এই সংকটের ফলে, শিক্ষার্থী সংগ্রহ করতে জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশমুখী হচ্ছে।

তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সামনে ভাষার বাধা বড় চ্যালেঞ্জ। জাপান তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় বিদেশিরা আসে ঠিকই, কিন্তু জাপানি ভাষায় পড়াশোনা করতে অনেকে আগ্রহী নয়। এর ফলে তাদের ভবিষ্যৎ চাকরির সুযোগও সীমিত হয়।
ওটা মনে করেন, আদর্শ সমাধান হলো—জাপানি ভাষা শেখার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে ইংরেজিতে শিক্ষা দেওয়া।
হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ইংরেজি ক্লাস থাকলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৫%—৩০,০০০ জনের মধ্যে প্রায় ১,২০০ জন।

 বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণে খোরের অভিজ্ঞতার ভূমিকা
হোসেইয়ের প্রধান অংশ এখনো জাপানি শিক্ষার্থী হলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বাড়ানো খোরের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। নিজে বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করায় তিনি মনে করেন, এই অভিজ্ঞতা তার কাজে লাগবে।

হংকংয়ে জন্ম নেওয়া খোর প্রথমে চিকিৎসক হওয়ার কথা ভাবলেও সমাজবিজ্ঞানের প্রতি তাঁর ঝোঁক তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে তিনি সমাজতত্ত্বে পিএইচডি অর্জন করেন। তার গবেষণার মূল ক্ষেত্র ছিল লিঙ্গ ও সাম্যতা—বিশেষ করে এশিয়ার প্রেক্ষাপটে, কারণ তখনকার গবেষণা পশ্চিমা ধারণায় সীমাবদ্ধ ছিল।

ভৌগোলিক কারণে তিনি জাপানে আসেন এবং ১৯৯৯ সালে হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শুরুতে ইংরেজি শেখাতেন, পরে ধীরে ধীরে নেতৃত্বস্থানে পৌঁছান। ২০২১ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।

 নেতৃত্বগুণে সহকর্মীদের প্রশংসা
তার সহকর্মীরা তাকে শান্ত, নির্ভুল ও দক্ষ প্রশাসক হিসেবে বর্ণনা করেন।
গ্লোবাল ও ইন্টারডিসিপ্লিনারি স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ইউ নিয়িয়া জানান, ১৭ বছর আগে প্রথম সাক্ষাৎ থেকেই তিনি খোরের বিশ্লেষণী ক্ষমতা লক্ষ্য করেছিলেন।
ইন্টারভিউতে খোর তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—‘আপনি জাপানে ফিরে আসতে চান কেন?’—যা নিয়িয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল।

 DEI কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার সিদ্ধান্ত
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে খোর বিশ্ববিদ্যালয়ের DEI কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তবে তখন তার সীমাবদ্ধতাও ছিল—উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব হচ্ছিল না।
এই উপলব্ধিই প্রেসিডেন্ট হওয়ার সিদ্ধান্তে ভূমিকা রেখেছে।

হোসেইয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হাজুকি কানেকো, যিনি এখন খণ্ডকালীন শিক্ষক, বলেন—DEI কেন্দ্রের কারণে শিক্ষার্থীরা এখন নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ পাচ্ছে।
তার মতে, “আমি চাইতাম আমার সময়েও এমন একটি কেন্দ্র থাকুক।”

 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা—পরিবর্তনের সম্ভাবনা
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ২০৩০ সালে শেষ হবে। নতুন পরিকল্পনা তৈরি করার দায়িত্ব এখন খোরের।
তিনি বলেন, “জাপানের সব প্রতিষ্ঠানের মতো এখানেও রক্ষণশীল অংশ আছে। কিন্তু পরিবর্তনের সম্ভাবনাও আমি স্পষ্টভাবে দেখি।”

#শিক্ষা সংস্কার  #জাপান  #হোসেই_বিশ্ববিদ্যালয়  #ডায়ানা_খোর  #আন্তর্জাতিকীকরণ  #বৈচিত্র্য_ও_অন্তর্ভুক্তি